সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১১

একটু সুখের সন্ধানে -পরকিয়া প্রেমের গল্প – ২


কিছু সময় আমরা দুজনে চুপএকে অপরের নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছিআমি একটু শকডএই উত্তর আশা করিনিনিকিতার কথা মনে পড়লোযাদের স্বামী নেই তারাই বন্ধুত্তের খাতায় নাম লেখায়আমার হয়তো উচিত ছিল না প্রশ্নটা করারকিন্তু বলে ফেলেছি, ফেরাবার তো আর উপায় নেই

বিদিশার গলা শুনতে পেলাম, ‘কি হোল, আপনি কি লাইনে আছেন?’

আমি- না, আমার মনে হয় প্রশ্নটা করা আমার ঠিক হয় নিআই অ্যাম সরি

বিদিশা- ওহ, নো প্রব্লেমবন্ধুত্ব করবেন অথচ প্রশ্ন করবেন না, তাকি হয় নাকিএনি ওয়ে আপনি জিজ্ঞেস না করলেও আমি বলতামআমি এখন সংসার করি আমার ছেলের জন্য

আমি- ক বছর আপনার বিয়ে হয়ে ছিল?

বিদিশা- আমি আমার বিয়ের ১২ বছর পর আমার স্বামী হারিয়েছিআমি বিয়ে করেছিলাম ২৪ বছর বয়সে

আমি ভাবলাম স্মার্ট গার্লবয়সটা ঘুরিয়ে বললওর বয়স এখন তাহলে ৩৬আমার মনে হয় আমার বয়সটা বলে দেওয়া উচিতআমি বললাম, ‘আমার বয়স আন্দাজ করুন তো কতো হবে?’

বিদিশা বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে বলে দিলো, ‘৫০

আমি যেন আকাশ থেকে পড়লামএকদম ঠিক কি করে বলে দিলোঅন্তর্যামী নাকিরে বাবাআবার

বিদিশার গলা শুনতে পেলাম, ‘কি হল মশাই বোলতি বন্ধ হয়ে গেল নাকি বয়সটা ঠিক বলাতে?’

আমার মনে হল আমাকে মেয়েটি মুরগী করছেকেমন পিন করছে দেখআমি বললাম, ‘না না, বোলতি বন্ধ হবে কেনআমি আশ্চর্য হচ্ছি একদম সঠিক বললেন কি করে?’

বিদিশা- খুব সোজানিকিতা আমাকে ফোনে করে আপনার ব্যাপারে বলেছে

আমি- নিকিতা? হঠাৎ ও আমার ব্যাপারে আপনাকে বলতে যাবে কেন?

বিদিশা- সে আমি জানি নাতবে আপনাকে দেখলাম ও খুব পছন্দ করেইন ফ্যাক্ট আমি কিন্তু আপনার ফোনের অপেক্ষাতেই ছিলাম

আমি- সৌভাগ্য আমারশুনে খুব ভাল লাগলো

বিদিশা- বললেন না তো বউ থাকা সত্ত্বেও আপনি মেয়ে বন্ধু পেতে ইচ্ছুক কেন?

আমি- জানেন বিদিশাদেবী......

বিদিশা আমাকে মধ্যপথে থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘কি বিদিশাদেবী বিদিশাদেবী লাগিয়ে রেখেছেন তখন থেকে
পুরনো যুগের মতোযথেষ্ট ব্যাকডেটেড আপনি

আমি ভাবলাম শালা আজকে মেয়েটার কাছে প্রচুর ঝাড় খাচ্ছি দেখছি

আমি চমকে উঠলাম ওর গলা শুনেও বলছে, ‘হ্যাঁ বলুন কি বলছিলেনও হ্যাঁ আপনারতো নামই জানিনি

আমি- আমার নাম গৌতম

বিদিশা- আর আমি বিদিশাহ্যাঁ বলুন গৌতম কি বলছিলেন

আমি তুতলিয়ে বললাম, ‘বিয়ের অনেক বছর পড়ে স্ত্রী আর স্বামীর রিলেশান শুধু কর্তব্যের মধ্যে পড়েতাতে থাকে শুধু তুমি ভাল আছ কিনা, শরীর ঠিক আছে কিনা, সংসারে কি কম আছে কি আনতে হবেকোন নতুনত্ব কিছু নেইসেই উদ্দাম যৌবন, সেই চোখের লুকোচুরি খেলা, একে অন্যকে ছোঁওয়ার পাগলামো সব সংসারের সমুদ্রে হারিয়ে গেছেতাই একটু মন খুলে কথা বলতে ইচ্ছে করেতাই বন্ধু খোঁজা

বিদিশা বলল, ‘গৌতম আপনার বন্ধু হতে আমার আপত্তি নেইযদি আপনি চানআই অ্যাম গ্ল্যাড টু বি উর ফ্রেন্ড

আমি- আই অ্যাম ওনারড টু গেট ইয়ু অ্যাজ এ ফ্রেন্ড

বিদিশা- যেহেতু আপনার স্ত্রী আপনার সাথে থাকে আমি আপনাকে ফোন করব নাআপনি আমাকে ফোন করবেনআমি সবসময় আভেলেবল

আমি- খুব ভাল সময় কাটল বিদিশাদেবী......সরি সরি বিদিশাআর নিকিতাকেও থ্যাঙ্ক ফর হেল্পিং টু গেট অ্যা ফ্রেন্ড লাইক ইয়ু

বিদিশা- তো শুভরাত্রিঅপেক্ষা করে রইলাম আপনার ফোনের জন্য

বিদিশা আর কথা বলার সুযোগ দিলো না, ফোনটা কেটে দিলোআমি কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে উঠে পড়লাম বাড়ীর দিকে যাবার জন্যদিনটা ভালই গেল

আমি বাড়ি পৌঁছে দেখি মিতা বসে টিভি দেখছেআমি ঢুকতেই জিজ্ঞেস করল, ‘চা খাবে?’

আমি বললাম, ‘তুমি চা খাওনি?’

ও মাথা নাড়াতে আমি বললাম, ‘ঠিক আছে তুমি টিভি দেখ আমি চা বানিয়ে আনছি বলে আমি রান্নাঘরে চলে গেলামচা বসিয়ে মুড়ির টিনটা বার করলাম আর পেঁয়াজ তেল দিয়ে ভাল করে মুড়ি মেখে চা বানিয়ে নিয়ে গেলামআমি আর মিতা চা খেলাম আর কিছুটা সময় ওর সাথে টিভি দেখলামওকে দেখি খুব মনোযোগ দিয়ে ওর ফেভারিট সিরিয়াল দেখছেআমি ওকে ডিস্টার্ব না করে একটা সিগারেট খেতে বাইরে বেড়িয়ে এলামসিগারেটের ধোঁয়া গিলতে গিলতে বিদিশার কথা ভাবছিমনে হচ্ছে বন্ধুত্বটা ভালই হবেওকে মনে হল খুব মিশুকেবন্ধুত্ব করতে জানেদেখা যাক কালকে কি কথা হয়

তারপরের দিন অফিসে বসে কাজ করছি এমন সময় মোবাইলটা বেজে উঠলোদেখি নিকিতাহ্যালো বলতে নিকিতা বলল, ‘স্যার, কাল কথা হোল বিদিশার সাথে? কেমন লাগলো?’

আমি ওকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললাম, ‘থ্যাঙ্ক উ নিকিতা বিদিশার নাম্বারটা দেবার জন্যমনে হোল ওর সাথে বন্ধুত্বটা জমবে

নিকিতা জবাবে বলল, ‘উ আর ওয়েলকাম স্যারআপনার ভাল লাগলে আমারও খুব ভাল লাগবেচালিয়ে যান আর যদি কোন প্রব্লেম হয় আমাকে ফোন করবেন কেমন? ও হ্যাঁ, আরেকটা কথা, আপনি তো আপনার বন্ধু পেয়ে গেলেন, বৌদির কি হবে?’

আমি একটু অবাক হলামবৌদির কি হবে মানেআমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘বৌদির আবার কি হবে? বৌদির তো কোন অসুবিধে নেই

নিকিতা একটু অবাক হবার ভান করে বলল, ‘বারে, আপনি মনের সুখে বন্ধুর সাথে কথা বলবেন আর বউদি একলা সময় কাটাবে নাকি? আপনি তো আচ্ছা মানুষ!

আমার মনে একটা তরঙ্গ বয়ে গেলসত্যি তো এটা তো আমার মনে আসি নিমিতা তো আরও একা হয়ে যাবেযদি বিদিশা কোথাও ঘুরতে যেতে বলে আমি তো চলে যাবো কিন্তু ওর সাথে তো তাহলে এটা বিস্বাসঘাতকতা হবেআমার সুখের কথাই শুধু চিন্তা করব আমিএতো স্বার্থপর আমিএকটুও ভাবলাম না মিতার জন্যঅথচ নিকিতাকে দেখও কে আমার যে এইসব ও চিন্তা করবেকিন্তু ও তো করেছেআমি তো করিনিআমি একটা গোমরানো নিশ্বাস ছেড়ে নিকিতাকে বললাম, ‘সত্যি নিকিতা আপনার খেয়ালের জন্য ধন্যবাদআমি একদম ভুলে গেছি মিতার কথা

নিকিতা বলে উটলো, ‘মিতা বুঝি বৌদির নাম? খুব সুন্দর নাম তো

আমি জবাব দিলাম, ‘হ্যাঁ, মিতা আপনার বৌদির নামকিন্তু ওর জন্য কি করি বলুন তো?’

নিকিতা উত্তর দিলো, ‘বলতে পারি যদি আপনি আমাকে আপনি বলা ছেড়ে তুমি বলেন

আমি বললাম, ‘ওকেআমি তুমি বলতে পারি যদি আমাকে তুমি বলতে পারো

নিকিতা একটু চিন্তা করে বলল, ‘ওকে, আমার আপত্তি নেইআমরা তো এখন বন্ধুআমিও তোমাকে তুমি করে বলব

আমি বললাম, ‘থ্যাঙ্ক উ

নