রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৩

শীলা

শীলার মামা একটু পাগল কিসিমের মানুষ। দুনিয়াতে অনেক কিসিমের পাগল আছে। শীলার মামা সিকদার অনি কোন শ্রেণীতে পরে কে জানে? কয়েকটা উদাহরণ দিলে, পাঠক পাঠিকারা হয়তো একটা শ্রেণীতে ফেলে দিতে পারবেন। শীলার মামা, সিকদার অনি যে কোন চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে, সম্ভ্রান্ত বিয়ের অনুষ্ঠানেও, অপরিচিতজনদের কাছেও বলতে থাকে, চমৎকার পরীর মতো একটি মেয়ে আমাকে ভালো বাসতো। কিন্তু, আমি বিয়ে করিনি! সে আরো বলে, বি, সি, এস, প্রশাসন ক্যাডারেও আমার চাকুরী হয়েছিলো, কিন্তু, আমি করিনি!

বাংলাদেশে এই ধরনের কথাবার্তাকে সবাই গপ্ বলে। শীলার মামার এমন সব কথা বার্তাকে সবাই গপ্ বলে মনে করে, হেসেই উড়িয়ে দেয়। আসলে, সিকদার অনির কথার, একটিও গপ্ নয়। তার জীবনে চমৎকার ফুটফুটে একটি পরীর মতো মেয়ে এসেছিলো, যে তাকে ভালোবাসতো মন প্রাণ দিয়ে। অথচ, সে তাকে বিয়ে করেনি। তার জীবনে, বি, সি, এস, প্রশাসন ক্যাডারের মতো লোভনীয় একটা চাকুরী করারও সুযোগ এসেছিলো, অথচ সে যোগদান করেনি। এসবের কারন হলো, তার আত্ম বিশ্বাসের অভাব।
শীলার মামা সিকদার অনির মেধা ভালো, অথচ কোন আত্মবিশ্বাস নেই। সব কিছুই নিজের মতো করেই ভাবে। অথচ, কেউ যদি প্রশ্ন তুলে, এটা তো এমন হবার কথা নয়। অথবা, এমনটি উচিৎ না। তখনই সিকদার অনি খুব ঘাবড়ে যায়। নিজের ভুল মনে করেই পিছু হটতে থাকে।
তার জীবনে, প্রেমটাও তেমন করেই সমাপ্তি ঘটেছিলো। সেই ফুটফুটে পরীর মতো মেয়েটার সাধারন একটি কথায়, আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, পাগলের মতো একা একা সময় কাটিয়েছিলো। কখনো সেই মেয়েটির মুখোমুখি হবারও ইচ্ছে প্রকাশ করেনি।
বি, সি, এস, চাকুরীটাও তেমনি করেই হাত ছাড়া করতে হয়েছিলো। লিখিত, মৌখিক ম্যাডিক্যাল চেক আপ, সব ঠিক ঠাক। সর্বশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল সৌজন্য সাক্ষাৎকারই ছিলো। সাধারন আলাপের মাঝেই, সাধারন একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে, সিকদার অনি সাক্ষাৎকার কক্ষটি থেকেই বিদায় নিলো, কোন রকম যুক্তি পরামর্শ না করেই।
এইসব আর কেউ না জানলেও, সব যে সত্যি তা নিশ্চিত জানে শীলা আর শীলাদের পরিবার এর সদস্যরা। আর শীলার মা কেয়া সিকদার অনির আপন কোন বোন নয়। একদা বাড়ীর কাজের মেয়ে বলেই পরিচিতা, সেই কেয়াকে আপন বোনের চাইতেও যথেষ্ট আপনই মনে করে। কারন, এই পৃথিবীতে সিকদার অনির আপন জন বলতে শুধু, সেই কেয়া আপাই।
সিকদার অনি এম, এস, সি, পাশ করে, ঢাকাতেই একটা এক কক্ষের বাসায় থেকে চাকুরীর তদবীরটা শুরু করে, টিউশনি করে জীবিকা নির্বাহ দিয়ে। শেষ পর্য্যন্ত একটা বিদেশী কোম্পানীতে জুনিয়র প্রকোশলী হিসেবেই চাকুরী যোগার করেছে। সেই খুশীর সংবাদটাই দিতে এসেছিলো সেবার, সুদুর ঢাকা থেকে চিটাগং এ শীলাদের বাসায়।
সিকদার অনির বোকামী আর পাগলামীর জন্যে, সে তার দুলাভাই তো দূরের কথা, তার প্রাণ প্রিয় কেয়া আপার কাছেও ইদানীং কোন মর্যাদা পায়না। তবে, সে একটা বিশেষ মর্যাদা পায়, তার সুশ্রী, সুভাষীনী একমাত্র ভাগ্নী শীলার কাছে। সে যখন ঢাকা থেকে ক্লান্ত হয়ে চিটাগং এ বোনের বাড়ীতে বেড়াতে এসে, তাদের বসার ঘরে বসে আছে সময়ের পর সময়, তখন কেউ তাকে চেহারাটা দেখাতেও এলো না। সে তখন বসার ঘরে একাকী বসে থেকে, দেয়ালে টানানো একটা তৈল চিত্রের দিকেই গভীর মনোযোগ দিয়ে তাঁকিয়ে, পর্য্যবেক্ষণ করছিলো। ঠিক তখনই ট্রে ভর্তি চা নাস্তা নিয়ে ঢুকেছিলো শীলা।
আর কটা দিন পরই শীলার এইচ, এস, সি পরীক্ষা। সময় কত তাড়াতাড়িই বুঝিই পার হয়ে যায়। দেখতে দেখতে মেয়েটা যে এত বড় হয়ে যাবে, ভাবতেও পারেনি সিকদার অনি। দীর্ঘদিন পর দেখা শীলার দিকে এক নজর তাঁকিয়েই অবাক না হয়ে পারলো না।
খানিকটা মোটিয়ে গেছে শীলা। লম্বায় খুব একটা বাড়েনি, তবে বেটে বলা যাবে না। মোটিয়ে যাবার কারনেই শুধু খানিকটা বেটে লাগে। বক্ষ দুটিও তেমনি সুউন্নত হয়ে উঠে, নজরই কাঁড়ে। ঘরোয়া পোষাকে আরো বেশী চোখে পরে শীলার দেহের ভাঁজগুলো।
সাধারন ঘিয়ে রং এর পাতলা কামিজ পরনে। কামিজের তলায় কালো ব্রা এর ছাপ স্পষ্টই চোখে পরে। আর সেই কালো ব্রা এর নীচেই বক্ষ দুটি যেনো বেপরোয়া হয়েই বেড়ে উঠেছে।
গোলগাল চেহারা শীলার! ঠোট গুলো সরুও নয়, মোটাও নয়, মাঝামাঝি, তবে চৌকু। নাকটা যেমনি সরু, চোখ দুটিও টানাটানা। যুগের সাথে মিলিয়ে, বিউটি পার্লারে মেক আপ করা ঢেউ খেলানো চুলগুলো তাকে আরো সুন্দরীই করে তুলেছে।
শীলা সোফার পাশে ছোট্ট টিপয়টার উপরই ট্রেটা নামিয়ে রেখে ওপাশের টুলটার উপর গিয়েই বসলো, পা দুটি খানিকটা ছড়িয়ে। সিকদার অনি শীলার দিকে না তাঁকানোর ভান করেই, বিজ্ঞের মতোই মাথা দুলিয়ে বললো, ডিয়ার শীলা মামণি! তোমাদের স্বল্প আয়ের সংসার! অথচ, অমন একটা দামী পেইন্ট ঐ দেয়ালে ঝুলছে! এসব তো কোন আর্ট মিউজিয়ামে থাকার কথা! এতো দামী জিনিষ তোমাদের বাসায় এলো কি করে? তোমার বাবা, মানে আমার গুনধর দুলাভাই আবার চুরি টুরি করা শুরু করে নি তো?
শীলা চোখ কপালে তুলেই বললো, কি বলছো মামা?
শীলার কথা শেষ হবার আগেই সিকদার অনি বলতে থাকলো, ঐ টা যে একটা খুবই নামকড়া আর্টিষ্ট এর অরিজিনাল আর্ট, তা আমি চোখ বন্ধ রেখেও বলতে পারি। এসব এর দাম, তোমারও জানা থাকার কথা না! কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা! এই বাড়ীতে এসব দামী জিনিষ কারো চোখে পরলে, যে কোন সময় পুনরায় চোর ডাকাতের হামলা থাকতে পারে।
সিকদার অনি একটু থেমেই বললো, তোমার বাবা তো আর আমাকে মুখটাও দেখাবে না! আমার পক্ষ থেকে তুমিই বলে দিও।
শীলা তার মামার কথায় না হেসে পারলো না। সে টুলটার উপর থেকে দাঁড়িয়ে, সামনে রাখা চেয়ারটার উপর ডান পা টা তুলে, ক্ষমতাপূর্ণ একটা ভাব দেখিয়ে, মজা করার জন্যেই বললো, আচ্ছা মামা, তোমার যদি আর্ট এর ব্যাপারে এতই জ্ঞান শক্তি থাকে, তাহলে বলো তো, এটা কার আর্ট?
সিকদার অনি রাগ করার ভান করেই বললো, কি ভাবো আমাকে, তুমি? তুমি কি ভেবেছো, নামকরা আর্টিষ্টদের আমি চিনিনা?
শীলা, গালে আঙুলী ঠেকিয়েই বললো, না, তা বলছিনা! তবে, এতই যখন জানো, তাহলে বলেই ফেলো না, কার আর্ট?
সিকদার অনি বললো, রিয়্যাল টাইমে বলবো, নাকি ব্যাক টু দ্যা ফিউচারে বলবো?
শীলা চোখ গোল গোল করেই বললো, ওটা আবার কি?
সিকদার অনি বললো, হ্যা, হ্যা, কিছু ব্যাপার বর্তমানে বুঝাও যায়না, জানাও যায়না! ভবিষ্যতে ঘটে। সেগুলো ভবিষ্যতে ফিরে গিয়েই জেনে আসতে হয়! আমি সেসব জানার চেষ্টা করি বলেই বলছি!
শীলা বললো, যথেষ্ট হয়েছে! আর ভণিতা নয়, নামটা তাড়াতাড়ি বলে ফেলো! আমার খুবই জানতে ইচ্ছে করছে!
সিকদার অনি আমতা আমতা করেই বলতে থাকলো, যতদূর জানি এটা একজন বিখ্যাত মহিলা আর্টিষ্ট এর আঁকা। তবে, এখনো বিখ্যাত হয়নি, ভবিষ্যতে হবে!
একটা অপদার্থ মামার সাথে কথা বলতে গিয়ে, শীলার চেহারাটা হঠাৎ অন্য রকমই হয়ে গেলো। সে অবাক হয়েই বললো, বিখ্যাত? এখনো হয়নি? ভবিষ্যতে হবে? কে সে?
সিকদার অনি খুব গর্ব করেই বুক ফুলিয়ে বলতো থাকলো, সে হলো আমার একমাত্র ভাগ্নী, নাদিয়া ইয়াসমীন, ওরফে শীলা!
সিকদার অনির কথায় হঠাৎই বোকা বনে গেলো শীলা। সে সরাসরিই বললো, মামা, তুমি তো আমাকে ঘাবড়েই দিয়েছিলে? কিন্তু বুঝলে কি করে, ওটা আমার আঁকা?
সিকদার অনি ছোট গলাতেই বললো, বুঝলাম কি করে, শুনবে?
শীলা খুব আগ্রহ করেই বললো, হুম, শুনবো!
সিকদার অনি বললো, ঠিক আছে, কানে কানে বলি!
সিকদার অনির সাথে সুর মিলিয়ে, শীলাও ফিশ ফিশ করে বললো, কানে কানে কেনো? ডাকাত টাকাত উৎ পেতে আছে নাকি?
সিকদার অনি হতাশ গলাতেই বললো, কারন আছে মামণি, কারন আছে! জোড়ে বললে, তুমি মনে বড় কষ্ট পাবে!
শীলার মনে, তার এই রহস্যময় মামাটির প্রতি আর কোন আগ্রহই রইলো না। পারলে, সেও যেনো তাড়াতাড়ি এখান থেকে কেটে পরতে পারে, তেমনি ভাব করতে থাকলো। সোফায় সোজা হয়ে বসে, নীরস গলাতেই বললো, ঠিক আছে কান পেতে দিলাম! তুমিই আমার কানের কাছে এসে বলো!
সিকদার অনি ফিস ফিস করেই বললো, তোমার কি ধারনা হয়েছিলো, সত্যিই আমি আর্ট বুঝি? আর্টটার নীচ দিকে, তোমার সাইনটা স্পষ্ট চোখে পরছে তো!
শীলা তখন ভ্যাংচিই কাটলো। বললো, মামা, তুমি আসলেই মানুষকে মাথায় তুলতে পারো! আবার ধপাস করে মাটিতেও ফেলে দিতে পারো।
(সিকদার অনির বাস্তব চরিত্র, যদিও ঘৃণিত! পছন্দ হলে বুকে টেনে নিয়ে, মাথায় তুলে রাখে। একবার ঘৃণার উপদ্রব হলে মাটিতে ফেলে আছার মারতে থাকে, যতক্ষণ পর্য্যন্ত না ধ্বংস না হয়। যার জন্যে ব্যক্তি জীবনেও সিকদার অনি খুব একটা লাভবান নয়, বন্ধু বিহীন)
সিকদার অনি বললো, যাই বলো মামণি, তুমি নির্ঘাত বিখ্যাত হবে!
সিকদার অনি খানিকটা থেমে, আবারও বললো, তোমরা তো কেউ কখনো, আমাকে দামও দিলে না! আমার কথাকেও কখনো পাত্তা দাওনা। আমি বলি কি, এইচ, এস, সি, পাশটা করে, ডানে বামে না তাঁকিয়ে, সোজা আর্ট কলেজে ভর্তি হয়ে যাও। অথবা ইউনিভার্সিটির ফাইন আর্টস জাতীয় কোন বিভাগে!
শীলা হাসলো। বললো, মামা, তুমি হলে এক বিড়ল প্রজাতির মানুষ! তোমার চিন্তা ভাবনার অনুরূপ অন্য কোন মানুষ, অন্ততঃ এই পৃথিবীতে, দুটি নেই। তোমাকে পাত্তা দিইনা, কথাটা ঠিক নয়। আসলে, তুমি নিজেকেই নিজে কোন দাম দাও না। তারপরও তোমার কথাটা আমি একদম ফেলে দেবো না। ভেবে দেখবো। এবার চা টা খেয়ে নাও তো! কখন বানিয়েছি! জুরিয়েই গেলো নাকি!
শীলা তার পাগলা অপদার্থ মামার কথামতোই ফাইন আর্টস এ অনার্সে ভর্তি হয়েছিলো। অনার্স, এম, এ, শেষ করে যখন চাকুরীর চেষ্টাতে গেলো, খুব একটা ভালো সুবিধা করতে পারলো না সে। তার পেছনে কি কারন থাকতে পারে, শীলা নিজেও তা বুঝতে পারলো না। তার মনে হলো, সে যেসব জায়গায় ইন্টারভ্যু দিচ্ছে, তারা আসলে কেউই তার শিল্পকে বুঝতে পারছে না। তা ছাড়া যুগ বদলে গেছে। সবকিছুই কম্পিউটারাইজড হয়ে গেছে। কম্পিউটার গ্রাফিকস দিয়ে যেখানে চমৎকার নিখুৎ আর্ট করা যায়, সেখানে নিজ হাতে আঁকা হ্যাণ্ড আর্টিষ্ট এর আর দাম কোথায়? শীলা ভাবলো অন্য কথা! সে তার নিজ চিন্তা ভাবনা দিয়ে, নিজের ভেতরের লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতীভাগুলোকে রূপান্তরিত করতে চাইলো অন্যদিকে। সে কাপরের দোকান থেকে, নানান রকমের কাপর কিনে, বাড়ীতে বসে, সেগুলো মনের মতো করে ডিজাইন কেটে, ফ্যাশন তৈরী করে, নমুনা নিয়ে যেতে শুরু করলো, ফ্যাশন শপ গুলোতে। তাতেও কোন লাভ হলো না। অত্যাধুনিক গার্মেন্টস গুলোতে এমন ডিজাইন আজকাল মেশিনেও করতে পারে। লেখাপড়াটা শেষ করেও, শীলা তার যথাযোগ্য কোন কর্ম সংস্থানে সফল হতে পারলো না।
অনেকটা বাড়ীতে শুয়ে বসেই দিন কাটতে থাকলো শীলার। শীলার জীবন শুয়ে বসে কাটলেও, শীলার মা বাবা তো আর শুয়ে বসে থেকে শান্তি পাবার কথা নয়। মেয়ে বড় হয়েছে, লেখাপড়াও শেষ করেছে। বিয়ে শাদী তো একটা দিতেই হবে। পরিচিতজনদেরই জানিয়ে রেখেছিলো, ভালো একটা পাত্রের সন্ধান জানাতে।
তেমনি সময় অতিবাহিত করার ক্ষণেই ভালো একটা বিয়ের প্রস্তাবই এসেছিলো। পাত্র বিদেশে থাকে, পি, এইচ, ডি, করে। এমন পাত্র আর কতটাই হাতে থাকে! পাত্র বিদেশে থাকে বলেই, পাত্রীর ছবি দেখেই পছন্দ করে ফেললো। এমন কি মাত্র কয়েকদিন এর ছুটি নিয়ে, দেশে এসে সরাসরি বিয়ে করে, বউ সংগে করে নিয়ে যাবে, তেমনি সিদ্বান্তই হয়ে গেলো।
ঘরে বসে আইবুড়ু হয়ে যাওয়া মেয়েটির জন্যে, তড়িঘড়ি করেই বিয়ের আয়োজনটা করেছিলো তার মা বাবা। শীলা অনেক অনুযোগও করেছিলো, আর কটা দিন! কয়েকটা শখেরই তো কাজ শুধু বাকী! অথচ, তার মা বাবা কিছুতেই যেনো কিছু বুঝতে চাইলো না। বিয়ের দিন তারিখ ক্ষণ পর্য্যন্তও ঠিক ঠাক করে ফেললো।
শীলা মোটেও ঘামলো না। সে বিয়ের দিন সকাল হবার আগেই ঘর পালালো। মেয়েরা ঘর পালিয়ে কতদূর যায় কে জানে? শীলা বেশী দূর পালাতে পারলো না। সে পালিয়ে, চিটাগং থেকে ঢাকায় তার মামার বাসায় এসে উঠলো।
তার মামাটি ব্যাচেলর বলে, সে কিংবা তার পরিবার এর কেউ কখনো এই ঢাকাতে এসে দেখতে আসেনি। শীলাকে হঠাৎ নিজ ঘরের দরজার সামনে দেখে সিকদার অনি যেমনি অবাক হলো, ঘরের ভেতর ঢুকে, শীলাও গুছানো একটা ঘর দেখে খুবই অবাক হলো।
নিজ বাসার দরজার সামনে, হঠাৎ শীলাকে দেখে অবাকই হলো সিকদার অনি। সে বললো, বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ হুট করে চলে এলে! ব্যাপার কি বলো তো?
শীলা মিষ্টি করে হাসলো। বললো, কেনো আবার? মাঝে মাঝে মানুষকে চমক লাগাতে হয় না? তোমাকে একটা চমক দিতে ইচ্ছে করলো, তাই!
সিকদার অনি গম্ভীর গলাতেই বললো, না, না, তোমার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে, একটা সমস্যা হয়েছে। কি ব্যাপার, খুলে বলো তো?
শীলা খানিকটা রাগ করেই বললো, ধ্যাৎ মামা! আগে আমাকে ভালো করে ঘরে ঢুকতে দেবে তো! ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই এত প্রশ্ন কেউ করে নাকি?
সিকদার অনি শান্ত গলাতেই বললো, আমি ব্যাচেলর মানুষ! ঘর বলতে তো শুধু এটাই! ওপাশে ছোট্ট কিচেন স্পেস! তবে, রান্না বান্না কখনো হয় না!
শীলা চোখ কপালে তুলেই বললো, বলো কি মামা! বাথরুম নেই? গরমে সিদ্ধ হয়ে গেলাম। ভেবেছিলাম, তোমার এখানে এসে গোসলটাই আগে সারবো!
সিকদার অনি মুচকি হেসেই বললো, মামণি, তোমার মামা কি এতই ফকির হয়ে গেছে নাকি যে, পাবলিক বাথ এ গোসল করবে? বাথরুমও আছে! ওই দিকে। যাও, গোসলটা শেষ করে, ঠাণ্ডা মাথাতেই সব খুলে বলো।
শীলা তার হাতের ছোট হ্যাণ্ডব্যাগটা মেঝের উপরই ধপাস করে ফেলে, বাথরুমটার দিকেই ছুটলো। বাথরুমে ঢুকে মিনিট পাঁচেকও হবে না, সে বাথরুম থেকেই চিৎকার করতে থাকলো, মামা, মামা, সাবান কই?
সাবান তো সাবান কেইসেই থাকার কথা। তবে, খানিকটা উপরেই দেয়ালের সাথে আঁটাকানো কেইসটাতেই রাখা আছে। শীলা খানিকটা খাটো বলেই বুঝি চোখে পরছিলো না। সিকদার অনি ঘরের ভেতর থেকেই উঁচু গলাতে বললো, দেয়ালেই আটকানো আছে। একটু উপরে তাঁকিয়ে দেখো!
কয়েক মুহুর্ত পরই, শীলার চেঁচানো গলাই ফিরে এলো, কই, দেখছিনা তো?
অগত্যা, সিকদার অনি বাথরুমের দিকেই এগিয়ে গেলো। খোলা দরজাটা খানিকটা ফাঁক করতেই চোখে পরলো, শীলা পুরুপুরিই নগ্ন! শুধু তাই নয়, তার দিকেই ফিরে ছিলো। হঠাৎ শীলাকে নগ্ন দেখে, খানিকটা লজ্জাই অনুভব করলো সিকদার অনি। সে দরজাটা খনিকটা ভেজিয়ে দিয়েই আঙুলী ইশারা করে বললো, ওইতো, দেয়ালে!
শীলা দেয়ালের দিকে তাঁকালো কি তাঁকালো না বুঝা গেলো না। সে আদুরে গলাতেই বললো, কই?
সিকদার অনি পুনরায় দরজাটা খুলে, সাবানের কেইস থেকে সাবানটা তুলে নিয়ে, শীলার হাতেই দিলো।
সিকদার অনিও মানুষ। অনেকে তাকে বিকৃত রূচির মানুষও বলে। চোখের সামনে, এমনি কোন নগ্ন দেহ থাকলে, নজরে তো পরবেই। হউকনা তার প্রাণ প্রিয় কেয়া আপারই মেয়ে। সিকদার অনি আঁড় চোখেই শীলার নগ্ন দেহটা এক নজর বুলিয়ে নিলো।
সিকদার অনি মাঝে মাঝে নিজেকেও বুঝতে পারে না। সব কিছুরই কিছু সীমা থাকে। মানুষ সেই সীমাতে থেকেই জীবনটাকে পরিচালনা করে। সিকদার অনির মনটা যেনো বরাবরই সেসব সীমা লংঘন করে অনেক দূর অতিক্রম ফেলে। তখনই সে শুধু প্রস্থাতে থাকে।
একই বাড়ীতে বসবাস করলে, দুর্ঘটনাক্রমে নিজ রক্ত সম্পর্কীয় কারো নগ্নতা চোখে পরারই কথা। সাধারন মানুষ গুলো তখন তা এড়িয়েই যায়। যৌনতার চেতনা আসার কথাই আসে না। অথচ, সিকদার অনির চোখে যেমনি কিছু সমস্যা আছে, তার দেহের রক্তের ধারায়ও কিছু সমস্যা আছে। তার চোখে নগ্নতা পরা মানে, এড়িয়ে যাবার মতো কিছু নয়। আর নগ্নতা একবার তার চোখে পরলে, তা তার দেহের শিরা উপশিরা গুলোকে জ্বালিয়ে পুড়ে ছাড়খাড় করে থাকে। বাথরুমের দরজাটা নিজেই বন্ধ করে, ঘরে ফিরে এলো সিকদার অনি। ছোট ঘরটার ছোট টেবিলটার উপর রাখা, পুরনো কম্পিউটারটা অন করে, ই মেইল বক্সটা খুলে ব্যাস্ত থেকে, কিছুক্ষণ আগে দেখা শীলার নগ্ন দেহটার কথাই ভুলতে চেষ্টা করলো। অথচ, তুষের আগুনের মতোই ঘেষে ঘেষে চোখের সামনে শীলার নগ্ন দেহটা ভেসে আসতে থাকলো।
খানিকটা মোটাই শীলা। উচ্চতায়ও একটু খাট। সেই কারনেই কিনা কে জানে? শীলার বক্ষ দুটি অনেকটা ছোট খাট দুটি কচি ডাবের মতোই! গায়ের রং মিষ্টি বলে, আরো বেশী চমৎকার, ফর্সা, তার বক্ষ যুগল। এক নজর যা চোখে পরেছিলো, বক্ষ বৃন্ত যুগলও বেশ প্রশস্থ, গাঢ়! অথচ, বোটা দুটি অধিকতর ছোট! ছোট আকারের মসুর ডালের মতোই।
সিকদার অনি, মেইল বক্স থেকে নুতন একটা মেইলে ক্লিক করে সেখানেই মনোযোগ দিতে চাইলো। মেইলে চোখ বুলিয়ে যেতে থাকলো ঠিকই, তবে মাথার ভেতর মেইলে লিখা কোন কিছুই ভেসে আসছিলো না। তার বদলে চোখের পর্দায় ভেসে আসতে থাকলো, শীলার নিম্নাংগের ঘন কালো কেশ গুলোই।
এক নজরের বেশী দেখা হয়নি সেই কেশ গুলো। কেনো যেনো শীলা দেহটা বাঁকিয়ে, ভারী বক্ষ দুটি ঝুলিয়ে, নিম্নাংগটাই লুকানোর চেষ্টা করছিলো! এক নজর যা চোখে পরেছিলো, শীলার নিম্নাংগের কেশ গুলো খাড়া, সমতল! যা দেখে কালো জলেরই এক ঝর্ণধারার মতোই মনে হয়েছিলো।
সিকদার অনি আরো একটা মেইল ক্লিক করে সব কিছু ভুলারই চেষ্টা করলো। অথচ, ট্রাউজার এর নীচে, তার লিংগটা কেমন যেনো বেসামালই হয়ে পরতে থাকলো।
সিকদার অনি আসলেই এক রূচি বিকৃত মানব! কেয়া তার আপন বোন না হলেও, সামাজিক ভাবে নিজ বোন বলেই পরিচিত এবং স্বীকৃত! অতীতে, কেয়া আপার সাথে সিকদার অনির কি সম্পর্ক ছিলো আর ছিলো না, তা কারো জানার কথা নয়। বর্তমানে, মাতৃ পিতৃহীন সিকদার অনির অভিভাবক হিসাবে, কেয়াও বড় বোনের দাবী নিয়েই লোক সমক্ষে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। আর সেই কেয়ারই গর্ভজাত কন্যা শীলা! আপন ভাগ্নীর চাইতেও কোন অংশে কম নয়! অথচ, সিকদার অনির দেহে কেমন যেনো যৌনতার আগুনই ধাউ ধাউ করে জ্বলে উঠতে থাকলো, শীলার নগ্ন দেহটা দেখার পর থেকেই।
সিকদার অনি তখনো তার কম্পিউটারে চোখ রেখে, আত্ম মনেই বিভোর ছিলো। তার মাথার ভেতরটা শুধু ভোঁ ভোঁ করছিলো। পেছনে বাথরুম থেকে ফিরে আসা শীলার পায়ের শব্দ সহ, নিঃশ্বাসের শব্দও কানে আসছিলো। অথচ, সিকদার অনি পুনরায় কম্পিউটার এর মনিটরে, ই-মেইলগুলোতেই মনোযোগ দিলো।
শীলা পুরু পুরি নগ্ন দেহেই বাথরুম থেকে বেড় হয়ে এসেছিলো। অতঃপর, তার হ্যাণ্ডব্যাগটা খুলে পরনের একটা পোষাকই খোঁজতে থাকলো। সবুজ রং এর বোতামের লং শার্টটাই বেছে নিলো সে। সেটা গায়ে জড়িয়ে, বোতামগুলো লাগাতে লাগাতেই বললো, মামা, খাবারের আয়োজন আছে তো! ক্ষুধায় তো পেট চোঁ চোঁ করছে!
শীলার গলা শুনেই ঘুরে তাঁকিয়েছিলো সিকদার অনি। শীলার পরনের সবুজ জামাটার উপরের বোতামগুলো তখনো লাগানো হয়নি। ডান স্তনটা জামার আড়ালে থাকলেও, বাম স্তনটা তখনো পুরুপুরিই বেড়িয়ে আছে। সুডৌল একটা স্তন! সিকদার অনির নিজের অজান্তেই তার নিম্নাংগে প্রচণ্ড এক চাপ অনুভব করলো। সে চোখ নামিয়ে, কম্পিউটার এর দিকে মুখ করে গম্ভীর গলাতেই বললো, তুমি পোষাকটা পরে রেডী হয়ে নাও। তারপর, বাইরে একটা ভালো রেষ্টুরেন্টে খেতে যাবো।
শীলা আহলাদী গলাতেই বললো, বাইরে খেতে যাবো কেনো? তোমার বাসায় কি খাবারের আয়োজন নেই?
সিকদার অনি বললো, থাকবেনা কেনো? ব্যাচেলর মানুষ! মাঝে মাঝে একটা ডিম পোঁজ দিয়েই সেরে ফেলি। তুমি ওসব খেতে পারবে না।
শীলা বললো, তাহলে ঘরে বুঝি ডিম ছাড়া অন্য কিছুই নেই! তাইতো?
শীলার নগ্ন দেহটা দেখার পর থেকে, সিকদার অনির মাথাটা এমনিতেই খুব গরমই হয়েছিলো। সে খুব রাগ করেই বললো, তুমি তো বেশী প্যাচাল পারো! মুরগী, গরু, খাসীর মাংস, মাছ, সব্জী, সবই আছে ফ্রীজে! ইচ্ছে হলে, নিজে রান্না করে খাও!
শীলা কোমল গলাতেই বললো, তুমি এমন ধমকে ধমকে কথা বলছো কেনো?
সিকদার অনিও খানিকটা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বললো, না মানে, আমার রান্না তোমার ভালো লাগবে না। আমি তো পেঁয়াজ আর মরিচ মিশিয়ে, লবন দিয়ে সব সিদ্ধ করে ফেলি।
শীলা আবারও বললো, তুমি কম্পিউটারের দিকে তাঁকিয়ে তাঁকিয়ে কথা বলছো কেনো? হঠাৎ এসে পরে কি তোমার বারডেন হয়ে গেলাম নাকি? আমাকে কি তোমার অসহ্য লাগছে? টাকা পয়সা কিছু সংগে করে এনেছি। যে কয়টা দিন থাকবো, খরচ দিয়ে দেবো। একটু থাকার জায়গাই তো চাইছি!
সিকদার অনি কি করেই বা বলবে, বাথরুমে দেখা শীলার নগ্ন দেহটাই তার মাথা খারাপ করিয়ে দিয়েছে। তাই সে তার সামনে সহজ হতে পারছেনা। সিকদার অনি নিজেকে খানিকটা সহজ করেই, শীলার দিকে তাঁকালো। শীলা ততক্ষনে, তার পরনের জামার সব গুলো বোতাম লাগিয়েই ফেলেছিলো। তবে, জামাটা কিছুটা পাতলা বলেই বোধ হয়, গায়ের সাথে সেঁটে থাকা জামাটার ভেতর থেকে, বৃহৎ বক্ষ যুগল যেমনি স্পষ্ট হয়ে আছে, তেমনি জামাটার সবুজ জমিনের উপর বক্ষ বৃন্তগুলোও স্পষ্ট ফুটে রয়েছে।
সিকদার অনি মহা লোচ্চা ধরনেরই মানুষ। জীবনে কত মেয়ে যে উপভোগ করেছে, সে নিজেও তা হাতে গুনে শেষ করতে পারবে না। তারপরও, শীলার দিকে তাঁকিয়ে নিজেকে খুব একটা সহজ করে নিতে পারলো না।
তার পেছনে কিছু কারন আছে। সামাজিক ভাবে, শীলার মা কেয়া, সিকদার অনির বড় বোন হিসেবে পরিচিতি পেলেও, কেয়ার সাথে সিকদার অনির রক্তের কোন সম্পর্ক নেই। খুব ছোট কাল থেকেই কেয়া তাদের বাড়ীর সাধারন এক কাজের মেয়েই ছিলো। শৈশবে মায়ের মৃত্যুর পর, বয়সে মাত্র তিন বছরের বড়, সেই কাজের মেয়েটিই তাকে বড় বোনের স্নেহ ছায়া দিয়ে বড় করে তুলেছিলো। তারই মেয়ে হলো শীলা।
এমন, বাড়ীর কোন কাজের মেয়েরই কন্যা হিসেবে, শীলার দিকে যে কারোরই যে কোন নজরেই তাঁকানো সম্ভব থাকার কথা। অথচ, সিকদার অনি শুধুমাত্র শীলার দিকেই কুৎসিত কোন নজরে তাঁকাতে পারে না। কারন, আর কেউ না জানলেও, সিকদার অনি জানে, সেবার কেয়া যখন তাদের বাড়ী থেকে বিদায় নিয়েছিলো, তখন কেয়া গর্ভবতীই ছিলো। আর কেয়ার বিদায় নেবার একমাত্র কারনই ছিলো, সিকদার অনির সাথে তার গোপন সম্পর্ক! রাতারাতি, শীলার বাবার সাথে কেয়ার বিয়েটা সম্পন্ন হলেও, শীলা কিন্তু কেয়ার বর্তমান স্বামীর ঔরশজাত কোন কন্যা নয়।
সিকদার অনি শীলার দিকে এক পলক তাঁকিয়ে, রাগ করার ভান করেই বললো, রাগ করছি এই কারনে যে, বলা নেই কওয়া নেই, অমন হুট করে কি কেউ চলে আসে?
শীলাও সিকদার অনির মতোই সরল প্রকৃতির। সেও কোন কথা প্যাঁচাতে পারে না। সে সামনা সামনি চেয়ারটাতেই বসে বললো, মামা, আমি ঘর পালিয়েছি!
শীলার অমন একটা কথা শুনেই সিকদার অনি অবাক হয়ে তার দিকে তাঁকিয়েছিলো। তাঁকাতেই চোখে পরলো, বসে থাকা শীলার পরনে কোন প্যান্টি নেই। সবুজ জামাটার দু অস্তিনের ফাঁক থেকে এক গুচ্ছ কালো কেশই শুধু প্রকাশিত হয়ে আছে। সিকদার অনির মাথাটা আবারো ভন ভন করে উঠলো। তারপরও নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেই বললো, ঘর পালিয়েছো? কেনো?
শীলা বললো, আজকে কে নাকি আমাকে দেখতে আসার কথা!
সিকদার অনি খানিকটা রসিকতা করেই বললো, তোমার মতো এমন একটা সুন্দরী রূপসী মেয়েকে তো, অনেক সুপুরুষেরই একটিবার দেখার লোভ থাকার কথা! তো, চেহারাটা একটু দেখিয়েই দিতে! দোষটা হতো কি?
শীলা খানিকটা পরিষ্কার করেই বললো, মামা, তুমি বুঝতে পারছো না! দেখা মানে, বিয়ে! বিয়ে করার জন্যেই দেখতে আসার কথা!
সিকদার অনি গম্ভীর হয়েই বললো, তাতো বুঝলাম! দেখতে আসতো! দেখে চলে যেতো! তোমার পছন্দ না হলে, সরাসরি নো বলে দিতে!
শীলা চুপ করেই রইলো।
সিকদার অনি বললো, বুঝেছি, তুমি ঠিক আমার মতো! বিয়ে করতে খুব ভয় পাচ্ছো!
সিকদার অনির কথায় শীলার মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো কিনা কে জানে? সে চেয়ারটা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে, কাঠের চেয়ারটা ঘুড়িয়ে, চেয়ারের দু পাশে দু পা রেখে, উল্টু হয়েই বসলো চেয়ারটাতে। তারপর বুকটা চেয়ারের পিঠে ঠেকিয়ে, রাগ করার ভান করে বললো, মামা, সবাইকে নিজের মতো করে ভাববেনা। তুমি একটা অপদার্থ! তাই বিয়ে করোনি। আর আমি হলাম একটা পদার্থ! তাই বিয়ে করতে চাইছিনা।
কাঠের চেয়ারটার পিঠে চেপে থাকা শীলার বুক থেকে সবুজ জামাটার একাংশ সরেই গিয়েছিলো। সারি করা টুকরো কাঠ গুলোর ফাঁকে, বক্ষের বৃন্ত যুগলের একাংশও বেড়িয়ে পরছিলো। সিকদার অনি আর সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করতে চাইলো না। সে হাসি খুশী গলাতেই বললো, বুঝলাম! তাহলে, আমার এই বুদ্ধিমতী পদার্থ ভাগ্নীটি যে, মা বাবাকে একটা দুঃশ্চিন্তার মাঝে ফেলে রেখে চলে এলো, তার কি হবে? পুলিশ, পত্রিকা করে যদি একটা বিশ্রী কাণ্ড ঘটায়, তখন তোমাকে আর কেউ পদার্থ বলবে না। এমন কি আমিও না। সবাই একটা অপদার্থ মেয়েই বলবে!
শীলা মন খারাপ করেই বললো, তাহলে আর তোমার কাছে এলাম কেনো? আমার বোকামী হয়ে গেছে! স্যরি! কিন্তু, আমি এখন বিয়ে করবো না। একটা কিছু বুদ্ধি বেড় করে, মা বাবাকে ম্যানেজ করো। আমার খুব ক্ষুধা লেগেছে। দেখি তোমার রান্না ঘরে কি আছে?
এই বলে শীলা রান্না ঘরের দিকেই এগিয়ে গেলো।
সেই ফাঁকে সিকদার অনি, শীলার মা বাবাকে একটা টেলিফোন করে, তাদের নিশ্চিত করলো আগে। তারপর, আবারো কম্পিউটার এর মনিটরে মনোযোগী হলো।
রান্নাঘরে শীলা খুব বেশী সময় নিলো না। ঘন্টা আধেক পরই ডাকতে থাকলো, মামা, খাবার রেডী!
সিকদার অনি কম্পিউটার এ চোখ রেখেই বললো, তুমি খেতে বসে যাও। আমি এক্ষুণি আসছি!
শীলার পেটটা ক্ষুধায় চোঁ চোঁই করছিলো। সিকদার অনির দেরী দেখেই, তার পিঠের কাছে ঘেষেই দাঁড়ালো। বললো, কি করছো মামা?
সিকদার অনি গম্ভীর গলাতেই বললো, তোমার জন্যে একটু খোঁজাখোঁজি করছি!
শীলা রাগ করার ভান করে বললো, মামা, তুমিও? তোমরা সবাই মিলে বুঝি আমাকে বিদায় করতে পারলেই বেঁচে যাও, তাই না?
সিকদার অনি বললো, আরে না! তোমার জন্যে কোন পাত্র খোঁজছি না। খোঁজছি, তোমার প্রতীভা বিকাশেরই একটি পথ! ঠিক আছে, আগে খাবার দাবারটা সেরে নিই কি বলো? আমি ইন্টারনেটের কয়েকটা সাইট বুক মার্ক করে রেখেছি। খাওয়া দাওয়া শেষ করে, দুজনে এক সংগেই দেখবো।
সিকদার অনি অনেকটা সহজই হয়ে এলো শীলার সামনে। খেতে খেতেই শীলার পরনের বোতামের পাতলা সবুজ জামাটার দিকে তাঁকিয়েই বললো, তোমার ফ্যাশন সেন্স খুব ভালো। কে কিনে দিলো এই দামী পোষাক? তোমার আম্মু?
শীলা ফিঁক ফিঁক করেই হাসলো। বললো, মামা! তোমার চোখে কোনটা দামী, কোনটা সস্তা, বুঝিনা! কাটপিসের দোকান থেকে খুব সস্তায় কেনা কাপর! আর বানিয়েছি আমি নিজেই!
সিকদার অনি খানিকটা চিন্তিতই হয়ে পরলো।
মানুষ বোধ হয় অনেক কিছুই এড়িয়ে যেতে পারে। একটা সময়ে, জন্মদান করা মা বাবাকেও এড়িয়ে যেতে পারে মানুষ! কলহ কিংবা এটা সেটা কারনে, প্রাণপ্রিয় প্রেমিকা কিংবা বউকেও এড়িয়ে যেতে দ্বিধা করে না। তবে, নিজ ঔরশজাত সন্তানকে এড়িয়ে যেতে অনেক কষ্টই হয় মানুষের!
শীলা যে সিকদার অনির সন্তান তার কোন সামাজিক স্বীকৃতি দূরের কথা, কেউ জানেও না। এমন কি শীলা নিজেও জানে না, যাকে সে বরাবরই মামা বলে ডাকে, সে আসলে তার স্বয়ং পিতা। দূর থেকে আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাড় খাড় হয়ে থেকেই তাকে স্নেহ ভালোবাসাটুকু উপহার দিয়ে এসেছে বছরের পর বছর। এমন কি, এইচ, এস, সি, পরীক্ষার পর ইউনিভার্সিটি পড়ালেখার ব্যাপারে, বিষয়টিও তার নিজ জন্মদাতা পিতা সিকদার অনিই ইংগিত করেছিলো। অথচ, সিকদার অনি কি জানতো, চারুকলার মতো একটা বিষয়ে পড়ালেখা করে, শীলাকে অন্ধকার ভবিষ্যৎ নিয়েই দিন কাটাতে হবে?
খাবার দাবার শেষ হবার পরই সিকদার অনি বললো, তোমার পরনের জামাটা সত্যিই খুব আকর্ষনীয় এবং দুর্লভ! এমন ডিজাইনের পোষাক বাজারে খুব একটা থাকার কথা না। তুমি যদি এটা সত্যিই নিজে বানিয়ে থাকো, তাহলে এই মেধাটা কাজে লাগাচ্ছো না কেনো?
এই বলে সিকদার অনি আবারো কম্পিউটার এর সামনে গিয়ে বসলো।
শীলা আবারো কাঠের চেয়ারটাতে উল্টু হয়ে বসে, হাত দুটি কাঠের চেয়ারটার পিঠের উপর দিকটায় রেখে, হাত দুটির উপর থুতনী ঠেকিয়েই বললো, সব চেষ্টা শেষ! আমাকে নিয়ে ভেবোনা তো! আমি নিজেই আমার কথা ভাবছি!
সিকদার অনি ব্যাচেলর মানুষ। বিভিন্ন কারনে বিয়েথা করেনি। কখনো করবে বলেও মনে হয়না। তাই এক রুমের ছোট খাট বাসা নিয়েই বরাবর বসবাস করে থাকে। হঠাৎ করে শীলা, তার এই ছোট এক কক্ষের বাসাটাতেই চলে আসার পর, রাতে ঘুমোনোর ব্যাপারটা নিয়েও সে চিন্তিত হয়ে পরলো।
প্রকাশ্যে সামাজিক ভাবে, শীলা তার বড় বোনেরই মেয়ে হলেও, বাস্তবে তো নিজ ঔরশজাত মেয়েই! বাবা মেয়ে একই বিছানায় কোন রকমে মাথা গুঁজে রাত কাটানো বোধ হয় খুব একটা কঠিন ব্যাপার নয়। তবে, সমস্যা হলো শীলার আচরন।
পোষাক আশাকের ব্যাপারে শীলা খানিকটা অসচেতন বলেই মনে হলো। ছোট্ট একটা মেয়ে হলে হয়তো, বাবার অধিকার নিয়ে শাসন করার অনেক কিছুই থাকতো। ইউনিভার্সিটি পাশ করা, এত বড় একটা ধীঙ্গী মেয়েকে, পোষাকের ব্যাপারে শাসন করাও তো, খুব কঠিন! আবার কিনা রাগ করে, এখান থেকেও পালিয়ে অন্য কোথাও উধাও হয়ে যায়! তখন তো সিকদার অনি সব কুলই হারাবে।
রাত খুব একটা হয়নি। ক্লান্ত দেহের শীলার খানিকটা ঘুম ঘুম ভাবই হচ্ছিলো। তাই সে রাতের ঘুমানোর পোষাকই বদলানোর উদ্যোগ করছিলো।
শীলার সব পোষাকই বুঝি নিজ হাতে বানানো। রাতের ঘুমানোর পোষাকটাও বোধ হয় নিজ হাতেই তৈরী করা। সাদা ট্র্যাক জ্যাকেটের মতোই জীপার টানা একটা পোষাক উর্ধাংগে পরার জন্যে বেছে নিলো। শীলার বক্ষ যুগল সত্যিই বৃহৎ! এমন একটা আঁটসাট জ্যাকেটে, তার বক্ষ দুটি ঢাকার জন্যে, জীপারটা টেনেও উপরে উঠাতে পারছিলো না। সে তার বৃহৎ বক্ষ যুগল প্রদর্শন করে রেখেই, খানিকটা লজ্জিত ভাব নিয়েই বললো, মামা, রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘর পালিয়েছিলাম। চোখের সামনে যা ছিলো, তাই ব্যাগে ঢুকিয়েছিলাম। এটা তো দেখছি অনেক পুরোনো! গায়ে ছোট লাগছে!
সিকদার অনি সাদা জ্যকেট পরা, জীপারটা পেটের দিকে খানিকটা তুলে আনা, শীলার নগ্ন বক্ষের দিকে আঁড় চোখেই তাঁকালো। এমন ধীঙ্গী একটা মেয়ের, এমন আহলাদী কথায়, সে কি বলবে, কিছুই বুঝলো না। তারপরও বললো, যদি এটা গায়ে ছোট হয়, অন্যটা পরে দেখো!
শীলা বললো, আর কোন পোষাক আনিনি তো!
সিকদার অনি বললো, তাহলে, আমার তো অনেক শার্ট আছে। আলনা থেকে পছন্দ মতো একাট শার্ট বাছাই করে পরে নাও।
শীলা চোখ কপালে তুলেই বললো, তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে? আমি অন্যের পরনের পোষাক পরবো? বাজারে কেনা রেডীমেইড পোষাকই পরিনা!
খানিকটা থেমে শীলা আহলাদী গলাতেই বললো, বুকটা একটু খোলা থাকবে, তোমার কি কোন সমস্যা হবে?
মেয়েদের দেহের প্রধান আকর্ষনই তো বক্ষে! আর তা যদি এমন সুদৃশ্য সুডৌল হয়ে থাকে, চোখের সামনে তা যদি প্রদর্শিতই হয়ে থাকে, তখন পুরুষদের কি সমস্যা হয়, তা তো একমাত্র পুরুষদেরই অনুভব করার কথা। সিকদার অনির দেহের নিম্নভাগটাও তেমনি এক জ্বালাতনই অনুভব করছিলো। তারপরও, শীলাকে বলার মতো কোন উত্তর খোঁজে পেলো না সে। পরোক্ষভাবেই বললো, অসুবিধা হবে কেনো? এরকম বুক খোলা রেখে ঘুমুলে, ঠাণ্ডাও তো লেগে যেতে পারে।
যৌন আচরন, যৌন প্রবৃত্তিগুলো বোধ হয় বংশ পরস্পরাতেই হয়ে থাকে। কারো বাবা যদি লোচ্চা প্রকৃতির হয়ে থাকে, পুত্র কন্যাদের মাঝেও সেসব প্রবৃত্তির সঞ্চার হয়ে থাকে। কিংবা কারো মাও যদি কামুক প্রকৃতির হয়, তাহলে সন্তানেরাও সেসব গুনাবলী গুলো পেয়ে থাকে।
পোষাক আশাকে আসেচতনতা গুলোও পারিবারিক ভাবেই পেয়ে থাকে মেয়েরা। তাই, শীলার আচরনে আমি খুব একটা অবাক হলাম না। কারন, শীলা, কেয়া আপা কিংবা আমারই সন্তান! পোষাকের ব্যাপারে কেয়া আপাও যেমনি অসচেতন ছিলো, আমি তার নগ্নতা দেখে মুগ্ধই হতাম। আর তেমনি এক পরিবেশেরই ফসল হলো শীলা। শীলার মাঝে খানিকটা দেহ প্রদর্শনের স্বভাব থাকবে এটাই স্বাভাবিক। শীলা তার সুডৌল নগ্ন বক্ষ প্রদর্শন করে রেখেই বাম হাতটা গলার দিকে বুকটায় ঠেকিয়ে বললো, বাসায় তো ন্যাংটু হয়ে ঘুমিয়ে পরি। কই, কখনো ঠাণ্ডা লাগে না তো!
সিকদার অনি আর বলার মতো কোন ভাষা খোঁজে পেলো না। সে ফ্যাল ফ্যাল করেই শীলার নগ্ন বক্ষের দিকে তাঁকিয়ে রইলো। তার মনে হতে থাকলো, ঘরের ভেতর শীলা নগ্ন থাকবে, এটাই স্বাভাবিক! আর তাকে তা সহজভাবেই দেখতে হবে, কোন রকম দ্বিধা দ্বন্দ না রেখে, এটাও খুব স্বাভাবিক।
শীলার বক্ষ ঈষৎ ঝুলে গেছে। বয়সের ভারে নয়, বরং বক্ষ দুটির ভারেই। ঝুলে গেলেও, সুঠাম, পরিপূর্ন আর লোভনীয় ধরনেরই সুদৃশ্য। খয়েরী বৃন্ত প্রদেশ অধিকতর প্রশস্ত, তবে নিপলটা অধিকতর ছোট! দেখলেই বুঝা যায়, এই বোটাতে এখনো কারো ঠোটের স্পর্শ লাগেনি। বড় আকারের ছোলা যুক্ত, মসুর ডালের মতোই অনেকটা! সিকদার অনি বললো, এটা তো আর তোমার নিজ বাসা নয়, নিজের বিছানাও এখানে নাই। অন্যের বিছানাতেই, অন্যের পাশে ঘুমাতে হবে! তাই পোষাক যা আছে, তাই পরেই ঘুমাও।
শীলা কি তার মামা সিকদার অনিকে অভিভূত করতে চাইছে নাকি? তার নিম্নাংগে তখনো কোন পোষাক নেই। অথচ, ঘরের ভেতর আহলাদী একটা ভাব নিয়েই পায়চারী করতে থাকলো, বুক খোলা সাদা জ্যকেটটার ভেতর থেকে, বৃহৎ স্তন যুগল বেড় করে রেখে, দুলিয়ে দুলিয়েই হাঁটছে। থেকে থেকে, সিকদার অনির নজরটাও সেদিকে চলে যাচ্ছিলো। সেই সাথে তার ট্রাউজারের তলায় লিঙ্গটাও এক ধরনের চাপই অনুভব করতে থাকলো কেনো যেনো।
শীলা হঠাৎই থেমে দাঁড়িয়ে, মাথাটা একটু হেলিয়ে, বাম হাতটা কানের কাছে ঠেকিয়ে রেখে বললো, ঘুমটা আসতে চেয়েও আসছে না। হঠাৎ জার্নি করে, খুব বেশী টায়ার্ড বলে কিনা কে জানে?
সিকদার অনি সহজভাবেই শীলার দিকে তাঁকালো। শীলার নিম্নাংগের কেশ গুলোও খুব লোভনীয়। পাতলা, তবে দীর্ঘ হয়ে উঠা কালচে কেশগুলো কেমন যেনো চোখ ঝলসে দেবার মতোই মোহনীয়। খানিকটা মোটিয়ে যাবার কারনেই বোধ হয়, পাছাটা যেমনি ভারী, উরু দুটিও খুব ফোলা ফোলা। সিকদার অনি তা দেখেও নিজেকে সহজ করে নিয়ে বললো, জার্নি করলে এমন একটু মনেই হয়। শুয়ে পরলে, কিছুক্ষণের মাঝেই ঘুম এসে যায়। আর যদি ঘুম নাই আসতে চায়, তাহলে ফ্রীজে লিকুইড দুধ আছে, গরম করে এক গ্লাস খেয়ে নাও।
শীলা কি সিকদার অনির সাথে মজা করতে চাইছে নাকি? সে রসিকতার সুরেই বললো, আমার বুকে দুধ দেখেই কি দুধ খেতে বললে নাকি মামা? নাকি তোমারই আমার এই দুধু খেতে ইচ্ছে করছে!
অন্য কেউ হলে হয়তো, সিকদার অনিও মজা করার চেষ্টা করতো। কিন্তু, শীলার সাথে তো আর যৌনতামূলক রসিকতা করা তার চলে না। শত হলেও নিজ ঔরসজাত কন্যা। সে গম্ভীর হয়েই বললো, শীলা, সব ব্যাপার নিয়ে ফাজলামী করা ঠিক নয়!
শীলা বললো, ফাজলামী করলে কি হয়? আমাকে দেখে ক্রেইজী হয়ে যাচ্ছো না তো আবার?
সিকদার অনি বললো, আহা, তুমি একটু তোমার স্বাধীন মতোই ঘুমানোর চেষ্টা করো তো দেখি। আমি দেখি, তোমার জন্যে ভালো একটা চাকুরী খোঁজে পাওয়া যায় কি না।
শীলা বললো, ওটা আমি দীর্ঘ ছ মাস চেষ্টা করে দেখেছি। কোন লাভ হয়নি। কিন্তু ঘুমাবো কোথায়? তোমার ঘরও একটা, খাটও একটা!
সিকদার অনি বললো, কি আর করার! হুট করে চলে এলে! এখন আমি তোমার জন্য আলাদা ঘরই বা কোথায় পাবো, খাটই বা বলো কোথায় পাবো।
শীলা বললো, ধ্যাৎ মামা! তুমি সব কিছুই খুব সিরীয়াসলী ভাবো। এমনিতেই মজা করলাম। বিপদের সময় আশ্রয় স্থল গুলোতে মানুষ এক রুমের ভেতর কয়েক পরিবার মিলে কাটিয়ে দেয়!
এই বলে শীলা লাফিয়ে বিছানার উপর গিয়ে উঠলো।
সিকদার অনি একা মানুষ। রাতে অনেক দেরীতেই ঘুমায়। মাঝে মাঝে মনের আনন্দে চটি লিখে, সারা রাতও না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়! শীলা বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে বললো, মামা, তুমি ঘুমাবে না!
সিকদার অনি কিছু বলার জন্যে, বিছানার দিকে তাঁকাতেই দেখলো, শীলা নিম্নাংগে কোন কিছু না পরেই, চিৎ হয়ে শুয়ে পরেছে। সিকদার অনি এবার ধমকেই বললো, কি ব্যাপার, ওরকম ন্যাংটু হয়েই ঘুমুবে নাকি?
শীলা আহলাদী গলাতেই বললো, বললাম না, বাসায় আমি ন্যাংটুই শুয়ে পরি।
সিকদার অনি বললো, এটা তোমার বাসা নয়। আমার বাসা। এখানে তোমার তো স্বাধীনতা থাকতে পারে না।
শীলা মন খারাপ করেই বললো, এতো রাগ করছো কেনো? ঠিক আছে, আমার ব্যাগের ভেতর কোন প্যান্টি আছে কিনা খোঁজে দেখো। থাকলে একটা দাও!
আহলাদী এই মেয়ের কথা শুনে, সিকদার অনির মেজাজটাই খারাপ হতে থাকলো। তারপরও এমন চমৎকার ফুটফুটে সুন্দরী একটা মেয়ের উপর রাগ করেও বেশীক্ষণ থাকা যায়না। সে কম্পিউটার এর সামনে থেকে উঠে গিয়ে, শীলার ব্যাগের ভেতর থেকে হাতরে হাতরে, আকাশী রং এর একটা প্যান্টি, আর সাদা নীল প্রিন্টের একটা স্কার্টও বেড় করে নিলো। তারপর, তিন চার বছর বয়সের শিশু কন্যাকে বলার মতোই শাসনের গলাতেই বললো, আপাততঃ এগুলো পরে ঘুমাও।
শীলা উঠে বসলো। ক্লান্ত একটা ভাব নিয়ে প্রথমে স্কার্টটা কোমরে টেনে নিলো অনেক সময় করে। তারপর, প্যান্টিটা দু পায়ের মাঝে গলিয়ে, হাঁটু পর্য্যন্তই টেনে আনলো। তারপর, খানিকটা বিশ্রামের ভাব করেই বললো, মামা, আজকে যদি সত্যি সত্যিই আমার বিয়ে হয়ে যেতো, তাহলে তো জানা নেই শুনা নেই একটা ছেলেই আমার নগ্ন দেহটা দেখতো। এবং আরো অনেক কিছুই করতে চাইতো। মানুষের মাঝে সম্পর্কের দেয়াল গুলো খুবই বিচিত্র! তাই না!
সিকদার অনি পুনরায় কম্পিউটার এর সামনে এসেই বসলো। তারপর বললো, কি বলতে চাইছো?
শীলা বললো, না মানে, একই আমি। কেউ আমার পোষাক পরা দেহটা নগ্ন করে দেখার লোভ পোষন করে! আবার কেউ কেউ আমার নগ্ন দেহটা দেখেও বিরক্ত হয়। ঢেকে রাখার জন্যেই পায়তারা করে!
সিকদার অনি বললো, এটাই স্বাভাবিক। সভ্য জগতে এসব এর প্রয়োজন আছে।
শীলা তার হাটু পর্য্যন্ত টেনে আনা প্যান্টিটা পুরুপুরিই পরে নিলো। তারপর শুয়ে পরে বললো, কি জানি? কোনটা সভ্য জগৎ, আর কোনটা বর্বর জগৎ, বুঝিনা।
এই বলে শীলা ঘুমিয়ে পরারই চেষ্টা করলো।
সিকদার অনি কম্পিউটার এর সামনে বসেই ভাবতে থাকলো। তার চেনা জানা সবাইকে নিয়েই অনেক গলপো কাহিনীই তো লিখেছে সে। শীলাকে নিয়ে একটা গলপো লিখলে কেমন হয়?
পরদিন অফিসেও কাজে মন বসলো না সিকদার অনির। এতটা দিন ব্যাচেলর বলে নাম ভাঙিয়ে, কোন রকম জবাবদিহি ছাড়াই, গায়ে ফু দিয়ে, হাওয়ায় ভাসিয়ে জীবন কাটিয়েছে সে। হঠাৎ শীলা এমন করে ঘর পালিয়ে চলে আসায়, দায় দায়ীত্বও যেনো কিছু ঘুরপাক খেতে থাকলো তার মাথার ভেতর। শুধু তাই নয়, নিজেকে খুব অপরাধীও মনে হতে থাকলো। শুধু শুধু অন্য একটা লোক, তার নিজ পাপের ফসলের বোঝা বয়ে এসেছে এতটা দিন। আর তার সেই কেয়া আপাকেও মনে হতে থাকলো, মহান এক ব্যাক্তিত্ব। শীলার জন্ম নিয়ে জীবনে যে কখনোই ঘুনাক্ষরেও কটু শব্দটি করে নি। অভিযোগও করেনি।
সাইদার সাথে সিকদার অনির সম্পর্কটা একটু বিদঘুটে বলাই চলে। বন্ধুর সম্পর্ক! বয়সের ব্যাবধানও অনেক। এমন বয়সের ব্যাবধানে, ছেলেতে মেয়েতে বন্ধুর সম্পর্ক আবার হয় কি করে?
এটা ঠিক, সাইদা সিকদার অনিকে প্রাণপনেই ভালোবাসে। একটা বয়সে মেয়েরাও বোধ হয় হুশ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে! ব্যাচেলর কিংবা সুদর্শন ছেলে দেখলে, যে কোন ছেলেকেই ভালোবেসে ফেলে। সাইদার ব্যাপারটাও ঠিক তেমনি।
সিকদার অনির বয়স আটত্রিশ। নুতন এই ক্যারিয়ার জবটায় যোগদান করার পর থেকেই সাইদার সাথে পরিচয়। সাইদা, সদ্য ইউনিভার্সিটি পাশ করা, দীর্ঘাংগী স্বাস্থ্যবতী একটা মেয়ে। মুখটা ডিম্বাকার, ফর্সা। চোখ দুটি উজ্জল! ঠোটগুলো ঈষৎ ফোলা ফোলা। বক্ষ দুটি সুডৌলই বটে, তবে আধুনিক পোষাকে আরো বেশী সুডৌল করেই প্রকাশিত করে রাখে সব সময়।
সেদিন সাইদার পরনে সাধারন লাল রল এর হাত কাটা একটা কামিজ। কামিজের তলায়, তার বক্ষের আয়তন স্পস্টই অনুমান করা যায়। লাঞ্চের সময় সিকদার অনির মন খারাপ দেখেই বললো, চলো, ছাদে গিয়ে একটু গলপো করি।
সাইদার সাথে হাসি ঠাট্টার গলপো প্রায়ি করে সিকদার অনি। কিন্তু এমন একটা সময়ে, সিকদার অনির মাথার ভেতরটা শীলাকে নিয়েই অস্থির। খোশ গলপো করার মতো কোন ম্যুড নেই তার। তারপরও, সাইদার কথাতেই ছাদের দিকে এগিয়ে গেলো।
সাইদা ছাদের রেলিং এ ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে, বুকটা উঁচু করে ধরেই বললো, তোমার কি হয়েছে বলো তো?
সিকদার অনি অন্যমনস্কতার ভাব নিয়েই বললো, কি হবে আবার?
সাইদা বললো, কিছু একটা হয়েছে, তা বুঝতে পারছি। বিয়ে টা ভেঙে গেলো বলে?
সিকদার অনি জোড় করেই ঠোটে হাসি টেনে বললো, ধ্যাৎ, কি যে বলো! বিয়ে ভেঙে যাওয়াতে আমি মন খারাপ করবো? তোমার জন্যেই তো বিয়ের পোকাটা মাথা থেকে সরিয়েছি!
সাইদা দেহটাকে নাড়িয়ে, তার সুডৌল বক্ষ যুগল নাড়িয়েই বললো, আহারে আমার, সোনার চাঁদা পিতলা ঘুঘু! আমার জন্যে উনি বিয়ের চিন্তা মাথা থেকে সরিয়েছেন। তা বলি, কখনো একবার গলপো করার জন্যেও তো ডাকলে না।
সিকদার অনি অপ্রস্তুত হয়েই বললো, আমার সাথে তোমার এতটা বয়সের ব্যাবধান! আসলে, কিছুতেই সহজ পারিনা তোমার সামনে!
সাইদা গম্ভীর হয়েই সিকদার অনির মাথার চুলগুলো গভীর ভাবে পর্য্যবেক্ষণ করে বললো, বুড়ু হয়ে গেছো নাকি? কই, মাথার চুল তো একটাও পাঁকে নি!
বিয়ের আসর বসার আগেই, ঘর পালিয়ে সিকদার অনির ছোট্ট বাসাটাতে এসে, নুতন উদ্যমেই জীবন শুরু করলো শীলা। শীলা শুধু আর্ট কিংবা ডিজাইন করাতেই দক্ষ নয়, ঘর গোছালীর কাজেও বেশ দক্ষ। সিকদার অনি অফিসে যাবার পর, নিজ পরিকল্পনাতেই, ছোট্ট ঘরটাকে নুতন করে সাজাতে থাকলো। তবে, শীলার শুধু একটাই দোষ! পোশাকের ব্যাপারে সত্যিই সে একটু অসচেতন।
নিজ ঘরে কেউ ন্যাংটু থাকলেই বা কি? কিন্তু আশে পাশের মানুষগুলোর নজর তো আর গাধার চোখ নয়। খোলা জানালায়, যে কারোরই দৈবাৎ চোখ পরার কথা।
নাহ, খুব একটা খারাপ পোষাক পরে শীলা ঘর গোছালীর কাজ গুলো করছিলো না। সকালে ঘুম থেকে উঠে, বুকের উপর ব্রাটাও যেমনি পরেছিলো, সিলভার কালারের নুতন একটা প্যান্টিও বদলে নিলো। বুক খোলা সাদা জ্যাকেটটা বদলে জলপাই রং এর নিজ হাতে বানানো ঢোলা পাঞ্জাবী শার্ট ধরনেরই পোষাকটা পরে নুতন উদ্যমে কাজ শুরু করেছিলো। নিম্নাংগে প্যান্টিটা ছাড়া অন্য কোন পোষাক না থাকলেও, শার্টের আড়ালে প্যান্টিটা ঢাকাই ছিলো। তবে, ফর্সা ফোলা পোলা উরু দুটিই বুঝি উদোম ছিলো।
মাঝে মাঝে মেয়েদের ফর্সা ফোলা উরুও বুঝি ছেলেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। শোভনের নজরটা হঠাৎই এই জানালায় পরেছিলো। তার পর থেকেই তার মাথাটা শুধু খারাপ হতে থাকলো।
শোভন পাশের বাসাতেই থাকে। ইউনিভার্সিটি সেকেণ্ড ইয়ারে পরে। সে আর ইউনিভার্সিটিতে গেলো না। বাসার সামনেই পায়চারী করে করে, সিকদার অনির এক কক্ষের বাসাটার জানালাতেই উঁকি দিতে থাকলো থেকে থেকে।
মানুষের চোখ গুলোও বুঝি চুম্বকের মতোই কাজ করে। ঘর গোছালীর কাজের ফাঁকেই, শীলারও মনে হলো, কে যেনো বার বার জানালায় উঁকি দিচ্ছে। সে জানালার ধারেই এগিয়ে গেলো। বাইরে কাউকেই চোখে পরলো না। তবে, খানিকটা দূরে, বিশ একুশ বছরের এক যুবককেই চোখে পরলো। অন্যমনস্ক হয়েই, অর্থহীনভাবে দাঁড়িয়ে আছে। শীলা কৌতুহলী হয়েই ডাকলো, এই শোনো!
যুবকটি খুব আগ্রহ করেই এগিয়ে এলো। বললো, আমাকে ডাকছেন?
শীলা বললো, এখানে আশেপাশে আর কি কেউ আছে?
যুবকটি লাজুকতার গলাতেই বললো, জী না!
শীলা চোখ গোল গোল করেই বললো, জানালাতে উঁকি দিয়ে দিয়ে কি দেখছিলে?
যুবকটি মাতা চুলকাতে চুলকাতে, আমতা আমতাই করতে থাকলো। শীলা দরদী মেয়ের মতোই, তার পরনের জলপাই রং এর শার্ট এর বোতামগুলো খুলতে থাকলো। তারপর, পাতলা কাপরের ব্রা টাও বক্ষ যুগলের উপর থেকে সরিয়ে নিয়ে, বৃহৎ বক্ষ দুটি উদোম করেই বললো, দেখবে?
যুবকটি হঠাৎই লজ্জায় কাতর হয়ে পরলো। শীলা তার বক্ষ ঢেকেই বললো, কি নাম তোমার?
যুবকটি বললো, শোভন!
শীলা মায়াবী গলাতেই বললো, এমন লুকিয়ে লুকিয়ে কাউকে দেখতে নেই। যে কাজে যাচ্ছিলে যাও।
লাজুকতার একটা ভাব করে, শোভন চলেই যেতে চাইছিলো। অথচ, হঠাৎই কেনো যেনো খুব মায়া পরে গেলো শীলার শোভনের উপর। সে আবারো ডাকলো, এই শোনো!
শোভন ঘুরে দাঁড়িয়ে, কৃতজ্ঞতার চোখেই বললো, জী!
শীলা বললো, ওদিক দিয়ে, ভেতরে এসো।
শোভন মিশ্র এক ভাবনার চেহারা করেই, দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। শীলা দরজা খুলে দিয়ে বললো, এসো, ভেতরে এসো।
শোভন খুব ভয়ে ভয়েই ভেতরে ঢুকলো। শীলা অভয় দিয়েই বললো, এমন ভেজা বিড়াল হয়ে আছো কেনো? ভয় করছে?
শোভন অপ্রস্তুত ভংগীতেই বললো, না, আপনাকে কখনো দেখিনি তো! তাই কৌতুহলী হয়েই জানালায় চুপি দিয়েছিলাম।
শীলা বললো, বেশীদিন দেখবেও না। কয় দিনের জন্যেই বেড়াতে এসেছি।
শীলা খানিকটা থেমে বললো, বেড়াতে এসেছি বললে ভুল হবে। আসলে ঘর পালিয়েছি।
শোভন ফ্যাল ফ্যাল করেই শুধু তাঁকিয়ে রইলো শীলার দিকে। শীলা বললো, মেয়েরা ঘর পালায় প্রেম করে, প্রেমিকের হাত ধরে। আমি পালিয়েছি প্রেম না করে, বিয়ে করার ভয়ে। কিন্তু, পালিয়ে এসে আমার মাথাটাই খারাপ হয়ে গেছে। আসার পথেও বাসে বসে অনেক উল্টা পাল্টা ভেবেছি। এমনও ভেবেছি, আমার জীবনে প্রেম আসেনি কেনো! কারনটা তোমাকে এখন বলবো না। তুমি যদি আমার সাথে প্রেম করতে চাও, তাহলেই বলবো।
শোভন বোকার মতোই দাঁড়িয়ে রইলো। কি বলবে কিছুই বুঝতে পারলো না। শীলা মুচকি হেসেই বললো, ভালো কথা! কারো সাথে প্রেম ট্রেম করছো না তো? না করলেই না কথা!
শোভন খানিকটা সাহসী হয়েই বললো, কি যে বলেন! ইউনিভার্সিটি সেকেণ্ড ইয়ারে পড়ি। অথচ, কোন মেয়েই পাত্তা দিলো না। আপনার মতো অমন সুন্দরী মেয়ে কাছে পেলে তো, চোখ বন্ধ করেই প্রেম করা শুরু করতাম।
শীলা তার পরনের জলপাই রং এর শার্টটা বুকের উপর থেকে সরিয়ে, বক্ষ যুগল প্রদর্শন করে, মিনতি ভরা গলাতেই বললো, তাহলে প্রেম করছো!
শোভন হঠাৎই হতভম্ভ হয়ে বললো, আপা, আমি আপনাকে চিনিনা, জানিনা!
শীলা বললো, চিনোনা, তাতে কি হয়েছে? এখন থেকে চিনবে!
শোভন আমতা আমতা করেই বললো, আপা, আপনি কি অসুস্থ?
শীলা পুনরায় শার্টে তার বুক ঢেকে রাগ করা গলাতেই বললো, বুঝেছি, মুরদ নেই! যাও, তোমাকে আমার সাথে প্রেম করতে হবে না।
শোভন এবার বেশ সহজ হয়েই এলো। বললো, না মানে, সুন্দরী কোন মেয়ের সাথে কখনো কথা বলিনি তো! তাই, কেমন করে কথা বলতে হয়, বুঝে উঠতে পারিনি।
শীলা খানিকটা ঠাণ্ডা গলাতেই বললো, তুমি ঠিকই বলেছো। ঘর পালিয়ে, আমি আসলেই খুব অসুস্থ হয়ে পরেছি! আমার বোধ হয় বিয়েটা করা উচিৎই ছিলো। এতক্ষণে বোধ হয় ছেলেটা আমাদের বাসায় খুব আশা করেই বসে আছে, আমাকে একটিবার দেখার জন্যে! কি দেখতো আমার? শুধু তো চেহারাটাই। একটা মেয়ের শুধুমাত্র চেহারা দেখেই পছন্দ করে বিয়ে করে ফেলবে, এটা কেমন কথা! আমি তোমাকে সব কিছুই তো দেখালাম, পছন্দ হয় আমাকে?
শোভন রসিকতা করেই বললো, সব কিন্তু দেখান নি। ওই প্যান্টির তলায় কি আছে, তা কিন্তু এখনো দেখা হয়নি!
শীলা মুচকি মুচকিই হাসলো। বললো, দুষ্টু ছেলে! প্যান্টির তলায় কি থাকে জানো?
শোভন বললো, কি করে জানবো! কখনো দেখিনি তো!
শীলা বললো, দুর্গন্ধ! দুর্গন্ধ! প্রস্রবের গন্ধ! মিনস এর গন্ধ! এটা সেটা! মেয়েদের প্যান্টির তলায় হলো, যত্তসব ময়লা জায়গা!
লাজুক ছেলেগুলো, আড়াল থেকে সুন্দরী মেয়েদের গোপন দেহ দেখতে যতটা সাহসী থাকে, সামনা সামনি এলে বোকাই হয়ে যায়। পেটে বোমা মারলেও একটা কথা বেড় হয় না। অথচ, শীলা এমন করেই শোভনের সাথে আলাপ জমিয়ে তুললো যে, শোভনও খুব অল্প সময়েই সহজ হয়ে পরলো। শীলা তার পরনের জলপাই রং এর শার্টটা পুরুপুরিই খুলে ফেললো। অতঃপর, পরনের পাতলা ব্রাটাও খুলতে খুলতে বললো, তোমার নাম কি যে বললে? ওহ, মনে পরেছে, শোভন। জানো? আমার বয়স এখন চব্বিশ! একটা মেয়ের জীবন থেকে চব্বিশটি বসন্ত কেটে গেলো, তার নগ্ন দেহটা জানা শুনা কেউ দেখলোনা। অথচ, বিয়ের পর রাতারাতি একজন অজানা, অচেনা মানুষ হঠাৎ করেই দেখতে শুরু করলো, ব্যাপারটা তোমার কাছে কেমন মনে হয়?
শীলার আচরনে, শোভন খুব ভ্যাবাচ্যাকাই খেয়ে গেলো। পাগল টাগল নাকি এই মেয়ে? এমন করে নিজের দেহকে নগ্ন করে কেউ দেখায় নাকি? নিজেকে সৌভাগ্যবানও যেমনি মনে হচ্ছিলো, আবার ভাবতেও পারলো না। সে অপ্রস্তুত হয়েই বললো, আপা, আমাকে ইউনিভার্সিটিতে যেতে হবে, এখন আসি?
শুধুমাত্র প্যান্টিটা পরনে রেখে, শীলা মেঝের উপর শান্ত হয়েই বসলো। তারপর বললো, তোমাদের ছেলেদের নিয়ে হলো, এই এক সমস্যা। কোন মেয়ে দাম দেখিয়ে দূরে দূরে থাকলেই, তাদের ভালোবাসা পাবার জন্যে ব্যাকুল হয়ে থাকো। আর কাছে এসে ধরা দিলে, পাত্তাই দিতে চাওনা। আমি বলেছিলাম না, আমার জীবনে কখনো প্রেম আসেনি! তার কারন হলো এটিই। সব সময় নিজের উপর একটা আত্মবিশ্বাসই ছিলো। যে কোন ছেলেই আমাকে ভালোবাসবে। তাই কাউকেই পাত্তা দিইনি। দূর থেকে শুধু মজাটাই নিয়েছি।
শীলা হাঁটুর উপর ভর করে, দেহটাকে খানিকটা ঝুঁকিয়ে, বৃহৎ বক্ষ দুটিকে ঝুলিয়ে মন খারাপ করেই বললো, আমাকে খুব খারাপ মেয়ে বলেই মনে হচ্ছে, তাই না?
শোভন বেশ সাহসীই হয়ে উঠলো। বললো, না আপা, তা মনে হবে কেনো? বিয়ের পর অজানা, অচেনা একটা ছেলেকে কাছে পেতে হবে বলে, বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছিলেন, অথচ আমাকে সব দেখাতে চাইছেন! আমাকেও তো আপনি ভালো করে চেনেন না!
শীলা বললো, ওহ, সেই কথা! তোমাকে কেনো দেখাতে ইচ্ছে হলো, তার কারন তো সহজ! চুপি চুপি জানালা দিয়ে আমাকে দেখছিলে বলে! আর যেনো আমার প্রতি তোমার কোন কৌতুহল না থাকে, তাই একটু মজা করলাম। কারন, ওরকম কারো জানালায় চুপি দেয়া ঠিক নয়। তুমি যে ওভাবে চুপি দিচ্ছিলে, তা হয়তো আশে পাশে আরো কেউও তোমাকে দেখছিলো। সবাই তখন ভাবতো, না জানি কি! এতে করে অন্যদেরও কৌতুহলও বাড়তো। সবাই সেই কৌতুহল থেকেই এই জানালাতে একবার করে চুপি দেয়ার চেষ্টা করতো। সেটা খুবই বিপদ জনক! কি বলো তুমি? এভাবে তোমার কৌতূহলটা নষ্ট করে ঠিক করিনি?
শীলার কথায় শোভন যেনো বোকাই বনে গেলো। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো শুধু।
শোভন অপরাধী একটা ভাব নিয়েই বললো, স্যরি আপা। আসলে, সিকদার ভাই আমাকে খুবই স্নেহ করে। উনি একাই থাকতো জানতাম। ঘরের ভেতর হঠাৎ আপনাকে দেখেই কৌতুহলটা হয়েছিলো। আর ভুল হবে না। আমি তাহলে এখন আসি!
শীলা বললো, কেনো, প্যান্টির তলায় কি আছে দেখবে না?
এই বলে শীলা তার পরনের প্যান্টিটাও খুলে ফেললো। শীলাকে পুরুপুরি নগ্ন দেখে, শোভন যেনো রীতীমতো ঘামতে থাকলো। শুধু তাই নয়, তার বুকটাও কাঁপতে থাকলো ভয়ে। সে বললো, আপা, আজকে সব দেখে ফেললে, অন্যদিন দেখবো কি? নাকি আমাকে আর না আসার জন্যেই এমন করে শাস্তি দিচ্ছেন।
শীলা মন খারাপ করেই মেঝেতে উবু হয়ে শুয়ে বললো, নাহ, মাঝে মাঝে মজা করতে গিয়ে, নিজেকেই কষ্ট পেতে হয়, নিসংগ হয়ে যেতে হয়। তুমি ইউনিভার্সিটি যেতে চাইছিলে, যাও। আবার আসবে কিন্তু! অমন জানালা দিয়ে চুপি নয়, সরাসরি দরজা দিয়ে, কেমন?
শোভন বললো, জী আপা। আসি তাহলে।
ইউনিভার্সিটি যাবার পথে শোভনের মাথার ভেতরটাও এলো মেলো হয়ে যেতে থাকলো। সুন্দরী একটি মেয়ের সাথে প্রেম করার শখ, তারও কম ছিলো না। তাই বলে, এভাবে? বয়সে বড় একটি মেয়ের সাথে? অথচ, কেনো যেনো তার মনটা ছটফট করতে থাকলো শীলার জন্যেই।
অফিসের ছুটির সময়, জমানো কাজগুলো একটু তাড়াহুড়া করেই শেষ করতে চাইছিলো সিকদার অনি। একা বাসায় শীলা কি করছে কে জানে? খাবার দাবারও শীলার কোনটা পছন্দ, কোনটা আপছন্দ, তাও জানা হলো না। বাজারটাও শীলাকে জিজ্ঞাসা করেই করে নেবে বলে ভাবছিলো। অথচ, হঠাৎই তার ডেস্কে এসে সাইদা বললো, চলো, বাসায় যাবে!
সিকদার অনি চোখ কপালে তুলেই বললো, কার বাসায়?
সাইদা বললো, কার বাসায় আবার! আমাদের বাসায়! তুমি ব্যাচেলর মানুষ! তোমার বাসায় আমি যাবো নাকি?
সিকদার অনি বললো, আজ না! বাসায় অনেক কাজ!

সাইদা রাগ করার ভান করেই বললো, যেভাবে বলছো, মনে তো হয় বাসায় তিন চারটা বউ রেখে এসেছো। বাসায় গিয়ে কি করবে? একা একা থাকো, কি খাও না খাও কে জানে? বসায় চলো, গলপো গুজব করবো, রান্না করবো, তারপর খেয়ে যাবে।
সিকদার অনি বলতে চাইলো, না মানে, ঘরে?
শীলার কথা বলতে গিয়েও কেনো যেনো চেপে গেলো সে। তা ছাড়া সাইদার নরোম মাংসের দেহটাও তাকে খুব আকর্ষন করে। তার পাশে বসে খানিকটা ক্ষণ গলপো গুজব করলে, মনটা রোমাঞ্চতাতেই ভরা থাকে। সে বললো, ঠিক আছে, চলো।
সাইদার চোখকে ফাঁকি দিয়েই, আড়ালে গিয়ে শীলাকে একটা টেলিফোন করে জানিয়ে দিলো সিকদার অনি, ফিরতে দেরী হবে। রাতের খাবারটা যেনো একাকীই খেয়ে নেয়।
সাইদাদের বাসায় বেশ কয়েকবারই এসেছে সিকদার অনি। কল্যান নগরের দিকে, ছোট্ট টিনের চালার একটা বাসা। বাসায় বুড়ু বাবা মা, বড় ভাই বিদেশে থাকে। সাইদার মা বাবাও তাকে একটু বাড়তি স্নেহই করে। বাড়ীতে বিয়ের উপযুক্ত এমন মেয়ে থাকলে বোধ হয়, সব মা বাবারাই এমন করে থাকে। ছেলের বয়সের কথা ভাবে না।
সাইদাদের বাসায় এসে পৌঁছুলো সন্ধ্যার কিছু আগেই। ক্লান্ত দেহের সাইদা সিকদার অনিকে বসার ঘরে বসতে বলেই বললো, আমি পোষাকটা পাল্টে আসি। তুমি বসো। হাতমুখ ধুতে চাইলে, ওপাশে বাথরুম আছে, ধুয়ে নিতে পারো।
সাইদা ফিরে এলো কিছুক্ষণ পর ঘরোয়া পোশাকেই। উর্ধাংগে নীল রং এর পাতলা সেমিজের মতোই একটা পোষাক। সেই সাথে কালো রং এর টাইটস। সেমিজের তলায় ব্রা এর অস্তিত্ব নেই বলে, বৃহৎ সুডৌল স্তন দুটি চোখ মেলেই তাঁকিয়ে আছে সেমিজের তলা থেকে। বৃন্তগুলো সেমিজের জমিনেই ভেসে উঠেছে। স্তন দুটি ভারে বেশ খানিকটা ঝুলে পরলেও মন্দ লাগে না। বরং আরো বেশী যৌন উত্তেজনাই বাড়ায়। সিকদার অনির চোখের সামনে, সাইদার এমন তর ঘরোয়া পোশাক নুতন কিছু নয়। সে নয়ন ভরেই দেখতে থাকলো সাইদাকে। সাইদার সুদৃশ্য বক্ষ, আর তার আয়তন, গড়ন!
সাইদা তার সামনে দাঁড়িয়ে বললো, কি খাবে? তুমি যা খেতে চাইবে, তাই রান্না করবো।
সিকদার অনি বিনয়ের সাথেই বললো, তেমন কোন চয়েস নেই। ডাল ভাত হলেও যথেস্ট! তবে, একটু তাড়াতাড়িই ফিরতে হবে আমাকে।
সাইদা বললো, ওসব তাড়াতাড়ি কথাটা আমার সামনে কক্ষনো বলবে না। এসেছো, ধীরে সুস্থে বসো। আমি রান্না রেডী করছি।
সাইদার মা বাবা দুজনেরই শরীরটা ভেঙে পরেছে। নিজেদের শোবার ঘরে শুয়ে শুয়েই সময় কাটে তাদের। সাইদার সাথে গলপো গুজবটা জমে উঠলো, খাবার দাবার এর পরই, সাইদার নিজের ঘরে। গলপো গুজবের চাইতে যেনো, চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে, সেমিজের তলা থেকে বারী দুটি বক্ষ উঁচিয়ে রেখে সিকদার অনির দেহটাকে শুধু উত্তপ্তই করতে থাকলো।
নারীর ষোল কলা গুলো ভালোই জানে সিকদার অনি। এমন পোষাকে, এমন ভঙীতে ছেলেদের মাথা খারাপ কারনই হলো, আরো বেশী কাছে পাওয়া।
সিকদার অনির মনটা এমনিতেই খারাপ। কাছাকাছি সময়ে অনেকগুলো অঘটনই ঘটে গিয়েছিলো। দীর্ঘদিন এর চাকুরীটা হারিয়ে, সবে মাত্র নুতন চাকুরীটা পেয়ে, কিছুটা স্থিতিশীলতা এনেছিলো জীবনে। তারপরই বিয়ের প্রস্তাবটা নিয়ে এসেছিলো এক ঘটক। তারই কলিগের মেয়ে রেখার সাথে। রেখা যেমনি খুব সুন্দরী ছিলো, ঠিক তেমনি ভদ্রও ছিলো। সেটাও হলো না বিভিন্ন কারনে। ব্যাপারটা অফিসের সবাই যেমনি জানে, সাইদাও জানে। বিয়ে সংক্রান্ত এমন একটা ব্যাপার, জানাজনির পরিবেশে সাইদার সাথে ভালোবাসা বিনিময় করাটাও খুব দুস্কর হয়ে পরেছিলো। তার উপর, হঠাৎ ঘর পালিয়ে শীলা এসে আরো একটা ঝামেলা বাঁধিয়ে দিলো। পৃথিবীতে তো কোন কিছুই আর গোপন থাকে না। এত কাছাকাছি থাকলে, শীলার সাথে তার সত্যিকার এর সম্পর্কটা যে কোন মূহুর্তে ফাঁস হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার নয়। তখন শুধু ভালোবাসা নয়, সামাজিক সব মর্যাদা হারিয়ে, তাকেও পালিয়ে বেড়াতে হবে!
সাইদা মিষ্টি হেসেই বললো, কি ভাবছো?
সাইদার গলার শব্দেই সিকদার অনি সম্ভিত ফিরে পেলো। বললো, না কিছু না।
সাইদা বললো, আজ আমাদের বাসায় থেকে যাও। সারা রাত গলপো করবো।
সিকদার অনি বললো, তাহলে তো ভালোই হতো। কিন্তু, সত্যিই বাসায় খুব জরুরী কাজ পরে আছে!
সাইদা বললো, তোমার কি হয়েছে বলো তো? আমাকে কি এতই অপছন্দ তোমার?
সিকদার অনি হাসলো। বললো, তোমাকে অপছন্দ হবার কোন কারন কি থাকতে পারে? যে কোন ছেলেই চোখ বন্ধ করেই পছন্দ করার কথা!
সাইদা রাগ করার ভান করেই বললো, তার মানে বুঝাতে চাইছো, আমি এতি বিশ্রী যে, কেউ আমার দিকে তাঁকাতে চায় না। চোখে পরলে, চোখ বন্ধ করে নেবে?
সিকদার অনি বললো, তুমি সব সময় এত উল্টু বুঝো কেনো বলো তো? বললাম, তোমাকে কেউ একবার দেখলেই, চোখ বন্ধ করে সিদ্বান্ত নিয়ে নেবে, ভালোবাসার পাত্রী করে নিতে!
সাইদা চোখ কপালে তুলে বললো, তো! তোমার সমস্যাটা কোথায়? তুমি চোখ বন্ধ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারছো না কেনো?
সিকদার অনি বললো, জানোই তো! মাহবুব সাহেবের মেয়ের সাথে, আমার বিয়ের আলাপটা অনেক দূর গড়িয়ে, হঠাৎই ভেঙে গেলো। তাই তোমার সামনে কখনো সহজ হতে পারিনা।
সাইদা বললো, তুমি আসলেই বোকা! যা ঘটে গেছে, তা নিয়ে ভাবলে চলে? সামনে এগুনোই তো মানুষের কাজ!
পৃথিবীটা এগিয়ে চলছে কিছু যুক্তি তর্কের উপর ভিত্তই করেই। সেসব যুক্তি তর্ককে মেনে নিয়ে, মানুষ অনেক বড় বড় কষ্টকেও ভুলে থাকতে পারে। সামাজিক অপমানগুলোও কিছু যুক্তি তর্কের স্বার্থেই ভুলে গিয়ে, মনটাকে নুতন করেই গড়ে তুলে! একই সমাজে স্বাভাবিক জীবন যাপনও করে! অধিকাংশ মানুষ ঘৃণায় চোখ সরিয়ে নিলেও, ভালোবাসা, মায়া মমতা এসব উপহার দেবার মতো কিছু মানুষও বুঝি থাকে। সিকদার অনির জন্যে, সাইদা ঠিক তেমনি একটি মেয়ে। সিকদার অনি মনের মাঝে নুতন করেই জায়গা করে দিতে থাকলো সাইদাকে। সে হঠাৎই বললো, আই লাভ ইউ, সাইদা!
সাইদার মনটা হঠাৎই যেনো আনন্দে ভরপুর হয়ে উঠলো। সে চেয়ারে নড়ে চড়ে বসে, ডান বাহুটা চেয়ারের পিঠে ঠেকিয়ে, চোখ দুটি সরু করেই বললো, আমাকে খুশী করার জন্যে বলছো না তো?
সিকদার অনি সহজভাবেই বললো, হ্যা, খুশী করার জন্যেই তো বললাম, খুশী হওনি?
সাইদা বললো, হ্যা খুশী হলাম। তবে, মন থেকে বলেছো কিনা, সেটাই জানতে চেয়েছিলাম।
সিকদার অনি বললো, আমার আবার মন! ঐসব কখন, কোন কালে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে, তা নিজেও হিসাব করে বলতে পারবো না।
সাইদা হঠাৎই চোখ বন্ধ করে মুখটা বাড়িয়ে ধরলো। সিকদার অনি অবাক হয়েই বললো, কি ব্যাপার? এমন চোখ বন্ধ করলে কেনো?
সাইদা পুনরায় চোখ খুলে বললো, ধ্যাৎ, তুমি সত্যিই একটা বেরসিক! যদি মন থেকেই ভালোবাসতে, তাহলে এতক্ষণে ভালোবাসার চুমুটা পেয়ে যেতাম।
আসলে, মাথার ভেতর বিভিন্ন ঝামেলার কারনে, সিকদার অনির মাথাটা ঠিক মতো কাজ করছিলো না। সে বললো, স্যরি। ঠিক আছে, আবার চোখ বন্ধ করো।
সাইদা রাগ করেই বললো, না!
সিকদার অনি বললো, কেনো?
সাইদা বললো, আমি কি জোড় করে, বলে বলে তোমার চুমু আদায় করে নেবো নাকি?
সিকদার অনি বললাো, আহা, এতে রাগ করার কি আছে? প্রেমের ব্যাপারে ছেলেরা একটু বোকাই থাকে। মেয়েরা শিখিয়ে না দিলে, অনেকেই ঠিকমতো এগুতে পারে না।
সাইদা মুখ বাঁকিয়েই বললো, আহারে, উনাকে আবার প্রেমও শেখাতে হবে! ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে জানে না উনি!
সিকদার অনির মাথার ভেতর হঠাৎই জেদ চাপলো। সে এগিয়ে গিয়ে, হঠাৎই সাইদার গোলাপী সরু ঠোট যুগল নিজের ঠোটের ভেতর পুরে নিয়ে চুষতে থাকলো পাগলের মতো!
সাইদা চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে, তার নরোম মাংসের দেহটা সিকদার অনির বুকের মাঝেই চেপে ধরলো। ফিস ফিস করেই বললো, আই লাভ ইউ টু, অনি!
চুমুই বুঝি ভালোবাসা শুরু করার দ্বার বিশেষ। নর নারী একবার চুমুতে আবদ্ধ হয়ে পরলে, তখন বুঝি আর হুশ থাকে না। সাইদাও তার মুখটা বাড়িয়ে, সিকদার অনির ঠোটে চুমু উপহার করলো। সিকদার অনিও তার জিভটা সাইদার ঠোট গলিয়ে, তার মুখের ভেতরই ঢুকিয়ে নিলো। তারপর, সাইদার ভেজা জিভটার স্বাদই নিতে থাকলো, পাগলের মতো। সেই সাথে দেহটাও উত্তপ্ত হতে থাকলো আরো কিছু পাবার আশায়। সে সাইদার দেহটা ঈষৎ ঠেলে ঠেলে বিছানার দিকেই এগুতে থাকলো।
সিকদার অনির হাত দুটিও এগিয়ে এলো, সাইদার পরনের নীল সেমিজের মতো শার্টটার বোতাম গুলোর দিকে। পট পট করে কয়েকটা বোতাম খুলেও ফেললো। উপরের বোতামটা খুলতে যেতেই, সাইদা হঠাৎই সিকদার অনিকে ধাক্কা মেরে, তার বুকের উপর থেকে সরিয়ে দিলো। বললো, এই যে ভদ্রলোক, তোমার মতলব তো খুব ভালো ঠেকছে না!
সিকদার অনি খুলাখুলিই বললো, চায়ের সাথে টা যদি না থাকে, তাহলে কি ভালো লাগে?
সাইদার মনেও কামনার আগুন ধাউ ধাউ করছিলো। দেহটাও বাসনায় ভরপুর ছিলো। তারপরও সে ছুটে পালিয়ে যাবার ভাব করেই, ওপাশের সোফাটাতেই হেলান দিয়ে বসে, খিল খিল করে হাসতে থাকলো। বললো, একটু আগে তো বললে, তোমাকে প্রেম শেখাতে। এখন তো দেখছি, তুমিই আমাকে প্রেম শেখানো শুরু করেছো!
সেমিজের উপরের বোতামটা ছাড়া অন্য গুলো খুলে নেয়ায়, সাইদার লোভনীয় স্তন দুটির অধিকাংশই উন্মুক্ত হয়ে পরেছিলো। ঈষৎ ঝুলে পরা সাইদার সুডৌল বক্ষ যুগল সিকদার অনির মাথাটাই খারাপ করে দিতে থাকলো। সে লোভনীয় দৃষ্টিতেই সেদিকে তাঁকিয়ে থেকে বললো, চোখের সামনে এমন লোভনীয় জিনিষ থাকলে, এমনিতেই প্রেম শেখা হয়ে যায়।
এই বলে সাইদার দিকে এগিয়ে গিয়ে, তার পরনের টাইটসটাই টেনে খুলতে থাকলো। সাইদা খিল খিল করেই হাসতে থাকলো। বলতে থাকলো, এই করো কি? করো কি? পাশের ঘরে মা বাবা! টের পেয়ে যাবে তো!
সিকদার অনি বললো, কিচ্ছু হবে না! দরজাটা বন্ধ করে দেবো?
সাইদা ফিশ ফিশ করেই বললো, তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে! তাহলে আরো বেশী সন্দেহ করবে। প্লীজ আজকে না!
সিকদার অনির মাথাটা তখন উন্মাদই হয়েছিলো। গতকাল শীলাও তার লোভনীয় নগ্ন দেহটা প্রদর্শন করে করে, মাথার অর্ধেকটা খারাপ করে রেখেছিলো। শীলার পাশে শুয়ে, গত রাতে ঘুমটাও ভালো হয়নি। চোখের সামনে সাইদার এমন লোভনীয় নরোম মাংসে পরিপূর্ন দেহটা রেখে, কোন রকমেরই শাসন মানতে পারলো না। সে সাইদার পরনের টাইটসটা টেনে পুরুপুরিই খুলে নিলো।
সাইদার পরনে কালো পাতলা কাপরের প্যান্টি। তার ভেতর থেকেও, ঘন কালো কেশগুলো ভিন্ন আবেশ নিয়েই চোখে পরছিলো। সাইদা দু হাতে তার নিম্নাংগ ঢাকার চেষ্টা করে, খিল খিল হাসিতেই ফেটে পরলো। বললো, তুমি কি সত্যি সত্যিই প্রেম শেখাবে নাকি?
সিকদার অনি বললো, হুম! এই বলে তার প্যান্টিটাও টেনে খুলে নিতে চাইলো।
সাইদা লাজুকতার ভাব করেই বললো, থামো থামো, আমি খুলছি!
সিকদার অনি খুব খুশী হয়েই বললো, ঠিক আছে খুলো! খুবই দেখতে ইচ্ছে করছে!
সাইদা লাজুকতার ভাব করেই, প্যান্টির দু পাশটা টেনে নামানোর ভান করলো ঠিকই, তবে খুলতে চাইলো না। বললো, আমার খুব লজ্জা করছে!
সিকদার অনি বললো, লজ্জা তো করবেই। লজ্জাই তো নারীর ভূষন!
সাইদা বললো, আজকে না! অন্যদিন!
সাইদার আহলাদী কথা কিছুতেই ভালো লাগলো না সিকদার অনির। পৃথিবীতে অনেক কাজই অন্যদিনের জন্যে জমিয়ে রাখা যায়। তবে, যৌনতার মতো কাজগুলো জমিয়ে রাখলে, মনের মাঝে অতৃপ্তিই বিরাজ করে। তুষের আগুনের মতোই ঘেষিয়ে ঘেষিয়েই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে তুলে। সিকদার অনি বললো, অন্যদিন এর টা অন্য দিন! আজকেরটা আজকে!
সাইদা সোফার উপর চিৎ হয়ে শুয়ে পরে, পা দুটি ভাজ করে, ফোলা ফোলা উরু দুটিতে নিম্নাংগটা চেপে রেখে বললো, তাহলে রাতে এখানে থেকে যাও। মা বাবা ঘুমিয়ে গেলে, তারপর!
সিকদার অনি কি করবে কিছুই বুঝতে পারলো না। নিজ বাসায় শীলা না থাকলে হয়তো, আনন্দে আনন্দেই এমন একটা প্রস্তাবে রাজী হয়ে যেতো। অথচ, শীলার মনে যেনো কোন রকমের সন্দেহের দানা না বাঁধে, সেই কথাই ভাবলো সে। বললো, স্যরি, আজকে সত্যিই একটা জরুরী কাজ আছে বাসায়। প্লীজ, একটু দেখাও না, তোমার দামী খনিটা!
সিকদার অনির কথায় সাইদা মুগ্ধ হলো ঠিকই! অথচ, বললো, সব দেবো! প্লীজ! এখন না!
সিকদার অনি ঘড়িতে তাঁকিয়ে দেখলো, রাত দশটা। বললো, তাহলে আজকে আসি!
নারীর ষোল কলার মাঝে, এক কলাও সিকদার অনি জানে না। সাইদা সহজ গলাতেই বললো, তাহলে চলেই যাবে? অন্যদিন আসবে কিন্তু! এমন যাই যাই করে, ছটফট করতে পারবে না কিন্তু!
এক ধরনের অতৃপ্তি নিয়েই সিকদার অনি বেড়োলো সাইদাদের বাসা থেকে। এগুতে থাকলো বাস স্ট্যাণ্ডের দিকেই অতৃপ্ত একটা মন নিয়ে।
বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক রাতই হলো সিকদার অনির। অতৃপ্ত, অস্থির, বিধ্বস্থ একটা চেহারা তার। শীলা বিছানায় উঠে বসে ঘুমোনোরই উদ্যোগ করতে চাইলো। সিকদার অনি কোন রকম কথা না বলে, কম্পিউটারটাই অন করলো। শীলা বললো, মামা, আমি এসে কি তোমার ঝামেলা বাড়িয়ে দিলাম?
সিকদার অনি শীলার দিকে সরাসরিই তাঁকালো। স্যাম্পু করা ঝরঝরে চুলগুলো চমৎকার করেই আঁচড়ে চেহারাটাকে খুব ফ্রেশ করে রেখেছে। সাদা সবুজের ডোরা কাটা হাতকাটা জামাটাতেও চমৎকার মানিয়েছে তাকে। সিকদার অনি বললো, কেনো মামণি? দেরী করে ফিরলাম বলে? আসলে একা মানুষ! কোথাও আড্ডায় জমে গেলে, সহজে ফিরে আসতে মন চায়না।
শীলা বললো, মামা তোমার অনুমতি না নিয়েই, তোমার কম্পিউটারটা একটু অন করেছিলাম।
শীলার কথায় সিকদার অনির বুকটা হঠাৎই ধক ধক করে উঠলো। কারন, বাইরে সিকদার অনি একজন প্রকৌশলী হিসেবে পরিচিত হলেও, গোপনে সে একজন চটি লেখক! তার কম্পিউটার ভর্তি চটি গলপো। শীলা কি তাহলে সব পড়ে ফেলেছে! কি লজ্জার কথা! সিকদার অনির কান গরম হয়ে উঠলো। সে শীলার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে অন্যমনস্কই হয়ে উঠলো। শীলা বলতে থাকলো, ইন্টারনেট খোঁজাখোঁজি করেই একটা বিদেশী কোম্পানী খোঁজে পেলাম। ফ্যাশন ডিজাইনার খোঁজছে। ফ্যাশন ডিজাইনের উপর তো আর আমি পড়ালেখা করিনি, করেছি আর্ট ডিজাইনের উপর! তারপরও সরাসরি টেলিফোন করে, আমার আগ্রহের কথা জানিয়েছি। আগামীকালই ইন্টারভিউ এর জন্যে ডেকেছে। যদি চাকুরীটা হয়ে যায়, তাহলে তোমাকে আর ঝামেলা করবো না। আলাদা বাসা নিয়েই থাকবো!
সিকদার অনি শীলার দিকে না তাঁকিয়েই বললো, আমি কি বলেছি তোমাকে, ঝামেলা বাড়িয়েছো!
শীলা বললো, ঝামেলা নয় তো কি? তোমার ছোট বাসা। মেয়েদের অনেক স্বাধীনভাবে অনেক কিছুই করতে হয়। পোষাক বদলানো, এটা সেটা, সেগুলোও তো আছে। আমি হয়তো সরল মনে তা তোমার চোখের সামনেই করে ফেলবো। আর তুমি বিরক্ত হবে! তা তো বেশীদিন চালানো যেতে পারে না। তোমার নিজেরও তো অনেক প্রাইভেসী থাকতে পারে। লেখাপড়া শেষ করেছি, আমারও তো স্বাধীন হওয়া উচিৎ!
সিকদার অনির মনটা হঠাৎই খুব আবেগ আপ্লুত হয়ে পরলো। এই পৃথিবীতে সত্যিকার এর আপনজন বলতে তো, তার আর কেউই নেই। খুব শৈশবে মাকে হারিয়েছে। কলেজ পাশটা করার আগেই বাবার মৃত্যু হলো। ভুলের ফসল কিংবা পাপের ফসলই হউক, শীলাই তো তার একমাত্র আপনজন। তার ঔরশজাত সন্তান! সিকদার অনি রাগ করেই বললো, এতই যদি স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে চাও, তাহলে বড় একটা বাসা খোঁজবো। হুট করে তো সব কিছু হয়না। ভাবতেও তো সময় লাগে! কয়টা দিন কষ্ট করো!
শীলা বললো, তুমি শুধু শুধু আমার জন্যে একটা বড় বাসা খোঁজতে যাবে কেনো? সম্পর্কহীন পাতানো মামাই তো শুধু! মা তোমাদের বাড়ীতে কাজ করতো!
শীলার কথায়, সিকদার অনি মুখের ভাষা হারিয়ে ফেললো। অনেক বড় বড় কষ্টও মানুষ হাসিমুখেও মেনে নিতে পারে। অথচ, মাঝে মাঝে ছোট খাট ফুলের আঘাতগুলোও সইতে পারেনা। সিকদার অনি অনেক কষ্ট করেই চোখের জল টুকু সংবরন করে নিলো শুধু।
সে রাতেও সিকদার অনির ঘুম আসতে চাইলো না। শীলা বোধ হয় রাগ করেই ঘুমিয়ে পরেছে। সিকদার অনি নুতন এক চটি লেখার কথাই ভাবলো। কিন্তু, কাকে নিয়ে কি ধরনের চটি লিখবে, সেটাই শুধু ভাবতে পারছিলো না। তার চোখের সামনে ভেসে এলো শুধু সাইদার অপরূপা মুখটাই। শান্ত দুটি চোখ! লম্বাটে, ঈষৎ ডিম্বাকার চেহারায় সরু নাকটার নীচে, সরু চৌকু এক জোড়া ঠোট! চুলগুলো বেশ লম্বাও নয়, আবার খাটও নয়, এলোমেলো এক গাছি চুল গাল গুলোর উপরও ঝুলে পরে!
সাইদা এখন কি করছে কে জানে? হয়তো বা সুখ নিদ্রাই যাপন করছে। অথচ, সিকদার অনির চোখে ঘুম এলো না। মনে হতে থাকলো, সামনের বারান্দাতেই দাঁড়িয়ে আছে সাইদা। পরনে সাদা নেটের মতো কোন কাপরের সেমিজ! তার বিশাল সুডৌল, ঈষৎ ঝুলে পরা বক্ষ দুটিকে মিছেমিছিই ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে। সাদা নেটের সেই সেমিজটা ভেদ করে, স্তন যুগল যেমনি স্পষ্ট চোখে এসে পরছে, ঠিক তেমনি প্রশস্ত বৃন্তপ্রদেশও চোখ মেলে তাঁকিয়ে আহ্বান করছে, এসো, ছুয়ে দেখো!
সাইদাকে নিয়ে কল্পনার জগতে হারাতে না হারাতেই, মেইল বক্সে নুতন একটা মেইল এসে জমা হলো। সম্ভিত ফিরে পেয়েই মেইলটা খুলে পরলো সে।
শীলার বাবার মেইল! লিখেছে-
শীলা আমার খুব আদরের মেয়ে। একটি দিনও তার চাঁদমুখটা না দেখে বিছানায় ঘুমুতে যাবার কথা ভাবিনি। তোমার বাসায় উঠেছে শুনে স্বস্তি পেয়েছি ঠিকই, তবে দু রাত্র হয়ে এলো, চোখ দুটি তো জোড়া লাগাতে পারছি না। তুমিও আমার আদরের শ্যালক। শীলাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ফিরিয়ে আনো। শীলার মতামত ছাড়া কারো সাথেই তার বিয়ে দেবো না।
ইতি
তোমার অভাগা দুলাভাই
সিকদার অনি আবারো এক ভিন্ন ভাবনাতেই পরে গেলো। সত্যিকার এর আপনরাই কখনো আপন হয়না। বরং দূরের মানুষ গুলোই আপন হয়ে হয়ে, হৃদয় মন কেঁড়ে নেয়। শীলা যে বাবার পরিচয়ে সামাজিক ভাবে বড় হয়েছে, তার সাথে রক্তের কোন সম্পর্কই নেই। অথচ, দু রাত্র তার চোখেও ঘুম নেই। নিজ কন্যা এত কাছাকাছি থেকেও সিকদার অনির চোখে চির আপন মনে হতে থাকলো, মাত্র কিছুদিন আগেই পরিচয় হওয়া সাইদাকেই।
সিকদার অনি, শীলার বাবাকে মামূলী একটা উত্তর পাঠালো, শীলা এখানে খুবই ভালো আছে। নুতন চাকুরী পেয়েছে। ভাবছি, শীলার জন্যে বড় একটা বাসা ভাড়া করবো। আপনি কোন দুঃশ্চিন্তা করবেন না। কেয়া আপাকেও দুঃশ্চিন্তা করতে নিষেধ করবেন।
মেইলটা লিখে সিকদার অনিও কম্পিউটারটা অফ করে, ঘুমুনোর কথাই ভাবলো। ঠিক তেমনি সময়েই মোবাইলটা বেজে উঠলো। সাইদার ফোন! কিন্তু, এত রাতে, পাশে শীলা ঘুমন্ত! ফোনটা রীসীভই বা করে কেমন করে? সিকদার অনি খানিকটা বিড়ম্বনাতে ভুগেই, ফোনটা অফ করে দিলো।
শীলা ঘুমের মাঝেই নড়ে চড়ে বললো, মামা, কল রীসীভ করছো না কেনো? এতো রাতে প্রেমিকা কিংবা বিপদ ছাড়া কারো ফোন করার কথা নয়! দুটুই এড়িয়ে যাওয়া ঠিক না!
সিকদার অনি বললো, মামণি, তুমি ঘুমাওনি?
শীলা বললো, ঘুমিয়েই তো গিয়েছিলাম। মোবাইলের শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেলো। এক সংগে থাকতে হলে, এমন সমস্যা থাকবেই। তুমি সাইদা আন্টির সাথে আলাপটা করে নাও! নইলে, উনারও ঘুম হবে না।
শীলার কথা শুনে প্রচণ্ড রকমেই অবাক হলো সিকদার অনি। দুদিনও হয়নি শীলা এখানে এসেছে! সাইদার সাথে দেখা সাক্ষাৎ তো দূরের কথা, এই নিয়ে কখনো আলাপও হয়নি শীলার সাথে। সাইদার কথা শীলা জানলো কেমন করে? শীলার মাঝে কি টেলিপ্যাথি জাতীয়, সুপার ন্যাচারেল কোন পাওয়ার আছে নাকি?
সিকদার অনির হঠাৎই মনে হলো, তার নুতন চটি গলপোটির কথা। যেটা সাইদাকে নিয়েই লিখতে শুরু করেছিলো ইদানীং। ডেস্কটপেই সেইভ করে রেখেছিলো কয়েকটা লাইন লিখেই। যার শুরুটা এমনিই ছিলো-
ভাবছি নুতন করেই জীবন শুরু করবো। জীবনে কাউকে তো আর আপন করে পেলাম না। এভাবে জীবনও চলে না।
সাইদা বোধ হয় আমাকে ভালোই বাসে। অফিসে প্রায়ই পরে আসা, লাল রং এর পাতলা জামাটাতে তাকে খুবই ভালো লাগে। শুধু ভালোই লাগেনা খুব সেক্সীও লাগে!
আজকাল অনেক মেয়েরাই ব্রা পরে না। সাইদাও পরে না। তাই পোষাকের আড়ালে তার বক্ষের আয়তনই শুধু নয়, আকৃতি সহ, নিপল গুলোর আভাসও চোখে পরে। খানিকটা ঝুলে পরলেও, সাইদার বক্ষ দৃষ্টি কেঁড়ে নেবার মতোই! কারন, ব্রা না পরে, বক্ষের ন্যাচারেল ভাবটাই সে প্রকাশ করার চেষ্টা করে। এমন একটি সাইদাকে আমিও ভালোবাসি।
সাইদা অফিসে যেমনি আমাকে বিরক্ত করে, মাঝে মাঝে রাত বিরাতেও টেলিফোনে বিরক্ত করে। অথচ কেনো যেনো মনের ভালোবাসাগুলোকে গুছিয়ে, কখনোই সাইদাকে বলা হয়ে উঠে না।
ভাব আসলে, এমন গলপো সিকদার অনি অনেকই লিখে। এক লাইন দুই লাইন লিখেও যেমনি শেষ করে দেয়, পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখেও, হঠাৎ থামিয়ে রাখে। এই গলপোটাও সিকদার অনি, ততদূর লিখে থামিয়ে রেখেছিলো। তবে কি শীলা, দুপুর বেলাতে তার অবর্তমানে, এই গলপোটাও পড়ে ফেলেছিলো! সিকদার অনির মাথাটা ধীরে ধীরে খারাপই হতে থাকলো।
ইমতিয়াজ রশীদ, পোড়া মাংস খেতে খুবই পছন্দ করে। আরো বেশী পছন্দ করে, নরোম মাংসের মেয়ে। বয়স খুব একটা বেশী না। বত্রিশ তেত্রিশ। ইমতিয়াজ ফ্যাশনজ এর পরিচালক। পৈতৃক কিছু টাকাতেই ইমতিয়াজ ফ্যাশনজ নামে ছোটখাট একটা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছে। আর এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো, সুন্দরী সুদেহের অধিকারী মেয়েদেরকে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশন পরিয়ে দেহের সুন্দর সুন্দর অংশগুলোকে যথা সম্ভব ফুটিয়ে তুলে, ছবি তুলা। মাঝে মাঝে শহরের বিভিন্ন মঞ্চগুলো তে ফ্যাশন শো এরও আয়োজন করে, কাড়ি কাড়ি টাকাতে পকেটটা ভরা তুলা। সেই হিসেবে ক্ষমতার দাপটটাও খুব কম নয় তার।
ইময়তিয়াজ ফ্যাশনজ এর জন্যেই একজন ফ্যশন ডিজাইনার খোঁজছিলো। যার বিজ্ঞাপনটা ইন্টারনেটেই খোঁজে পেয়েছিলো শীলা।
শীলা তার নিজ হাতে বানানো সাধারন একটা কামিজই বেছে নিলো, ইন্টারভিউতে পরে যাবার জন্যে। ভেতরে ব্রা পরবে কি পরবে না এই নিয়েও খানিকটা ভাবলো। হাতকাটা সাদা নীল ডোরা কাটা যে কামিজটা বেছে নিলো, সেটার বুকের দিকটাও অনেকটা ব্রা এর মতোই। তাই, বাড়তি ব্রা পরার কথা আর ভাবলো না।
ইমতিয়াজ ফ্যাশনজ এর অফিসে এসে পৌঁছুলো বেলা এগারটার দিকেই। ইমতিয়াজ রশীদ শীলাকে এক নজর দেখেই, কেমন যেনো বোকা বনে গেলো। ফ্যাশন ডিজাইনার বলতে তো এক ধরনের দর্জীই বুঝায়। তার ধারনা ছিলো, তেমনি বয়স্কা দর্জী কোন মহিলাই বোধ হয় আসবে। শীলাকে দেখা মাত্রই তার চিন্তা ভাবনা হঠাৎই বদলে গেলো। মামুলী করেই প্রশ্ন করলো, আপনিই কি ফ্যাশন ডিজাইনার?
শীলা মিষ্টি হেসেই বললো, জী।
ইমতিয়াজ রশীদ শীলার আপাদ মস্তক পুনরায় পর্য্যবেক্ষন করে দেখলো, সরু চোখ করেই। তারপর বললো, আমি আসলে একজন মডেলও খোঁজছি।
শীলা অবাক হয়েই বললো, মডেল? মানে?
ইমতিয়াজ রশীদ শীলার সুউন্ন বক্ষে, ঈষৎ ব্রা এর খোপের মতোই কামিজটার গল দিয়ে একাংশ বেড়িয়ে থাকা বক্ষের ভাঁজটা দেখে দেখেই বললো, মানে ফ্যাশন মডেল! আমার তো মনে হয়, আপনিই পারফেক্ট!
শীলা বললো, আমি আসলে একটা চাকুরী খোঁজছি, পারমানেন্ট কোন কিছু! লেখাপড়া শেষ করেছি, মা বাবার উপর আর বারডেন হয়ে থাকতে চাইছি না।
ইমতিয়াজ রশীদ বললো, অবশ্যই পারমানেন্ট জব। একজন ফ্যাশন ডিজাইনার এর চাইতে, ফ্যাশন মডেলের স্যালারীও অনেক বেশী! শুধু বেশীই নয়, দশ গুনও বলতে পারেন! করবেন?
শীলাও মামুলী ভাবে বললো, তাহলে কি করতে হবে আমাকে?
ইমতিয়াজ রশীদ সহজভাবেই বললো, আপনি নিঃসন্দেহে খুবই সুন্দরী, ফিগারটাও চমৎকার! তারপরও, প্রথমে আপনার কয়েকটা স্ক্রীন শট নিতে হবে। সে সব ফটো দেখেই যাচাই করে দেখবো, নিয়োগ দেয়া যায় কিনা?
শীলা আমতা আমতা করেই বললো, মানে?
ইমতিয়াজ রশীদ বললো, দেখুন, মেয়েদের চেহারা, ফিগার, এসব খুব রহস্যজনকই বলতে পারেন। এমনিতে খালি চোখে কোন একটি মেয়েকে খুবই সুন্দর লাগে। অথচ ছবি তুলার পর অন্য রকমই লাগে। বলতে পারেন, অনেক সুন্দরী মেয়েদের ক্যামেরা ফেইস নেই। ফিগারের বেলায়ও তেমনি। খালি চোখে যেটা অনুমান করা যায় না, খুব সুন্দর ফিগার বলেই মনে হয়, ছবি তুলার পর আবার অন্য রকম লাগে। কি বলেন, ইন্টারভিউ দেবেন?
শীলা আসলে চাকুরীর আশা নিয়েই এখানে এসেছিলো, স্বাধীন ভাবে জীবন যাপনের জন্যেই। তাই সেও সহজ গলাতেই বললো, জী দেবো।
ইমতিয়াজ রশীদ বললো, তাহলে পাশের ঘরটাতে আসুন। পাশের ঘরেই আমাদের স্টুডিও।
ভেতরে ঢুকে অবাক হয়েই দেখলো শীলা, সাধারন বাসার মতো করেই সাজানো একটা ঘর। সোফা সহ, খাট, টেবিল সবই আছে। ইমতিয়াজ রশীদ একটা ক্যামেরা নিয়ে এগিয়ে এসে বললো, ওখানে দাঁড়িয়েই একটা পোঁজ দিন।
শীলা ঘাড়টা ডান দিকে হেলিয়ে, পোঁজ দিয়েই দাঁড়ালো। ইমতিয়াজ রশীদ ক্যাচ ক্যাচ করেই বেশ কয়েকটা ছবি তুলে ফেললো। তারপর বললো, এবার আপনার কামিজ এর বাম স্লীভটা একটু নামিয়ে দিন।
শীলা তার স্লীভলেস জামাটার বাম ঘারের উপর দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া সরু লেইসটা খানিকটা নামিয়ে ধরেই দাঁড়ালো। ইমতিয়াজ রশীদ বললো, আরেকটু নামিয়ে দিন!
শীলা বিব্রত বোধই করতে থাকলো। আরেকটু নামালে তো, তার সুডৌল বক্ষটাই উন্মুক্ত হয়ে পরবে! সে আমতা আমতা করেই বললো, না মানে, ভেতরে ব্রা পরিনি।
ইমতিয়াজ রশীদ বললো, তাতে কি হয়েছে। স্ক্রীন টেস্টের জন্যে তো শেষ পর্য্যন্ত সবই খুলতে হবে!
শীলা চোখ কপালে তুলেই বললো, মানে?
ইমতিয়াজ রশীদ দুঃখ প্রকাশ করার ভংগী করেই বললো, স্যরি, আসলে আপনাকে ব্যাখ্যা করা হয়নি। ফ্যাশন মডেলদের বিভিন্ন ফ্যাশন গুলো, তাদের দেহের গড়ন, গায়ের রং, বক্ষের আকৃতি, পাছার সেইপ, এসব যাচাই করেই ডিজাইন এর অর্ডার দেয়া হয়!
ইমতিয়াজ রশীদের কথা শুনে, শীলা তখন কি করবে, কিছুই বুঝতে পারছিলো না।
পরিবেশ পরিস্থিতি অনেক সময় মানুষের মনও বদলে দেয়। তা ছাড়া ইমতিয়াজ রশীদ এর কথা বলার ভংগী এমনই যে, খুব সহজেই মানুষকে আবেশিত করে তুলতে পারে। সে আবারো বললো, কি বলেন, ইন্টারভিউ দেবেন?
শীলা হঠাৎই, তার ঘাড়ের উপর থেকে সরু লেইসটা বেশ কিছুদূর নামিয়ে, বক্ষ যুগল পুরু পুরিই উন্মুক্ত করে ধরে বললো, ঠিক আছে, যদি চাকুরী হয়, তাহলে বেতন কত পাবো!
শীলার সুদৃশ্য, সুডৌল বক্ষ আর সুস্ফীত বৃন্ত প্রদেশ দেখে, ইমতিয়াজ রশীদ এরও মাথা খারাপ হয়ে গেলো। সে তোতলাতে তোতলাতেই বললো, এমন ফিগার থাকলে, আপনি যা ডিমাণ্ড করবেন, তাই হবে!
এই বলে সে ক্যাচ করেই ছবি তুলতে থাকলো, আর নির্দেশ দিতে থাকলো, বিভিন্ন পোঁজে দাঁড়াতে।
শীলাও ইমতিয়াজ রশীদ এর নির্দেশ মতোই, দাঁড়িয়ে, দেহটাকে বিভিন্ন পোঁজে হেলিয়ে দুলিয়ে শট দিতে থাকলো।
অতঃপর ইমতিয়াজ রশীদ বললো, ওই লম্বা সোফাটায় শুয়ে পরেন!
শীলা চোখ কপালে তুলেই বললো, শুবো?
ইমতিয়াজ রশীদ বললো, না মানে দাঁড়িয়ে থাকলে মেয়েদের বক্ষ এক রকম লাগে, শুয়ে পরলে আবার অন্য রকম লাগে!
ফ্যাশন এর জন্যে শুয়ে থাকা কোন মেয়ের বক্ষের ছবি তুলার মাঝে কি যুক্তি থাকতে পারে, কিছুই অনুমান করতে পারলো না শীলা। সে ইমতিয়াজ রশীদের কথা মতোই, বক্ষটাকে উদোম রেখে, লম্বা সোফাটার উপর শুয়ে পরলো।
ছুটির দিন।
সিকদার অনির মোবাইলটা হঠাৎই বেজে উঠলো। সাইদার ফোন। খুব আব্দার করেই বললো, এই বাসায় চলে এসো না। বাসায় কেউ নেই। একা বাসায় ভালো লাগছে না।
সিকদার অনি বললো, খালা খালু কোথায় গেছে?
সাইদা বললো, হঠাৎ মামা এসেছিলো। মা বাবা দুজনকেই গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে গেছে। বেশ কয়েকদিন থাকবে।
সাইদার মুখে মামা কথাটা শুনে, সিকদার অনির বুকটা হঠাৎই ছ্যাৎ করে উঠলো। কারন, শীলা তাকে মামা বলেই ডাকে। অথচ, তার সাথে মামা বলে সম্পর্ক নয়। কেনো যেনো হঠাৎই সে অন্যমনস্ক হয়ে গেলো। অপর পাশ থেকে, সাইদার গলা শুনা গেলো, কি ব্যাপার? চুপ করে আছো কেনো? আসছো তো?
সিকদার অনি বললো, হ্যা আসছি।
শীলা তখন সিকদার অনির বাসার সামনে বাগানটার পরিচর্য্যা করেই সময় কাটাচ্ছিলো। সিকদার অনি মোবাইলে কথা বলা শেষ করে, শীলাকে ডেকে বললো, মামণি, আমি একটু বেড়োবো। ফিরতে দেরীও হতে পারে। তুমি দুপুরের খাবার খেয়ে নিও।
শীলা দুষ্টুমী ভরা গলাতেই বললো, নিশচয়ই সাইদা আন্টির কাছে!
সিকদার অনি রাগ করার ভান করেই বললো, আহ, বড়দের ব্যাপার নিয়ে মজা করতে নেই!
এই বলে সিকদার অনি ছুটতে থাকলো সাইদাদের বাসার উদ্দেশ্যেই।
সাইদা সিকদার অনির জন্যেই অপেক্ষা করছিলো। পরনে, ঘরোয়া পোষাক! হালকা বেগুনী রং এর পাতলা স্কীন টাইট হাতকাটা সেমিজ। সেমিজের তলা থেকে বক্ষ যুগল স্পষ্টই প্রকাশিত হয়ে আছে। সাইদাকে দেখে সিকদার অনির মনটা রোমাঞ্চেই ভরে উঠলো।
খালি বাসা, সাইদাও তেমনি রোমাঞ্চে ভরপুর একটা মন নিয়েই অপেক্ষা করছিলো। সে ভেজা ভেজা ঠোট নিয়েই, কামনার দৃষ্টি মেলে তাঁকিয়ে রইলো সিকদার অনির দিকে। সিকদার অনিও আর দেরী করলো না। এগিয়ে গিয়ে, সাইদাকে বুকে টেনে নিয়ে, তার নরোম স্তন দুটি নিজের বুকের সাথেই পেষ্ট করে, ঠোটগুলো বাড়িয়ে দিলো সাইদার ভেজা ঠোটে।
চুমুতে চুমুতেই হারিয়ে যেতে থাকলো দুজন। সিকদার অনির মনেও সেদিনের অতৃপ্তিটা রয়ে গিয়েছিলো। সে তাকে জড়িয়ে ধরেই বিছানার দিকে এগুতে থাকলো। সাইদা কায়দা করেই বললো, এখন না। আগে গোসলটা সেরে নেই। তারপর খাওয়া দাওয়া, তারপর অন্য কিছু!
সিকদার অনির মনটা কিছুতেই মানছিলো না। সে বললো, আগে এক চোট হয়ে যাক!
সাইদা চোখ কপালে তুলেই বললো, তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে? এত দূর থেকে আসতে গিয়ে, ঘেমে কি অবস্থা হয়েছে তোমার! রীতীমতো ঘামের দুর্গন্ধই বেড়োচ্ছে! ওমন একটা গা আমার সাথে মেলাবে নাকি?
সাইদার কথায় যুক্তি আছে। সে আব্দার করেই বললো, তাহলে দুজনে এক সাথেই গোসল করবো।
সাইদা চোখ গোল গোল করেই বললো, নিষেধ করলো কে?
ছেলে মেয়েরা মা বাবার দোষ গুন গুলো পাবে এটাই তো স্বাভাবিক। সিকদার অনির চোখে তার চাইতে বয়সে বড় মেয়েরাই বেশী আকর্ষন করে। তার তথাকথিত কেয়া আপাও বয়সে অপেক্ষাকৃত ছোটদেরকেই একটু বেশী পছন্দ করতো। যার কারনেই দুজনের মাঝে প্রথম প্রেমটা গড়ে উঠেছিলো। শীলা তো তাদেরই সন্তান।
এটা ঠিক এতটা বয়সেও শীলার মনে কখনো প্রেম ভালোবাসার ব্যাপারগুলো জ্বালাতন করেনি। হঠাৎ বিয়ে ঠিকঠাক হয়ে যাবার পর, ঘর পালিয়ে সিকদার অনির বাসায় এসেই অনেক বদলে যেতে থাকলো সে। হঠাৎই, বয়সে অনেক ছোট পাশের বাসার শোভনের প্রেমেই পরে গেলো। অথচ, শীলাকে জমের মতোই ভয় করে শোভন। আবার কি হতে কি হয়ে না যায়, তাই পারত পক্ষে বিপদজনক সীমা ছাড়িয়েই চলাচল করে। না পারতেই শুধু বাসা থেকে বেড়িয়ে, সিকদার অনির বাসার সামনের রাস্তাটা পেরোতে হয়। তখনও সে এক রকম মাথা নীচু করে, ত্রস্ত ব্যাস্ত হয়েই পার হয়ে থাকে।
শোভন ম্যাথম্যাটিকস এ অনার্স পড়ে। অংক করাই হলো তার পড়ালেখা। সেদিন ছুটির দিনে কাগজ ফুরিয়ে গিয়েছিলো বলেই, দোকান থেকে কাগজ কেনার উদ্দেশ্যেই বেড় হয়েছিলো। ঘর থেকে উঁকি ঝুঁকি দিয়েও নিশ্চিত করেছিলো, জানালার পাশে শীলার কোন অবস্থান আছে কিনা। তেমনি নিশ্চয়তা নিয়েই, সিকদার অনির বাসার সামনের দেয়ালে ঘেরা উঠানটা পেরিয়ে সামনের রাস্তাটা দিয়ে ত্রস্ত ব্যাস্ত হয়েই এগুচ্ছিলো।
শীলা তখন বাগানেই নুয়ে নুয়ে ফুল গাছে পানি দিচ্ছিলো। হঠাৎ শোভনকে চোখে পরতেই ডাকলো, এই শোভন, কই যাও!
শীলার ডাক শুনে, শোভন হঠাৎই পালাতে চাইলো। শীলা উঁচু গলাতেই বললো, পালাচ্ছো কেনো! আমার হাতে পানির নল। পালাতে চাইলে ভিজিয়ে দেবো কিন্তু!
যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত হয়। রাত্রি যখন হয়েই গেছে, তখন আর বাঘের থাবা থেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে কি আর লাভ! শোভন কিছুই শুনেনি এমন একটা ভাব করেই ঘুরে দাঁড়ালো। দেখলো একটু দূরেই পানির নলটা হাতে নিয়ে খানিকটা ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে শীলা। পরনে, লাল সাদা ডোরা কাটা সাধারন টপস। ঝুঁকে থাকার কারনেই, টপস এর গল গলিয়ে, লাল রং এর ব্রা টা যেমনি চোখে পরছিলো, বিশাল দুটি বক্ষের ভাঁজটাও তাকে মাতাল করে তুললো। সে অপ্রস্তুত হয়েই শুকনো একটা মুখ করে বললো, কাগজ কিনতে যাচ্ছিলাম। আগামীকাল একটা টিউটরিয়াল আছে। এখনো অনেক অংক করা হয়নি। আসি?
শীলা বললো, অংকই তো করবে। তাহলে কাগজ কিনে ফিরে এসে, আমাদের বাসাতেই চলে এসো। মামাও বাসায় নেই আমি একা!
শোভন কি বলবে বুঝতে পারলো না। কম করে হলেও, শীলা যদি তার একশ হাতও কাছাকাছি থাকে, তাহলে কখনোই তার মাথায় কোন অংক ঢুকবে না। সব অংক গড়মিল হয়ে লিংগটার অংকই মিলাতে থাকবে। সে বললো, আপা আজকে না। টিউটরিয়ালটা শেষ হয়ে যাক! তারপর একদিন আসবো!
শীলা খিল খিল করে হাসতে থাকলো। বললো, ভেবেছিলাম, ঠাণ্ডা মাথায় যেনো অংক করতে পারো, তার জন্যে একটা ঔষধ দেবো। থাক তাহলে।
সাইদা তার বাবার একটা লুংগি এনে, সিকদার অনিকে বাড়িয়ে ধরে বললো, তুমি বাথরুমে গিয়ে ঢুকো। আমি এক্ষুণিই আসছি।
সিকদার অনি লুংগিটা হাতে নিলো ঠিকই, পরলো না। গোসল করতে হলে আবার লুংগি নাকি? সে তার পরনের প্যান্ট শার্ট গুলো খুলে, সোফার ডানাতে রেখে, পুরুপুরি ন্যাংটু হয়েই বাথরুমে গিয়ে ঢুকলো। মনে মনে প্রার্থনা করতে থাকলো, সাইদা যেনো তাড়াতাড়িই ফিরে আসে! আহা, কত দিন মেয়েদের সাথে এক সংগে গোসল করাটা হয়ে উঠে না! মেয়েদের সাথে গোসল করার মাঝে রোমাঞ্চতাই তো আলাদা! ভেজা শরীরের মেয়ের দেহের সৌন্দর্য্যই তো আলাদা!
সাইদা তার নিজ ঘরে গিয়ে, পরনের স্কীন টাইট হালকা বেগুনী রং এর নাইলনের সেমিজটা খুলে অপর একটা সূতীর লম্বা ঢোলা সেমিজই গায়ে পরে নিলো গোসলের জন্যে। অতঃপর নিম্নাংগের পোষাক গুলো খুলে লম্বা সেমিজটার আড়ালেই নিম্নাংগটা ঢেকে বাথরুমে গিয়ে ঢুকলো। সিকদার অনিকে পুরুপুরি নগ্ন দেখে, সে আৎকেই উঠলো। প্রায় চিৎকার করেই উঠলো, কি ব্যাপার, তোমাকে লুংগি দিলাম না!
সিকদার অনি বললো, অযথা একটা লুংগি ভিজিয়ে লাভ আছে?
সাইদা লজ্জায় অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়েই বললো, তাই বলে, আমার চোখের সামনে তুমি, ওভাবে?
সিকদার অনি সহজ গলাতেই বললো, সমস্যা কি? আগে পরে তো দেখবেই! গোসলের সময় দেখলে অসুবিধা কোথায়? তার চেয়ে বড় কথা, তুমি আবার ওই ঝামেলাটা গায়ে দিয়ে আছো কেনো? খুলো! তোমাকে একবার নয়ন ভরেই দেখি!
সাইদা বললো, তোমার কি মাথা খারাপ? খুলবো!
সিকদার অনি বললো, ওটা পরেই গা ভেজাবে নাকি?
সাইদা বললো, হুম এটাই তো আমার গোসলের পোষাক!
সিকদার অনি চোখ কপালে তুলেই বললো, গোসলের পোষাক? গোসলের জন্যে আবার পোষাক লাগে নাকি?
সাইদা বললো, তবে কি তোমার মতো কেউ ন্যাংটু হয়ে গোসল করে নাকি?
সিকদার অনি বললো, নয়তো কি? গায়ে সাবান মাখতে হয়, গায়ের উপর ওমন একটা ঝামেলা থাকলে করা যায় নাকি?
সাইদা বললো, খুব করা যায়। তুমি সরো এখান থেকে। এই বলে সে শাওয়ারটা ছেড়ে দিয়ে, তার তলায় ভিজতে থাকলো ঢোলা সেমিজটা পরনে রেখেই। বেগুনী রং এর পাতলা সূতীর সেমিজটা ভিজে ভিজে সাইদার দেহের সাথে সেপ্টে যেতে থাকলো ধীরে ধীরে। অদ্ভূত চমৎকার করেই ফুটিয়ে তুলতে থাকলো সাইদার সুডৌল বক্ষ যুগল! সেই সাথে নিম্নাংগের কালো কেশগুলোও ভেসে আসতে থাকলো গভীর ভাবেই ভেজা সেমিজটা ভেদ করে। সিকদার অনি মন ভরেই দেখতে থাকলো সাইদাকে।
সাইদা খানিকটা ভিজে নিয়ে, জানালটার পাশেই দেয়াল ঘেষে দাঁড়ালো। তারপর সিকদার অনিকে লক্ষ্য করে বললো, লুংগি তো আর পরবে না। এবার তোমার পালা।
সিকদার অনিও শাওয়ার এর তলায় গিয়ে ভিজতে থাকলো। মেয়েদের দেহের দেখার মতো অনেক কিছুই থাকে। ছেলেদের বোধ হয় লিংগটা ছাড়া অন্য কিছুই কৌতুহল নিয়ে দেখার মতো জিনিষ নেই। সাইদা ঘাড় কৎ করেই তন্ময় হয়ে দেখতে থাকলো সিকদার অনির দাঁড়িয়ে থাকা প্রকাণ্ড লিংগটা।
পৃথিবীতে মানুষের মনই হলো, সবচেয়ে রহস্যে ভরপুর। শীলার কথায় শোভনের মনটা কেমন যেনো চঞ্চল হয়ে উঠলো। দোকান থেকে কাগজ কিনে ফেরার পথে ভাবতে থাকলো, শীলা আপার কাছে কি সত্যিই কোন ঔষধ আছে নাকি, যা খেলে অংক না করেও পাশ করা যায়? শোভন সত্যিই খুব দ্বিধা দ্বন্দের মাঝেই পরে গেলো।
বসায় ফিরে এলো ঠিকই, অংকও করতে বসলো। অথচ, অংকে তার মন বসলো না। থেকে থেকে শীলার গোলাকার চাঁদের মতো চেহারাটাই তার চোখের পর্দায় ভেসে আসতে থাকলো। অংকেই যখন মন বসছে না তখন, আর নিজ ঘরে বসে থেকে লাভ কি? সে তার অংক বইটা আর খাতা কলম নিয়ে পা বাড়ালো সিকদার অনির ছোট্ট বাসাটার দিকেই।
কলিং বেলটা টিপতেই দরজা খুলে দাঁড়ালো শীলা। শোভনের হাতে বই খাতা দেখে, সে খুব গম্ভীর গলাতেই বললো, কি ব্যাপার শোভন? স্কুলে মাষ্টারী পেয়েছো নাকি?
শোভন মাথা চুলকাতে চুলকাতেই বললো, আপা, না মানে, আসলেই অংকে মন বসছিলো না। যদি সত্যিই কোন ঔষধ থাকে!
শীলা খুব আগ্রহ করেই বললো, ওহ, সেই কথা! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম, কালকে তোমার টিউটরিয়াল পরীক্ষা! এসো এসো, ভেতরে এসো! ঔষধ তো আমি রেডী করেই রেখেছি।
শোভন খুব আনন্দিত হয়েই বই খাতা বগলে চেপেই ভেতরে ঢুকলো। শোভন ওপাশের ছোট টেবিলটার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলো। অথচ শীলা ছুটে গিয়ে, সেই টেবিলটার উপরই চেপে বসলো। তারপর মুচকি মুচকি হাসতে থাকলো।
শোভন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েই শীলার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাঁকিয়ে রইলো, বই খাতাগুলো বগলে চেপেই। শীলা চোখের ইশারাতেই কথা বললো। যার অর্থ এই দাঁড়ায়, কিহে বৎস্য! তাহলে ঔষধ চাই!
শোভন বোকা বোকা একটা ভাব নিয়েই বললো, আপা, বই খাতা কোথায় রাখবো?
শীলা বললো, ঔষধই যখন খাবে, তখন আর বই খাতা লাগবে না! ছুড়ে কোথাও ফেলে দাও!
শোভন খনিকটা আতংক নিয়েই বললো, ছুড়ে ফেলে দেবো?
শীলা বললো, হ্যা! জানালা দিয়ে বাইরেও ছুড়তে পারো, অথবা ঘরের মেঝেতেও ছুড়তে পারো! তবে, বাইরে ফেললে, অনেকে আবার তোমার এই দামী বই খাতা কুড়িয়েও নিয়ে যেতে পারে। তাই ঘরের মেঝেতেই ছুড়ে ফেলা উত্তম!
শোভন সত্যি সত্যিই তার বগলে চেপে রাখা বই খাতা গুলো ছুড়ে ফেললো মেঝেতে। তারপর, পকেট থেকে কলমটা বেড় করে বললো, আপা, এটাও?
শীলা বললো, থাক, ওটা পকেটেই থাক।
এই বলে শীলা তার পরনের লাল সাদা ডোরা কাটা টপসটা ঘাড়ের দিক থেকে নামিয়ে, লাল ব্রা টা খুলতে থাকলো। শোভন চোখ বড় বড় করেই শুধু তাঁকিয়ে রইলো শীলার দিকে। শীলা ব্রাটা পুরুপুরি খুলে সেটা মেঝেতে শোভনের বই খাতা গুলোর উপর ছুড়ে ফেলে ডান গালে আঙুলী ঠেকিয়ে আহলাদী গলাতেই বললো, তোমাকে ঔষধ খাওয়াতে হলে, আমার এটাও লাগবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন