সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১১

সুরভিত উদ্যান


আমার জীবনের একটা সত্যি ঘটনা আপনাদের বলিবিশ্বাস করবেন তো? আমি কিন্তু একদম বানিয়ে বলছি নাবিশ্বাস করুনশুধু পুরোন সেই স্মৃতিগুলো চোখে ভাসে আর ভাবি সত্যি কি হয়েছিল সেদিন

বাবা মা আমার নাম রেখেছিল রেখাছোটবেলা থেকেই দেখতে খুব সুন্দরী ছিলামগায়ের রঙ ধবধবে ফর্সাসাড়ে পাঁটফুট হাইটএই নিয়ে বাবা বলত তোর জন্য তো একটা লম্বা পাত্র দেখতে হবে রে? খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেব? দেখি তোর জন্য কেমন বর পাওয়া যায়আমি খালি হাঁসতাম আর সেই লগ্ন মূহূর্তের আশায় বসে থাকতামমনের মতন বর পেলে কার না খুশী ধরেবিয়ে করে বরকে নিয়ে সুখে ঘর বাঁধবআমার জীবনে রাজকুমারটা কে হবে সেই চিন্তায় মনটা ছটফট করতভাবতাম যারা প্রেম করে তাদের এমন হয় নাআমি তো প্রেম করিনি তাই আমার হচ্ছেহাজার হোক বিয়েটাতো মানুষে একবারই করেবাবা মাকে ছোটবেলা থেকে দেখিছি এত সুখীতাহলে আমার বেলায় এমনটা হবে না কেন? ভগবান কে ডাকতামআমার কলেজের বন্ধুরা আমাকে ভরসা জোগাতোবলত-দেখিস রেখা, তোর জীবনে সেরা বর জুটবেতোকে সে সত্যিকারের ভালবাসবেতোর জীবনের সব স্বপ্ন পূরণ হবে
এতটা আশা আমিও করিনিবিয়ে হোল যার সাথে সে আমার সত্যিকারের জীবন সাথি হয়ে এলআমি ভালবাসাটা শুধু পেলাম নাভালবাসাটা উপচে দিতে লাগলাম আমার এই ভালবাসার বরটাকেও আমাকে নিজের থেকেও বেশী ভালবাসতকখনও কষ্ট দিত না আমাকেআমি পারতাম না ওকে একটুর জন্যও গা ছাড়া করতেকাজের চাপে ওকে মাঝে ২-৩ দিনের জন্য বাইরে যেতে হোতফিরে আসত যখন আমি পাগলের মতন হয়ে যেতামঘন্টার পর ঘন্টা ওকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকতামওর ঠোটে চুমু খেতামওকে আদর করতামবিছানায় ওকে ভরিয়ে দিতাম নিজের শরীরে আবদ্ধ করেও আমাকে ভালবাসার আবেগে করতদুটো শরীর একত্রিত হয়ে কতক্ষণ যে আমরা বারবার একে অন্যের মধ্যে হারিয়ে যেতাম বুঝতেই পারতাম নাযৌনতার সুখ দুজনেই উপভোগ করতামআমাকে মিলনের পূর্ন তৃপ্তি দিতে ও আপ্রাণ চেষ্টা করতবিছানায় দুজনে দুজনকে সুখ দিতে আমরা যেন দারুন ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম
প্রথম দুবছর আমরা কোন বাচ্চা চাই নিঅথচ দুজনে চুটিয়ে সেক্স করেছিবাচ্চা এড়ানোর উপায় হিসেবে অনেক পথ অবলম্বন করেছিকিন্তু সেক্সকে কোনদিন অবহেলা করিনিমনে হয়েছে স্বামী স্ত্রীর আসল মিলন তো ঐখানেইযৌনতা ছাড়া স্বামী স্ত্রীর বিবাহিত জীবনে ছেদ পড়তে বাধ্যএকমাত্র দুজনে দুজনকে পাওয়ার চাহিদাই বিবাহিত জীবনকে সঠিক ভাবে টিকিয়ে রাখতে পারেআমাদের জীবনে এমন কোন বাধা কোনদিন আসেনিওকে যতটা ভালবাসা দিয়েছি আমি ও ততটাই সুদে আসলে ফেরত দিয়েছে আমাকে

2

ও আমাকে দীপঙ্করের সাথে আলাপ করিয়েছিল একদিনবলেছিল সত্যিকারের বন্ধু সবাই হয় নালাখে কখনও একটা দুটো হয়দুজনের বন্ধুত্বটা এতটাই গাঢ়, যে ওদের দেখে নাকি হিংসে করে সবাইদীপঙ্করকে খুব করে বলেছিল আমাদের বিয়েতে আসতেকিন্তু দীপঙ্কর ওর অফিসের চাপে আসতে পারে নিওকেও নাকি আমার স্বামীর মতন বাইরে বাইরে টুর করতে হয়ঘরে সুন্দরী বউ আছেঅথচ বউ এর সঙ্গ দিতে পারে নাব্যাচারা
কি করি কি করিএকদিন বলেই ফেললামআপনার বউ এর সাথে আলাপ করান না একদিনতাহলে আমার স্বামীকে নিয়ে আপনাদের ফ্ল্যাটে যাইবেশ মজা হবে
দীপঙ্কর আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকাচ্ছিল বারবারআমার স্বামী আমাকে অবাক করে দীপঙ্করের জায়গাতেই বলল-ওর খুব কষ্ট হচ্ছে গোএকে অফিসের চাপ, তারউপর বাইরে বাইরে ঘোরাএমনই কপাল কাজ করছে কলকাতায়আর বউ রয়েছে সেই শিলিগুড়িতেবিয়ের পর তিন চারের বেশী মুখই দেখতে পারে নি বউ এরএ ছেলের জন্য আমাকেই কিছু করতে হবে
অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম-আপনি বউ এর মুখ তিনচারের বেশী দেখেন নি? এত বড় কষ্টদায়ক ব্যাপারবউ তো আপনার জন্য এবার হাপিয়ে মরবেশিলিগুড়ি যান না?
শেষ কবে গেছেন?
-তিন মাস আগে
-তাহলে তো অনেকদিনের গ্যাপফোনে কথা হয়?
-তা হয়মাঝে মাঝে
-আপনার বউ বোর ফিল করে নাআপনার জন্য মন খারাপ হয় না তার? আমি তো আমার স্বামীকে দেখতে না পেলেই হাঁপিয়ে উঠি
দীপঙ্কর মাথা নীচু করে জবাব দিচ্ছিলবলছিল-তা তো হয়
আমার স্বামী মাঝখান থেকে ফোড়ন কেটে বলল-ওর বউকে দেখতে খুব সুন্দর জানো তোএই দীপু তোর মানিব্যাগে যে ফটোটা আছে বার করে দেখানা আমার বউকে
দীপঙ্কর ওর পার্স থেকে একটা ছোট ফটো বের করে দেখালবাঃ মুখটা খুব সুন্দরএকদম চাঁদ পানার মতনআপনার বউ এর জন্য আমারই কষ্ট হচ্ছেআফসোস করছিলাম
দীপঙ্কর এবার একটু অল্প হেঁসে জবাব দিল। -আপনার হ্যাজব্যান্ডকে এর জন্য একটা থ্যাঙ্ক ইউ দিনঐ তো আমাদের দুজনকে এবার আরো কাছে করে দিচ্ছে
চোখটা ছোট করে আমার স্বামীর মুখের দিকে অবাক ভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, সেটা কেমন?
ও আমাকে গর্ব করে উত্তর দিলAll credit goes to your husband..
হেঁয়ালিটা বুঝতে পারিনিশুনলাম যখন মনটা গর্বে ভরে উঠলআমার স্বামী বলছে-ওর জন্য এখানেই একটা ফ্ল্যাট ঠিক করে দিলাম বুঝলেএই একদম আমার বাড়ীর উল্টো দিকেদীপঙ্কর বউকে নিয়ে পরশুই আমাদের এখানেই চলে আসবেকাল ও শিলিগুড়ি যাচ্ছে বউ কে আনতেতারপর দুইবন্ধু একসাথেতোমারও গল্প করার একটা সাথী জুটে যাবেএকসাথে চারজনে মিলে ঘুরবো, বেড়াব আর ফুর্তী করব
সেদিন কি হয়েছিল জানি নাশুধু এইটুকুই বুঝেছিলামআমার স্বামী হচ্ছে বউ এর ঠিক যোগ্যতম স্বামীশুধু নিজের কথাই চিন্তা করে নাবন্ধু যাতে তার স্ত্রীকে নিয়ে সুখী হয় তার জন্য তার দরদ, আন্তরিকতা মনে রাখার মতনআমি আমার স্বামীর জন্য Proud Feel করিপ্রার্থনা করি, সবার কপালে যেন ভগবান এমন স্বামীই জুটিয়ে দেনদীপঙ্কর কিছুক্ষণ আর বসে থেকে তারপর চলে গেছিলওর চোখ মুখ দেখে বুঝেছিলাম আমার হাজব্যান্ডকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষাই খুঁজে পাচ্ছে না ও

3

ওকে নিয়ে শুরুটা কিভাবে করব বুঝতে পারছিলাম নাপ্রথমে ভাবলাম একটা চুমু খাব ওর গালেতারপর ভাবলাম শুধু চুমু নয়ওর ঠোটে ঠোটটা ধরে রাখব ততক্ষন, যতক্ষন না ওর ভাল লাগেতারপর আবার ভাবলাম, স্বামীকে ভালবাসব এরজন্য আবার অত ভাবব কেন? ওকে নিয়ে আমি আমার খুশী মতন আদর করবআদরটা সোহাগী আদরস্ত্রী যেভাবে স্বামীকে সবকিছু উজাড় করে ভরিয়ে দেয় সেইভাবেনিজেকে সমর্পন না করলে ঐ বা খুশী হবে কেন? হাজার হোক আমি তো ওর বিয়ে করা বউআর যাই হোক মনের মতন বর পাইনি বলে জীবনে তো কোনদিন আফসোস করতে হবে নাএই একটা কারনেই তো স্বামী-স্ত্রীর বিবাহিত জীবন সুখের হয়বাবা মায়ের আদুরী মেয়ে তাদের ছেড়ে নতুন স্বামীর সাথে ঘর বাঁধতে আসে এমনি এমনি? ওকে ফুলশয্যার রাত থেকে দেখছি আজ অবধি সেই একই রকমবিয়েটা একবছর হোলকিন্তু এখনও যেন সদ্য ফোটা ফুলএ ফুলে পচন কোনদিন ধরবে নাআমাদের বিবাহিত জীবন আজীবন সুখের হয়ে থাকবেঠিক অমর প্রেমের মতনযে প্রেমের কোনদিন মৃত্যু হয় না
চেয়ারে বসে একমনে ভেবে যাচ্ছিলামআর ভাললাগার মূহূর্তটাকে অনুভব করতে করতে মনটা খুশীতে ভরে উঠছিল
আমার স্বামী কম্পুটারে বসে কাজ করছিলওকে পেছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলামগলাটা দুহাতে জড়িয়ে ওর শরীরটা দোলাতে লাগলাম চেয়ারের উপরেইও কম্পুটারের মনিটরের দিকে মুখটা রেখেই আমাকে বলল-তুমি খুশী হয়েছ?
-ভীষন খুশী হয়েছি ভীষন
ওকে আরো আবদ্ধ করতে ইচ্ছে করছিলওর মাথার উপর আমার গলা আর থুতনীটা রেখে ওকে ঐভাবেই জড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণমুখটা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে ওর ঠোটে চুমু খাওয়ার আগে ও বলল-আসলে বন্ধুর জন্য বন্ধু করবে না তো কে করবে বল? দীপঙ্কর ছেলেটা কিন্তু দারুনওকে তো আমি অনেকদিন ধরেই দেখছিদেখ ও কিন্তু নিজে থেকে বলেনি আমায়যখন বুঝলাম ব্যাচারা কষ্ট পাচ্ছে আমি নিজে থেকেই ওকে বললাম-এক কাজ কর না তুই আমার এখানেই বউ নিয়ে চলে আয়আমি তোর জন্য একটা ভাড়াবাড়ীর ব্যাবস্থা করে দিচ্ছিঠিক করেছি কি না বল?
-একদম ঠিক করেছআমি এবার ওর ঠোটে চুমু খেলামচুমুটার সাথে আমার ভালবাসার শক্তি মেশানো ছিলজিভটা যে কখন ওর ঠোটের স্বাদ নিতে নিতে ওর মুখের মধ্যে ঢুকে গেল টেরই পেলাম নাআমি আমার সমস্ত আনন্দটাই ওর ঠোটের মধ্যে উপচে দিতে চাইছিলামএকটা আবেগ চলে এল মনেঠোটদুটোকে পাগলের মতন ওর ঠোটের সাথে মিলিয়ে দিয়ে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছিলাম না কিছুতেই
এবার ওর সামনে এসে আমি ওর চোখের দিকে চাইলামমাথাটাকে দুহাতে ধরে ওর ঠোটটাকে কিছুক্ষণের জন্য মুক্তি দিলামআমার পরম স্বামীকে গর্বের স্বরে বললাম-এই জন্যই তো তুমি সবার থেকে আলাদাআবার চুমু খাই তোমাকে
কম্পুটারটাকে আর দেখতে পাচ্ছিল না ওআমার শরীরটা তখন মনিটরটাকে আড়াল করেছেচেয়ারের উপরই ওর দিকে মুখ করে ওর কোলের উপর চেপে বসলামএবার ওর শরীরের উপর শরীর ছেড়ে মন মাতানো চুমু খেতে লাগলাম ওকে
ও হাঁসছিলবলল-এই রেখা চেয়ার ছেড়ে পড়ে যাবদাড়াও দাড়াওএকটু কাজ আছে ওটা সেরেনি
-এখন কোন কাজ নয়এখন এটা
আমি ওর কানে আমার জিভটা রাখলামকানের লতিতে চুমু খেয়ে ছোট্ট করে চিমটির মতন কামড়ে দিলামআসতে আসতে ওর কানের কিনারায় জিভটা বোলাতে লাগলামনীচে থেকে উপর পর্যন্তকানের ভেতরে ছোট ছোট বৃন্তে আমার জিভটা বোলাতে লাগলামমনে হোল ওর যেন একটু উত্তেজনা আসছে এবার শরীরে
বুকের ব্লাউজটা আসতে আসতে খুলতে লাগলামও আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলপাখীর মতন নরম বুকদুটো উন্মুক্ত করে ওর মুখটাকে চেপে ধরলাম আমার বুকের উপরে
-আমাকে তুমি দুর্বল করে দিচ্ছ রেখা
-দুর্বল নয়দুর্বল নয়আমি তোমাকে ভালবাসি গোদেখ এখানে একটু মুখটাকে রেখে
মুখটাকে রেখে চুপটি করে বসে থাক আমায় না ছেড়ে
নিজের স্তনের বোঁটাদুটোকে ডুবিয়ে দিতে চাইছিলাম ওর ঠোটের ভেতরেওকে বোঁটাটাকে মুখে গ্রহন করতে দিলামওর চুলে হাত বুলিয়ে ওকে চুষতেও আহবান করলামও চুষছিল,জিভের লালায় ভিজিয়ে দিচ্ছিল আমার স্তনের বোঁটাদুটোকেমনে হোল সারজীবন ও যেন আমাকে এমনি করেই পুলক জোগায় সারা শরীরে
চেয়ার থেকে ওকে তুলে বিছানায় নিয়ে এলামএকধাপ নিজেই এগিয়ে গিয়ে শায়ার দড়িতে হাত লাগিয়ে গিঁটটা খুলতে লাগলামএকটু পরেই পায়ের কাছে শায়াটা স্তুপীকৃত হয়ে জমা পড়লশরীরের আবরণটাকে খোলস থেকে বের করতে পেরে আমি খুশীওর দিকে তাকিয়ে আছিও আমাকে দেখছেআকাঙ্খার ইশারাআমার মুখের হাসিটুকুর অর্থ বুঝে নিতে অসুবিধা হোল না ওর
আমি ওর কামনার ধন।। যুগে যুগে যার ইন্ধন জুগিয়ে এসেছে নারীরাস্বেচ্ছায় তার মূল্যবান বস্তুটি তুলে দিয়েছে তার প্রেমিকের নয়তো স্বামীর হাতেসমর্পন করলামআমার সুরভিত উদ্যানও আমাকে শেষ রাত্রি অবধি করলযেন ওস্তাদের মারশুরু হলে শেষ হতেই চায় না

দীপঙ্কর আজ সকালেই চলে গেছে শিলিগুড়ি ওর বউকে আনতেআমার স্বামী বলছিল-এই শোন নাভাবছি প্রথম দিনটা ওদের আমাদের বাড়ীতেই খেতে বলি। -কি বল? এই প্রথম কলকাতায় বউকে নিয়ে আসছেএকসাথে দুজনে মিলে এলে যা আনন্দ হবে নাওদেরও ভাল লাগবেকি বল?
-একদম ঠিক বলেছআমিও তাই ভাবছিলামবউ নিয়ে আসছেপ্রথম কদিন আবার রান্নাবান্না কেন? তার থেকে এখানেই তো ভালএকদম নিজের বাড়ীর মতন মনে করেওদের তুমি নেমতন্ন করে
কাছে এসে আমার গালে একটা চুমু খেল ওবললআমার বউটা না ঠিক আমার মতন
-আর আমার বরটা?
ও হাঁসছিলবলছিল-যেন দীপঙ্কর তোমার খুব প্রশংসা করেবলে একদম খাঁটি বউ পেয়েছ তুমিপ্রকৃত ঘরনীআজকালকার মেয়েরা তো সব উড়নচন্ডীখালি পাখনা মেলে উড়ে বেড়াতে চায়তুমি কত ভাগ্যবান
আমিও হাঁসছিলামবউ এর প্রশংসা অন্যের মুখেবললাম-কেন ওর নিজের বউ কি খারাপ? ছবিতে তো দেখলাম, মুখটা কি সুন্দরএকদম প্রকৃত ঘরনীর মতন
-ঠিক বলেছএকদম ঠিকদীপঙ্কর ওর বউকে কত ভালবাসেদেখতে পায় না বলে রোজ ফোন করেএকঘন্টা দুঘন্টা ফোন নিয়ে বসে থাকেবুকের ভেতর গুমড়ে মরেনতুন বিয়ে করেছে, বউকে কাছে পায় না এটা কি ঠিক? আমি হলে তো মরেই যেতাম
-আর আমি বুঝি তখন খুব আনন্দ পেতাম? আমি মরে যেতাম না? যাকে মন দিয়েছি, শরীর দিয়েছি, ভালবাসা দিয়েছিতাকে ছাড়া আমি বাঁচতাম? চিন্তাই করতে পারি না
দুজনে যেন দুজনকে মুগ্ধ চোখে দেখছিলামএকে অন্যকে ছেড়ে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতিভালোবাসার শব্দটার এমনই মায়াজালযে বিশ্বাসে পতি পত্নী একই বন্ধনে আবদ্ধ থাকে চিরকালপৃথিবীর কোন শক্তি নেই যে তাকে আলাদা করবেভালবাসার এমনই গুন
আমার ঠোটে চুমু খেয়ে ও বলল-তুমি দীপঙ্করের বউ এর কথা জিজ্ঞাসা করছিলে না? আমি যতদূর শুনেছিও নাকি খুব ভাল মেয়েঠান্ডা স্বভাবেরদীপঙ্কর একদম সঠিক মেয়েকে বিয়ে করেছেপ্রার্থনা করি ওদের বিবাহিত জীবন আরো সুখময় হোককি বল? দীপঙ্করকে তো আর বউ এর কথা ভেবে কষ্ট করতে হবে নাওতো কাল থেকেই কাছে কাছে পেয়ে যাচ্ছে বউকেআর চিন্তা কি?
-তুমিই তো কাছে করে দিলে ওদেরএটার জন্য দেখলে না দীপঙ্কর তোমার উপর কত খুশী
-সত্যি খুশীও আমায় বলেছেতোর উপকারটা আমি চিরকাল মনে রাখবআমাকে প্রচুর থ্যাঙ্কস জানিয়ে গেছে
একটু পরে অফিসের কাজে বেরিয়ে গেল ওযাওয়ার আগে বলে গেল আজ তোমার জন্যও একটা সারপ্রাইজ আছেসন্ধেবেলা যখন ফিরব তখন বলব
কি সেই সারপ্রাইজ? এটা ভাবতে ভাবতেই আমার সারাদিন কেটে গেলআগ্রহ আর কৌতূহল নিয়ে সন্ধেবেলা আমি ওর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলামমনে হোল ও বোধহয় আমার জন্য কিছু কিনে আনছে, অফিস ফেরত
কলিংবেলের শব্দ শুনে দরজা খুলে সামনে দেখি মিটকী মিটকী হাঁসছে আমার দিকে তাকিয়ে
-কি হোল ভেতরে আসবে না?
-আমার সারপ্রাইজটা দেখবে না
-কই কোথায়?
আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল কিছুটা দূরেদেখি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছে একটা নীল রঙের নতুন মারুতী সুজুকী ফোরহূইলারআমাকে চমকে দেওয়ার মতন সারপ্রাইজ
-এটা তুমি কিনলে?
-হ্যাঁআমার রেখাকে দেওয়া আমার ভালবাসার উপহার
আমি অবাক চোখে চেয়ে রইলাম ওর দিকেভাবতেই পারছিলাম না এতবড় সারপ্রাইজ অথচ ও কত সহজ ভাবে বলে গেল বেরোনোর টাইমেফিরে এসেছে একটা আস্ত গাড়ী নিয়েএও বোধহয় ওর মতন স্বামী বলেই সম্ভব
আমাকে গাড়ীতে বসাল ওওর হাতে স্টিয়ারিংবলল-চল কোথাও ঘুরে আসিএই শহরটারই কাছে কোথাওআজ আর ঘরে নয়শুধু এই গাড়ীতে তুমি আর আমিএবার তাহলে একটু সেজে নাও
তাড়াতাড়ি সেজেগুজে আবার গাড়ীতে চড়ে বসলামখুশী আর আনন্দতে মনটা নেচে উঠেছেজানলার কাঁচ দিয়ে কলকাতা শহরটাকে দেখছিগাড়ী চলতে শুরু করেছেএ যেন নতুন ভাবে দেখছি শহরটাকেঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছেও বলল-কি দেখছ?
-কিছু নাঐ ফুটপাত আর দোকানগুলো
-আর?
-ভাবছি
-কি?
-কাল থেকে ভাললাগা গুলো সব একটার পর একটা দিয়ে যাচ্ছ আমাকেআমি কি দেব তাই ভেবে পাচ্ছি না
ও আমাকে কাছে ডাকলএই শোন না
আমি কাছে গেলামগাড়ী চলা অবস্থায় ওর বুকে মুখ রাখলামওর এক হাতে স্টিয়ারিং, আর এক হাতে আমাকে জড়িয়ে রেখেছেআবেগে চোখে জল চলে এলও বলল-এই কি ভাবছ বল না?
-ভাবছি, এত ভালবাসছ আমাকেআর এটা যদি কেউ ছিনিয়ে নেয় আমার হাত থেকেও হাঁসলআমাকে জড়িয়ে ধরে আমার মাথায় একটা চুমু খেলবলল-দূর পাগলিতাই আবার কখনও হয় নাকি?
আমি তখনও খুশীর আনন্দে কেঁদে যাচ্ছিআর মনে মনে ভগবানকে ডাকছিভগবান তাই যেন হয়কেউ যেন ওকে কেড়ে না নিতে পারে কোনদিন আমার কাছ থেকেভালবাসার বাঁধনে ও যেন এভাবেই আবদ্ধ থাকে চিরকালচিরজীবনের জন্যওকে ছাড়া এক মূহূর্তের জন্য বেঁচে থাকা? আমি কোনদিন ভাবতেই পারি না
আমরা অনেকরাত অবধি গাড়ীতে ঘুরলামহোটেলে রাত্রিরে ডিনারটাও সারলামফিরে এলাম দুজনেশরীরি ভালবাসায় আরো কিছুক্ষন আনন্দ নিলাম, দুজনে দুজনের সঙ্গমসুখ উপভোগ করলামওর বুকে মুখ রেখে ঘুমিয়েও পড়লামকিন্তু স্বপ্নের মধ্যে কেউ যেন আমার কানে কানে কি বলে গেল-
এই রেখা শুনছশুনছএই রেখাআমি খুব চাপা স্বরে শুনতে পারছিসে বলছে-তোমার স্বামীকে শেষ পর্যন্ত ভালবাসা দিয়ে ধরে রাখতে পারবে তো রেখা? এই রেখা এই রেখা তুমি পারবে তো? শুনছ।"
আমি ধরমড় করে বিছানার উপর উঠে বসলামও ঘুমোচ্ছে অঘোরেআমার মাথার উপরে ঘাম হচ্ছেএক গ্লাস জল খেলাম ঢকঢক করেকপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লস্বপ্নটা কি সত্যি হতে যাচ্ছে নাকি? এ মা এমন স্বপ্ন কেন আমি দেখলাম? কি হবে তাহলে? চিন্তায় আমার বাকী রাতটুকু ঘুমই হোল না আর
সকালবেলা ও ঘুম থেকে ওঠার পর ওর হাতে চায়ের কাপটা ধরিয়ে ওকে বললাম-জানো কাল রাতে কি একটা বাজে স্বপ্ন দেখেছি আমি
-কি স্বপ্ন?
-কে যেন আমাকে বারবার বলছেএই তোমার স্বামীকে ধরে রাখতে পারবে তো? পারবে তো? কি বাজে স্বপ্ন
-স্বপ্ন আবার সত্যি হয় নাকি?
-কি জানি? তারপর তো আর ঘুমই হোল না আমার
ও চা খাচ্ছিলমজা করে আমাকেও বলল-আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি কয়েকদিন আগে
-কি স্বপ্ন?
-আমাকেও একজন বলছে-তোমার বউকে ধরে রাখতে পারবে তো? পারবে তো?
- দূর তুমি খালি ফাজলামি মারো
ও হাঁসছিলবলল-এই শোনএবার আমি বাজার যাবওরা আসছেসন্ধেবেলাই আসতে বলবরাত্রে ডিনারের নেমতন্নতুমি কিন্তু আজ একদম ফাটিয়ে রান্না করবেআমি অফিস থেকেও ছুটী নিয়েছিসারাদিন বাড়ীতেই থাকব
আতিথেয়তার এমন তোড়জোড়এ যেন আমার স্বামী বলেই সম্ভবও বাজারে গেলপ্রচুর বাজার করে বাড়ী ফিরলআমি রান্নার পদ কি হবে তাই ঠিক করলামছোটবেলায় মায়ের হাতে রান্না শিখেছিসবাই বলেএমন রান্না খেলে নাকি মুখে লেগে থাকেদীপঙ্কর আর ওর বউ এর জন্যও যত্ন নিয়ে রান্না করলামওরা প্রথমবার একসাথে আমার বাড়ীতে আসছেআমার স্বামী সব ব্যাপারেই আমার যেমন প্রশংসা আর গুণগান করে সেটা প্রমান করার জন্য আমিও যেন বদ্ধপরিকর ছিলাম
ঠিক তখন সন্ধে ছটাদরজার কলিংবেলের উপর কারুর হাত পড়লওটা বাজছে সুর করেআমার স্বামীকে আমি বললাম-দেখ তো ওরা এসেছে বোধহয়
দরজা খুলতেই দুজনে একসাথে ভেতরে ঢুকলযেন আদর্শ মানানসই দুজন সুন্দরী স্বামী-স্ত্রীআমরা অতিথি আপ্যায়ন শুরু করে দিলামমেয়েটার মুখের দিকে আমি তাকাচ্ছিলামওর মুখশ্রী খুব সুন্দরকিন্তু কথা খুব কম বলে মেয়েটাবারবার আমার মুখের দিকে আর আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকাচ্ছিলশোবার ঘরে ওকে আলাদা ভাবে ডেকে নিয়ে ওর থুতনীতে হাত রাখলামতোমার নাম কি ভাই?
-দামিনী
-বাবাদীপঙ্করের সাথে দামিনীদারুন মিলেছে তোতা তুমি এবার খুশী তো? এবার আর স্বামী তোমার কাছছাড়া হবে নাকি বল
জবাব দিল না আমার কথারহয়তো লজ্জায়কিন্তু ওর চোখে মুখে কি যেন একটা ফুটে উঠলযে ভাষার অর্থ আমি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারলাম না
রাত্রে খাবার টেবিলে আমি দীপঙ্করকে বললাম-কি ব্যাপার? সেই আসার পর থেকে দেখছি বউ এর সামনে কথাই বলছেন নাআপনারা দুজনেই চুপচাপআর আমরা একাই কথা বলে যাচ্ছি বকবক করে
দীপঙ্কর মাংসের হাড় চিবোতে চিবোতে শুধু বলল-আপনার হাতের রান্না খুব চমৎকারদারুন করেছেনআমার বউকে এবার একটু শিখিয়ে দিন তোওকে তো এইজন্যই এখানে নিয়ে এসেছিওঃ এমন রান্না অনেকদিন খাইনি
ওর বউ আড়চোখে দীপঙ্করের দিকে তাকাচ্ছিলআমার স্বামীও তখন আঙুলে লেগে থাকা মাংসের ঝোলটা চেটেপুটে খাচ্ছেআমি এবার দুজনের দিকে তাকিয়ে বললাম-আপনারা কাল থেকে এখানেই খাবেন দুজনেএখন কয়েকদিনরান্নাবান্নার ঝেমেলা আর ফ্ল্যাটে পোয়াতে হবে নাতার থেকে আমার এখানেইএকদিন দামিনীও রান্না করবেআর আমরা সবাই আনন্দ করে খাবকি বলুন
কেউ কিছু না বললেও আমার স্বামী হঠাৎ বলে উঠলতাহলে হয়ে যাক একদিনএই দীপঙ্করতোমার বউ এর হাতে রান্না আমরাও খেতে পারছি একদিনকি বল
দামিনী আমার স্বামীর মুখের দিকে তাকালোকি রকম একটু অন্যরকমঠিক বুঝতে পারলাম না ওভাবে তাকানোর মানেটাকেএতক্ষণ বাদে ও শুধু বলে উঠলকালকে আমাদের ফ্ল্যাটে আসুন আপনারা দুজনেআমি আপনাদের চা করে খাওয়াব
পরের দিন সকালে শরীরটা খুব খারাপবিছানা ছেড়ে উঠতেই পারছি নামেয়েদের এই একটা দিনই খুব যন্ত্রনাদায়কযখন পিরিয়োডের ব্যাথা ওঠেমনটা খারাপ করে ওকে বললাম-মনে হচ্ছে তোমার বন্ধুর ফ্ল্যাটে আজ যেতে পারব নাভীষন কষ্ট হচ্ছে
-কি করব তাহলে? দীপঙ্করকে না বলে দিই
-না না তুমি একা ঘুরে এসওর বউ নাহলে খারাপ ভাববেআমি না হয় অন্য একদিন
-ঠিক আছে ঠিক আছেআমি এখন অফিসে যাচ্ছিবিকেলে ফোন করব তোমাকেতখন যদি তোমার ব্যাথাটা কমে যায়
সারাটা দিন শুধু যন্ত্রনাতেই কুঁকড়ে গেলামও আমাকে বিকেলে ফোন করলকিন্তু আমি আর যেতে পারলাম নাসন্ধে থেকে রাত্রি পর্যন্ত ঐ একভাবেই বিছানায় কাটিয়ে দিলাম শুয়ে শুয়ে
রাত্রি তখন বাজে নটাও এখনও দীপঙ্করের ফ্ল্যাট থেকে ঘরে ফেরেনিজমিয়ে গল্প করছে মনে হয়ভাবলাম মোবাইলে একটা ফোন করব কিনা? তারপর ভাবলামএইতো কাছেই ওদের ফ্ল্যাটআসতে তো দুমিনিটগল্প করছে করুকআমি এভাবেই আরো কিছুক্ষণ শুয়ে কাটিয়ে দি
জানিনা চোখটা বুজে এসেছিল কখনদরজায় কলিংবেলের আওয়াজ শুনে কষ্ট করে উঠে গেলামদেখলাম ও দাড়িয়ে
-ভেরী সরি রেখাআমার দেরী হয়ে গেলতুমি ঘুমিয়ে পড়েছিলে?
-হ্যাঁ তুমি গেছিলে?
-গেছিলামআর বোল না দীপঙ্করটা বাড়ী নেইআমাদের যেতে বলে নিজেরই পাত্তা নেই
-কেন?
-অফিসের কাজ পড়েছেওর ফিরতে নাকি রাত্রি হবেবউটা একা ছিলবলল-বৌদি আসেনি? তোমার কথা বললামআমাকে খুব যত্ন-আত্নি করলচা করে খাওয়ালোনিজের সন্মন্ধে অনেক কথা বললগল্প করতে করতে কখন যে সময় চলে যাচ্ছে খেয়ালই নেইঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম বারোটা বাজেতাই চলে এলামতুমি একা রয়েছ
-অ্যাঁ বারোটা? দীপঙ্কর এখনও ফেরেনি?
-নাওর বউ একাই রয়েছে বাড়ীতে
ওকে যেন সেদিন কেমন অন্য মুড এ দেখলামরাত্রে শোয়ার আগে বেশী কথা বলল নাএকে শরীর খারাপমিলন ঘটানোর শক্তি নেই শরীরেআশা করলাম একটা চুমু অন্তত পাবসেটাও যখন পেলাম নাতখন পাশ ফিরে শুধু মনটা খারাপ করে শুয়ে রইলাম
ভেতর থেকে কে যেন খোঁচা দিচ্ছিল বারবারমনে মনে ভাবছিলাম দূর ছাই ঐ বাজে স্বপ্নটাকে কেন যে দেখতে গেলাম? তাহলে কি জীবনে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে এবার?
দীপঙ্করের বউটা বেহায়া আছে তো? আমি নেই, দীপঙ্কর নেই অথচ এতঘন্টা আমার স্বামীর সাথে বসে বসে গেঁজিয়ে গেলদূর ছাই কিসব উল্টোপাল্টা ভাবছিএকদিনেই আমার স্বামীটা এত খারাপ হয়ে গেল? আমি বোধহয় সন্দেহ প্রকাশটা একটু বেশী পরিমানে করছিনিজের উপরই রাগ হচ্ছিলওতো আমাকে এত ভালবাসেঅকারণে এইভাবে কাউকে দোষ দেওয়াটা ঠিক নয়আমি পরের দিন আবার যথারীতি স্বাভাবিক হলামপিরিয়োডের ব্যাথাটাও অনেকটা কমে গেছেওকে বললাম-এই আজ আমি যাব তোমার সাথে ওদের ফ্ল্যাটে
আমাকে অবাক করে ও বলল-দীপঙ্কর ওর বউকে নিয়ে আজ একটু ঘুরতে বেরোবেআমাকে সকালে ফোন করেছিল,তুমি তখন ঘুমিয়ে ছিলেবলল-বউকে নিয়ে অন্য একদিন এসআমার গাড়ীটা চেয়েছিলআমি দিতে রাজী হয়েছি
-তুমি আমাদের কথাও বললে না কেন? একসাথে যেতামআনন্দ হোত
-তোমার শরীর খারাপতুমি যেতে পারবে কিনা তাই বলেনিআর তাছাড়া বিয়ে করে বউকে নিয়ে এই প্রথম বেরোচ্ছে, আমি আর ওদের আনন্দতে ব্যাঘাত ঘটাতে চাইনি
-ঠিক আছে যাকতুমি আজ তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরো কিন্তুএকসাথে দুজনে মিলে গল্প করব
ও কাজে বেরিয়ে গেলযাওয়ার আগে ওর কাছে ঠোটের চুমুটা আবদার করে চাইতে হোলও আমাকে চুমু দিলকিন্তু সেই পুরোন ভালবাসার মিষ্টি স্বাদটা কিন্তু চুমুর মধ্যে মেশানো ছিল না
সারাটা দিন এরপরে বাড়ীতে একা একা কাটিয়ে দিলামসন্ধে তখন সবে উত্তীর্ণ হয়েছেভাবছি ও কখন ফিরবেছটা থেকে সাতটা, আটটা নটাও যখন বেজে গেল, মনটা ভীষন চঞ্চল হয়ে উঠলমোবাইল নিয়ে ওকে ধরার চেষ্টা করলামতিন চারবার রিং করলামদেখলাম মোবাইল সুইচ অফভীষন একটা বিরক্তি আর হতাশার ভাব ফুটে উঠল আমার চোখে মুখেএতকরে বললাম তাও তাড়াতাড়ি ফিরল নাযাকে নিয়ে দুবছরের কাছাকাছি ঘর করছি, তার হঠাৎ এমন পরিবর্তন? এর রহস্যটা কি?
আমার ভিতরটা রাগে ছটফট করছিলভাবছিলাম ও এলেই ওকে সব রাগ উপড়ে দিএকজন কেমন বউ নিয়ে ঘুরতে গেছেআর আমি কিনা ঘরে বসে হাত কামড়াচ্ছি আঙুল কামড়াচ্ছিরাত্রি এগারোটা বাজে আমার স্বামী এখনো ফেরেনিএর থেকে খারাপের খারাপ আর কি আছে?
মাথায় বাজটা পড়ল একটু পরেইমোবাইলে বেশ কিছুক্ষণ পরে দেখি একটা ফোনআমি তাড়াতাড়ি রিসিভ করলামবললাম-হ্যালো কে বলছেন?
ও প্রান্ত থেকে গলা ভেসে এলগলাটা দীপঙ্করেরবৌদি আমি দীপঙ্কর বলছি
-হ্যাঁ বলুন
-সর্বনাশ হয়ে গেছে
-কি?
-আমি বলছিমনটাকে একটু শক্ত করবেনআমি খুব ভেঙে পড়েছিজানি আপনিও পড়বেনতাই সব এসে বলছিএখন এটা যেন জানাজানি না হয়
-কি হয়েছে বলবেন তো?
-দামিনীকে নিয়ে ও কোথায় চলে গেছে
-কে?
-আপনার হাজব্যান্ড
-কি যা তা বলছেন
-সত্যি বলছিআমাকে দামিনী ফোন করেছিলবলল-তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্কের এখানেই শেষআমি চলে যাচ্ছিআমাকে আর ধরার চেষ্টা কোর নাতুমি আমাকে খুঁজেও পাবে না আর
-কিন্তু আমার হাজব্যান্ড?
-ঐ তো সাথে রয়েছে দামিনীর সঙ্গেদামিনীকে নিয়ে ও পালিয়েছে
টেলিফোনে কথা বলতে বলতে আমি কাঁপছি। -কিন্তু আপনার তো বউকে নিয়ে ঘুরতে বেরোনোর কথা?
-ঘুরতে? আমি কাল থেকে কলকাতায় নেই বৌদিজামশেদপুরে এসেছি অফিসের কাজেতারমধ্যেই ওরা দুজন এসব কান্ড করেছে
টেলিফোনের লাইনটা তখনও দীপঙ্কর ছাড়েনিআমি আসতে আসতে কথা বলার শক্তিটা হারিয়ে ফেলছিহাত পা গুলো অবশ হয়ে যাচ্ছেশরীরটা ক্রমশ পাথরের আকার ধারন করতে শুরু করেছেমোবাইলটাকে একপাশে রেখে আমি স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি মেঝের দিকেচোখের কোনাটায় জল চিকচিক করছেএক্ষুনি ওটা ঝরঝর করে ঝড়ে পড়বেভেতরটা পুরো ফেটে যাচ্ছেনিজের মনকে সান্তনা দিতে পারছি নাখালি ভাবছি আমি তো এমনটা চাইনিতাহলে কেন এমনটা হোল? এ আমার কি করলে তুমি ভগবানএখন আমি কার কাছে যাব? কিভাবে বাঁচব বাকী জীবনটাহাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিলাম
দীপঙ্কর ওদিক থেকে ফোনে তখনও চেঁচিয়ে যাচ্ছেবৌদি দোহাইরিকোয়েস্ট করছি দুম করে কিছু করে বসবেন নাআমি এখনি গাড়ী ধরছি কলকাতায় ফিরব বলেআপনি নিজেকে একটু শক্ত করুনআমাকে দেখুন তো? আমিও তো আপনারই জায়গায়আমি আসছিপ্লীজ যতক্ষণ না ফিরছিকিচ্ছু করবেন নাবোদি আপনি শুনছেন? বৌদি-
শরীরটাকে পাথরের মতন করে কতক্ষণ বসে রইলুম জানি নাআমার তখন আর নড়াচড়া করার শক্তি নেইবুঝতে পারছি জীবনে চরম একটা অঘটন ঘটে গেছে এবারযা হয়েছে আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি কোনদিনএমন নির্লজ্জ কারণ ঘটালো দীপঙ্করের বউটাকাল যখন ওকে দেখেছিলাম এমনটা যে হবে তাতো বুঝিনিকি এমন হোল যে একদিনেই আমার স্বামীটাকে কব্জা করে নিলমেয়েটাকে দেখে তো এতটা খারাপ মনে হয় নিতাহলে?
যে লোকটা আমাকে নিয়েও এত বিশ্বাসের সাথে ঘর করল তার একদিনেই এমন চরিত্র বদল? এ কি করে সম্ভব? আমার স্বামীর স্বভাবে তো কোনদিন দোষ চোখে পড়ে নিতাহলে? কি করে?
মাথাটা বনবন করে ঘুরছেমনে হচ্ছে পড়ে যাব এবারচক্কর দিচ্ছেকোনরকমে দেওয়াল ধরে ধরে বিছানার দিকে গেলামএখন একটা ঘুমের ওষুধ দরকারআমি ঘুমোবভাল লাগছে নাজানি না কাল সকালে উঠে সূর্যের মুখ দেখতে পাব কিনাতবুও আমি ঘুমোবকারন আমার কিছুই ভাল লাগছে না
দীপঙ্কর এলো সকালেকলিংবেলটা বাজছিল আমি শুনতে পাইনিঘুমে অচৈতন্যদীপঙ্কর বাইরে থেকে মুখেও ডাকছেবৌদি দরজা খুলুনকারন ও ভাবছে আমি আবার সত্যি সত্যি কিছু করে বসেছি কিনাঅনেক ডাকাডাকির পর বিছানা থেকে উঠে দরজা খুললামও সারারাত বাসে চেপে এসেছেচিন্তায় ঘুমোতে পারেনিআমার দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু বলতে লাগলআমি শুনছি কিন্তু আমার কথা বলার শক্তি নেইকালকের ঘটনা যেন আমার শরীরের সব শক্তি কেড়ে নিয়েছে
-কাল রাত্রে কিছু খেয়েছেন?
-না
-আপনার শরীর ঠিক আছে তো?
-না ঠিক নেই
-এখন কিছু খেয়ে নিন বোদিআমি কচুরী টচুরী কিছু কিনে নিয়ে আসব? খাবেন?
-না না আমি খাব নাভাল লাগছে না
আমার আবার কান্না আসছে চোখেদীপঙ্করের চোখে মুখে হতাশাও একনাগাড়ে বলে যাচ্ছেআর আমার চোখ দিয়ে ফোটা ফোটা জল গড়িয়ে পড়ছে মাটিতে
-কি যে হোল কিছুই বুঝতে পারলাম নাশিলিগুড়িতে আমার ফ্ল্যাটে ওকে আমি নিয়ে গেছিলামওখানেই দামিনীর সাথে ওর প্রথম আলাপহয়তো এ ব্যাপারটা ও আপনাকে বলেনিনিজেই বলল-তুই বউকে শুধু শুধু এখানে ফেলে রেখেছিস কেনতার থেকে আমার ওখানে চলে আয়আমি ফ্ল্যাট ঠিক করে দিচ্ছি তোদের জন্যআমিও খুশী হলামদামিনীতো হলইকিন্তু ওর মনে যে এই মতলব ছিল জানতাম নাদামিনী বরাবরই একটু অন্য টাইপের মেয়েপ্রচন্ড জেদীবাবার পয়সা আছে প্রচুরআমাকে বলল-বিয়ে করে বউকে সময় দিতে পারো নাআমি কিন্তু এরকম করলে ডিভোর্স চাইব তোমার কাছেদেখলাম সমস্যার সমাধান করার এটাই একমাত্র উপায়আমি সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনিকলকাতায় আপনাদের এখানে চলে এলামএসেই যত বিপত্তি
দীপঙ্কর চাইছিল থানায় গিয়ে একটা ডায়েরী করতেওকে মানা করলামনা না এসবের দরকার নেইসাতকান হবেসবাই ছি ছি করবেআর যে চলেই গেল, তাকে ওভাবে ফিরিয়ে এনে লাভ কি?
আমার কান্না থামল নাদীপঙ্কর বলে যাচ্ছে। -আপনাদের তো আসার কথা ছিল আমার ফ্ল্যাটেচায়ের নেমতন্নআপনি যেতে পারেন নিহঠাৎই অফিস থেকে আরজেন্ট কলআমাকে জামশেদপুর যেতে হবেদামিনী দেখলাম প্রচন্ড অসুন্তুষ্টআমার উপরে রাগ যেন থামতেই চাইছে নাঅনেক কষ্টে ওকে বুঝিয়ে বললাম-তুমি তো আছওরা আসুক নাতোমার ভাল লাগবেআমি বাইরে যাচ্ছি ওদের কাউকে বলছি নাতাহলে ওরা আসা ক্যানসেল করে দেবেআমি চলে গেলামতারপরেই কি যে হয়ে গেলভাবতেই খারাপ লাগছে
দীপঙ্করের কথা শুনে আমার হঠাৎ খেয়াল হোল, দীপঙ্কর যে জামশেদপুর গেছে, সেটা কিন্তু আমার স্বামী বেমালুম চেপে গেছে আমার কাছেও বলেছিল অফিসের কাজে গেছেফিরতে রাত্রি হবেতাই নাকি দামিনীর সাথে একা একা বসে গল্প করেছেআমি দীপঙ্করকেও বললাম সেই কথাও শুনল অবাকও হোলকিন্তু দুজনের একটা চিন্তাই মাথায় বারবার ঘুরপাক খেতে লাগলসেদিন কি এমন হয়েছিল যে দুজনে এমন ঘৃণ্য বেপোরোয়া সিদ্ধান্ত নিলসন্ধেবেলা আমিও ছিলাম নাদীপঙ্করও ছিল নাতাহলে? কি এমন ঘটল যার জন্য পরের দিনই ওরা দুজনে মিলে পালিয়ে গেল একসাথেএ প্রশ্নের উত্তর কারুর জানা আছে কি? উত্তরটা আমিও জানি নাদীপঙ্করও না
এমন একটা কেলেঙ্কারীতে প্রাণের মানুষটা জড়িয়ে পড়লে কষ্টতো হয়আমারও হয়েছিলজানিনা এই কলঙ্কের বোঝা সারাজীবন আমাকে বইতে হবে কিনাকিন্তু পাপ ধোয়ার জন্য আমিই বা কি করতে পারি? মনে হচ্ছিল জীবনটা যেন এই পঁচিশ বছরেই থেমে গিয়েছেআর টানতে পারছি না
তিনদিন বাদে সেই দূঃসংবাদটা পেলামআমার ভেতরটা হূ হূ করে উঠলহাজার হোক ও আমার স্বামীআমারও তো মন বলে একটা কথা আছেখবরটা এলো চিঠির মাধ্যমেদীপঙ্কর আমার হাতে ধরাল চিঠিটাবলল-ও চিঠিতে মানা করেছিল এটা আপনাকে দেখাতেকিন্তু না দেখিয়ে আমিও পারলাম নাবলতে বলতে ওর চোখেও জল চলে এল
-কিসের চিঠি?
দীপঙ্কর বলতে চাইছিল নাআমিই নিজেই দেখলাম খোলা খামের বাঁদিকে লেখা Mr. Prasenjeet Mitra expired today. একি? নিজের মৃত্যু সংবাদ নিজের চিঠিতেঅন্যায় ও করেছে তা বলে মৃত্যুসংবাদএটা কেন?
চোখ ফেটে জল আসছিলচিঠিটা খুললামঝাপসা চোখে ওর দীর্ঘ চিঠি পড়ার চেষ্টা করলামচিঠিটা আমাকে ও লেখেনিলিখেছে দীপঙ্করকে
প্রিয় দীপঙ্কর,
এই চিঠি লিখতেই যত সময়তারপর এটা খামে বন্ধ করে স্পীডপোস্ট করব তোমায়আর কয়েক ঘন্টা পরেই আমার মৃত্যুতুমি যখন এই চিঠি পাবে তখন আমি ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছি
একটাই অনুরোধ তোমার কাছেএই চিঠির কথা রেখাকে বোল নাও বড় ভালো মেয়েআমি কোনদিন ক্ষমা পাব না ওর কাছেতাই এই চিঠি শুধু তোমাকেই লেখাঅনেক কষ্ট দিয়েছি, তোমাদের দুজনকেইতাই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছি আজযে কলঙ্কের দাগ আমি আমার জীবনে লাগিয়েছি, তার পরিণতি এমন হবে এটাতো জানাই ছিলকিন্তু সত্যি বলছি বিশ্বাস কর, এমনটা যে হোক আমি কিন্তু চাইনিকি করে যে হয়ে গেল বুঝলাম না
রেখাকে বিয়ে করে আমি তো সুখীই ছিলামতুমি নিজেও দেখেছস্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমাদের নিজেদের মধ্যে মনের কত মিলতাহলে এমন কেন হোল? বলি তোমাকে সেই ঘটনাটা
আমি যেদিন তোমার সাথে শিলিগুড়ি গেলামসেদিন তোমার বউই একপ্রকার জোড় করেছিল আমাকেবলতে পারো হূমকীতুমি যেই দোকানে গেছ, তোমার বউ আমাকে বলল-আপনি ওর বন্ধু বলে তাই আপনাকে বলছিকিছু একটা ব্যবস্থা করুননইলে আমি কিন্তু ওকে ডিভোর্স দিয়ে দেবকথাটা খারাপ লেগেছিল আমারতাই তোমার কথা চিন্তা করেই আমি কলকাতায় তোমার বাসার ব্যাবস্থা করে দিইআমি বুঝতে পেরেছিলাম তুমি তোমার বউকে যৌনতৃপ্তি দিতে পারো নাএতে তোমার কোন দোষ নেইএকসাথে থাকলে তখন আর কোন সমস্যা হবে নাতাই কলকাতায় ফিরেই ফ্ল্যাটটা ঠিক করলামআমি রেখাকেও জানিয়েছি সেকথা
কিন্তু তোমার বউ আমার সাথে ছল করলকিছু মনে কোর না দীপঙ্করবউটি তোমার মোটেই ভাল হয় নিআমি কি রেখাকে অবাঞ্ছিতা, অনাহূতা আর উপেক্ষিতা করতে চেয়েছিলাম? অথচ তোমার বউই আমাকে শারিরীক সন্মন্ধে বাধ্য করলএখন এই পোড়ামুখ নিয়ে আর কি করতে যাব ওর কাছে? তাই-
তুমি আমাকে সেদিন ফোনে জানাও নি যে তুমি নেইতাহলে আমি হয়তো যেতাম নারেখাও যখন যেতে পারল নাআমার একা যেতে এমনি ইচ্ছে ছিল নাকিন্তু যাওয়ার পরই ও আমাকে নিয়ে বেহায়াপনাটা শুরু করল
ঘরে ঢুকতেই প্রথমে ওর আসল চেহারাটা বুঝিনিদেখলাম খুব সেজেছেঠোটে লাল লিপ্সটিকভালোই গল্প করছিলতারপরই হঠাৎ বলে উঠল-আপনি এই জন্যই কি নিয়ে এলেন আমাকে?
আমি বললাম-কেন?
ও বলল-আপনার বন্ধু তো এখানে এসেই আমাকে ফেলে জামশেদপুরে পালালএই ব্যাপারে কি বলবেন?
আমি বললাম-ও এই? ওতো চলে আসবে ২-১ দিনেই
হঠাৎ আমার দিকে ঝুকে তোমার বউ বলল-এই দুদিনে আমার চলবে কি করে?
আমি ঘাবড়ে গেলামবুঝলাম তোমার বউ এর খুব সেক্সএরপর আমার গায়ে পড়ে ন্যাকার মতন বলল-আমাকে তুমি বলুন নাআমি তো বয়সে ছোট আপনার কাছে
আমি বললাম-তোমার আপত্তি নেই তো?
ও বলল-না না আপত্তি কেন হবে? আমিও যদি তুমি বলি আপনাকে?
বুঝতে পারলাম, ব্যাপারটা শুধু তাড়াতাড়ি নয় একপ্রকার বাড়াবাড়ি হচ্ছেএরপর তোমার স্ত্রী দামিনী চরম নির্লজ্জতার পরিচয় দিল
আর কি বলব? ও খুব সহজেই ওর শরীরের মানচিত্রগুলো উদ্ভাসিত করে দিল আমার সামনেদেখছি নিজের গায়ে জড়ানো শাড়ীটা খুলছে আমার সামনেযেন কোন দ্বিধা নেইলজ্জ্বা নেইবেহায়ার মতন নিজেকে উন্মুক্ত করছে
ওকে এভাবে শালীনতার সীমা লঙ্ঘন করতে দেখে আমিও খুব বিরক্ত হয়ে উঠেছিরেগে বললাম-এ কি করছ? তোমার লজ্জা নেই
তোমার বউ আমাকে জবাবে বলল-ন্যাকামি কোর নানিজের বউ যখন শাড়ী খোলে তখন তো কিছু বল না?
আমি তখন চোখের সামনে একি দৃশ্য দেখছিএ বড় বিরক্তি করকি করব বুঝতে পারছি নাঘাবড়ে যাচ্ছি আরো
ও আমাকে আরো বিপদে ফেলে দিয়ে বলল-তোমাকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম, ভেতরে ভেতরে ভীষন ছটফট করেছিলামতুমি বোঝ না মেয়েরা কি চায়? এবার একটু জাগো তুমিজাগতে পারছ না? আমি থাকতে পারছি নাআমাকে তৃপ্ত কর প্লীজ
আমাকে তখন চুমু দেওয়ার জন্য লিপস্টিক চর্চিত ওষ্ঠদ্বয় বাড়িয়ে দিয়েছে তোমার স্ত্রী দামিনী
আমি বললাম-না না একি করছ ছাড়ো আমাকে? এটা ঠিক নয়
ও বলল-কি ঠিক নয়? এবার যেন ওর রুদ্র মূর্তিলজ্জা করে না? এতদিন একজনের সাথে ঘর করে বন্ধুর স্ত্রীর সাথে গা ভাসিয়ে দিতে? আমি যদি চেঁচিয়ে এখন লোক ডাকি? বলি তুমি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসব করছআমাকে জোড় করে রেপ করছ তুমি
বিশ্বাস কর আমার তখন মনে হচ্ছিল সজোড়ে একটা চড় মারি ওর গালেতারপর যা হয় দেখা যাবেকিন্তু কেন জানি না ও আমাকে দ্বিতীয়বারের জন্য আবার ছল করল আমার সাথেআমাকে বলল-বিশ্বাস কর, আমি শুধু আজকের দিনটা চাইছি তোমার কাছেআর কোনদিন বলব নাপ্লীজ
আমার ঠোটে তখন ও ঘনঘন চুমু খেয়ে চলেছেআমি সেই দৃশ্য ভেতর থেকে মেনে নিতে পারছি নাশুধু ভাবছি, ক্ষনিকের অস্বস্তিকিন্তু এটা থেকে যদি চিরকালের স্বস্তি পাওয়া যায় তাহলেই আমার মুক্তি
আমার শরীরটা শামুকের মতন গুটিয়ে যাচ্ছিলকিন্তু ও তবু কসুর করছিল না আমাকে জাগিয়ে তুলতেপ্রাক সহবাসের সবরকম কলাকৌশল ও নিজেই প্রয়োগ করতে শুরু করল আমার সাথেনিজের হাতে ও আমাকে বিবস্ত্র করতে শুরু করলওর কামক্ষুধার তাড়না দেখে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলামআমি উলঙ্গও নিজের জিভটা কয়েক মূহূর্তের জন্য নিজের ঠোটের উপর বুলিয়ে নিলচকচকে ভিজে ভিজে ঠোটে যেন পৃথিবীর সমস্ত কামনা আগুনের মতন ঝলসে উঠছে
বিশ্বাস কর দীপঙ্কর আমি কিন্তু এটা চাই নিশুধু এটাই বুঝতে পারছিলামতিনমাসে যে সুখ তুমি তোমার বউকে দিতে পারো নিসেটাই ও পুষিয়ে নিতে চাইছে আমার কাছ থেকেও আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকে পেটে চুমু খাচ্ছিলআমি চেষ্টা করছিলাম নিজেকে নিশ্চল রাখারও বলপ্রয়োগে আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চাইছেআমি চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব ওর কামনায় সাড়া না দেওয়ারহঠাৎ অতর্কিত আক্রমণে ও আমাকে নীচে শুইয়ে দিল এবারেআমি কি করব বুঝে না উঠতেই আমার বুকের উপর ভার রাখল দামিনীযেন আমার ইচ্ছা আর অনিচ্ছার উপর আর নির্ভর করবে না ওআমাকে চুমু দিয়ে রক্তবর্ণ করে দিচ্ছিল আমার ঠোটটাকেউদাম হয়ে আমাকে নীচে শুইয়ে রেখে আমার দুদিকে পা ছড়িয়ে বসল দামিনীপ্রায় আধঘন্টা ধরে বিপরীত বিহারে তৃপ্ত করল নিজেকে
আমার সঙ্গে অতক্ষণ ধরে যুদ্ধ করেও আঁশ মেটেনি তোমার বউয়েরআমাকে ছাড়তেই চাইছিল নানগ্ন শরীরটাকে আমার শরীরের সাথে লেপ্টে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকল বেশ কিছুক্ষণও ঠোটের চুমু দিয়ে আমার ঠোটটাকে আঁকড়ে ধরছিল বারবারআমি শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই রেহাই চাইলাম ওর কাছে। -এবার আমাকে ছাড়োঘরে ফিরতে হবে আমাকেওর মুখে কেমন একটা শয়তানি হাসিআমার সমস্ত চিন্তাধারাকে ঘেন্নার দিকে নিয়ে ফেলছিলওর প্রতি একটা বিদ্বেষ আসছিলআমার অসহায় মূহূর্তটাকে কাজে লাগালো দামিনীতবুও নিজেকে সংযত করে বললাম-আমি বুঝতে পারছিতোমার ভিতরটা হাহা করছিল এতদিনতাই বলে এটা তুমি করলেতুমি দীপঙ্করের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলেকাজটা তুমি ঠিক করলে না দামিনীআমার বন্ধুকে আমি ঠকালামনিজের বিবেকের কাছে কোনদিন উত্তর দিতে পারব?
দামিনীর যেন কোন হেলদোল নেইও আমাকে নির্লজ্জ্বের মতন বলল-এখনকার দিনে এসব চলে নাসবাই এখন যে যার মতন চলেআমার স্বামী আমাকে করে নাও কোথায় কি করে বেড়ায় আমি দেখতে যাই?
এবার আমি রেগে গিয়ে চড় মারলাম ওকেকিন্তু আশ্বর্য আমার চড় খেয়ে ও কিন্তু রাগল নাবরং আমার কাছে এসে বলল আমাকে-আবার চড় মারো আমাকেদেখ আমি কি করি?
রেগে গিয়ে বললাম-কি করবে আমাকে?
ও হঠাৎ আমার মুখটা ওর নগ্ন বুকে চেপে ধরলএবার পাগলের মতন মুখ নীচু করে চুমু খেতে লাগল আমার কপালে গালে মুখেবারবার একই কথা বলতে লাগল-আমি ভালবাসি তোমাকেযাকে ভালবাসি তাকে কি করে আঘাত দিইআমি তোমার চড় খেতে রাজী আছিপ্লীজ একটু আদর কর আমাকে
তুমি নিশ্চই বুঝতে পারছো দীপঙ্করঐ মূহূর্তে আমার অবস্থাটা কি রকমএকবার মনে হোল তোমার বউ নিশ্চই মানসিক রোগীনইলে এরকম একটা কান্ড ঘটায় কি করে? আমাকে হতবাক করে দিয়ে ও এবার শেষ অস্ত্রটা ছাড়লআমাকে করুন স্বরে বলল-আমিই শুধু খারাপ? আর বাকীরা ভাল? সত্যি কথা বললাম, তোমার বিশ্বাস হোল নাবলতে বলতে ও ছল করে কাঁদতে শুরু করল আমার সামনেআমি বললাম-কি হয়েছেটাকি বলবে তো?
দামিনী বলল-তুমি যদি বিশ্বাস না কর আমার কিছু করার নেইআমি কারুর বিশ্বাস ভঙ্গ করিনিকরেছে তোমার বন্ধু আর তোমার বউ
আমি চোখ বড় বড় করে বললাম-মানে?
ও বলল-না থাক আমি বলব নাতুমি বাড়ী যাও
আমার তখন জেদ চেপে গেছেওকে বললাম-বলতেই হবে তোমাকেকি হয়েছে বল?
ও বলল-বলছি না বাড়ী যাও
এবার আমি ওর চুলের মুঠিটা চেপে ধরলামবল বলছিআমাকে অন্ধকারে ফেল নাদামিনী আমার সমস্ত আশাটাকে চূর্ণ করে দিয়ে এবার বলল-আমি জানতাম না তুমি এটা জানো নাওর সাথে তোমার বউ এর রোজ ফোনে কথা হয়দীপঙ্কর তোমার বউকে ভালবাসেআমি দেখেছি ওর ফোনে তোমার বউকে পাঠানো লাভ মেসেজ
আমার ভেতরটা তখন শক্ত পাথরের মতন হয়ে যাচ্ছেতীব্র চিৎকারে ওকে বললাম-কি বলছ তুমি? এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?
নিজের জামাকাপড়টা আবার গায়ে জড়াতে জড়াতে ও বলল-আমি তো আগেই বলেছি বিশ্বাস কোর নাআমার কিছু যায় আসে না
বলতে পারো একপ্রকার বাজীমাত করল দামিনীনিমেষের মধ্যে আমার চিন্তাধারাকে পুরো বিপরীত দিকে ঠেলে দিল ওআমি এই প্রথম তোমাকে আর রেখাকে অবিশ্বাস করতে শুরু করলামঘরে ফিরে এলাম তারপরেসারারাত এপাশ ওপাশ করলামরেখার সাথে ভাল করে কথাই বলতে পারলাম নাবার বার একটা চিন্তাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিলকারন আমার মনে তো তখন বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছে দামিনী
আমি সারারাত ঘুমোতে পারলাম নাখুব ভোর রাত্রিতে বিছানা ছেড়ে গুটি গুটি পায়ে বেরিয়ে গেলাম ফ্ল্যাট ছেড়েরেখা টের পেল নাও তখন ঘুমোচ্ছেআমি বাইরে থেকে তালাটা আসতে করে লাগিয়ে বেরিয়ে গেলামযাতে আবার ফিরে এসে তালা খুলে ঢুকতে পারিভোর রাতে তোমার আর দামিনীর ফ্ল্যাটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিকেউ যেন আমাকে নিশিডাকের মতন টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছেআমি আসতে করে বাইরে থেকে ডাক দিলাম-দামিনী এই দামিনীও দরজাটা খুলল একটু পরেআমি কথা বলতে পারছি নাআমার সামনে তখন নাইটি পড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে দামিনীদরজাটা বন্ধ করেই আমাকে জড়িয়ে ধরল দামিনীএবার ওর গভীর চুম্বন আঁকড়ে ধরল আমার ঠোটদুটোকেপাগলের মতন আমার ঠোটদুটোকে চুষতে চুষতে বলল-বুঝতে পেরেছ আমাকেআমি তোমাকে সত্যি বলেছি কিনা? আর কখনও রাগ করবে আমার উপর?
কি হোল জানি নাশুধু এইটুকু বুঝলামরেখা আর তোমার প্রতি অবিশ্বাস এবার প্রবলভাবে দামিনীর প্রতি আকৃষ্ট করেছে আমাকেওর চুম্বনে আমি গভীর ভাবে সাড়া দিতে লাগলাম
দীপঙ্কর নিজের নির্বুদ্ধিতায় নিজেরই অবিশ্বাসে আমি কি যে করলাম আমি নিজেই জানি নাস্বয়ং ভগবানও আমাকে ক্ষমা করবেন না আমি জানিআমি তোমাদেরও ক্ষমা কোনদিন পাব না এটাও জানিদামিনী আমাকে বলল-চল আমরা পালিয়ে যাই এখান থেকেওকে বললাম-কোথায় যাবে?
ও বলল-তোমার গাড়ী আছে না? চল আমরা গাড়ী চড়ে কোথাও চলে যাইওকে বললাম-বেশকখন যাবে? ও বলল-কেন আজকেইআমি রেডী হয়ে নিচ্ছিতুমি অফিসের নাম করে বেরিয়ে এসযেন আমাকে তখন নিজের মতন চালনা করতে শুরু করে দিয়েছে দামিনীও যা বলছে আমি তাতেই হ্যাঁ বলছি
রেখাকে মিথ্যে কথা বলে আমি বেরিয়ে এলামইস ওর জন্য সত্যি খারাপ লাগছেদামিনী আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলওকে নিয়ে নিমেষে এলাকা ছেড়ে চলে গেলাম অনেক দূরেজায়গাটা সুন্দরএখন আমি এখানেই আছিআর হয়তো কিছুক্ষণচারিদিকে সুন্দর গাছ গাছড়ামাঝখানে একটা হোটেলমনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যগত দুদিন ধরে আমি দামিনীকে এখানে প্রবল ভাবে ভোগ করেছিওর শরীরে নিজেকে আবদ্ধ করেছি একবার নয় বহূবারনিজেকে বিলিয়ে দিতে আমার কাছে একটুর জন্যও কার্পণ্য করেনি ওরাগে দূঃখে করেছিহয়তো তোমাদের উপর প্রতিশোধ নিতে বারে বারে ওর শরীরের মধ্যে প্রবিষ্ট হয়েছিআমার অবুঝ মন বারে বারে এই ভোগবাসনা চরিতার্থ করতে বাধ্য করেছে আমায়তোমার সুরভিত উদ্যান আমি ছিড়ে খুড়ে খেয়েছি দীপঙ্করআমায় ক্ষমা কোরোজানি আমি অন্যায় করেছিসেইজন্যই নিজের রাগ আর ক্রোধকেও আমি চেপে রাখতে পারেনিদামিনীকে আমি নিজের হাতে খুন করেছিহ্যাঁ খুনওর অসাঢ় মৃতদেহটা এখন পড়ে আছে আমার সামনেএকটু আগে গলা টিপে ওকে আমি হত্যা করেছিজানি তুমি জিজ্ঞেস করবে কেন? ঐ যে বললাম ছলনা করে আমার মনটাকে জয় করতে চেয়েছিল তোমার বউভাবতেই পারেনি আমি ওকে খুন করববোকার মতন বলে ফেলেছিল আমাকেভেবেছিল আমি তো কোনদিন আর রেখার কাছে ফিরে যেতে পারব না তাইমিথ্যেটাকে কেমন সত্যি করে বানিয়ে বানিয়ে বলেছিল ওসেটাই রসিয়ে রসিয়ে বলছিলআর হাঁসছিল, তোমাকে কেমন বোকা বানিয়েছিএবার বল এটা না করলে আমাকে পেতে তুমি?
সত্যি বলছি দীপঙ্করআমার হাতদুটো তখনও ওর গলাটাকে ছাড়ছিল নাদামিনীর প্রাণটা তার আগেই বেরিয়ে গেছেআমি যেন একবার নয় বার বার মারতে চাইছিলাম ওকে
নিজেকে কোনদিন ক্ষমা করতে আর পারব নাএকটু পরে পুলিশ আসবেতার আগেই আমাকে যা করার করতে হবেদূঃখের কথাটা একটাইবেঁচে থাকার সব আকর্ষনই হারিয়ে গেলআত্মহনন ছাড়া আমার এখন আর কোন গতি নেইআমার মৃত্যুতে কেউ কষ্ট পাবে না ঠিকইকিন্তু শান্তির পথ খুঁজতে এছাড়া আমার আর কোন গতি নেইযাবার আগে একটা কথাই বলে যেতে চাইপারলে রেখাকে একটু দেখএখন তুমি ছাড়া ওকে দেখার কেউ নেইতোমরা আমাকে ক্ষমা করোআমি একজন ভালো স্বামী হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারলাম কোথায়? বিদায়। -ইতি তোমাদের মৃত প্রসেনজিত
পুলিশ এসে একঘন্টা পরে ওদের দুজনের ডেডবডিটা হোটেল থেকে উদ্ধার করেকলকাতায় কাটাছেড়ার পরে নিয়ে এসেছিলআমি শেষ দেখাটা আর দেখিনিকিন্তু সেদিনের সেই চিঠিটার কথা আমার আজও মনে পড়েদেখতে দেখতে ১টা বছর পেরিয়ে গেছেআমি ওকে ভুলিনিপ্রসেনজিত এর শেষ ইচ্ছা পূরণ করেছে দীপঙ্করআমি এখন ওর ঘরনীঐ আমাকে দেখছে, ভালবাসছেআমাকে নতুন ভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে দীপঙ্করআগেও যে চেয়েছিল তাকে দিতে কসুর করিনিএখন যে চেয়েছে তাকে দিতেও কসুর করিনিতফাতটা শুধু এইমধ্যিখানে চাওয়ার মানুষটা শুধু বদলে গেছেআমার সুরভিত উদ্যান সুরক্ষিতই আছে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন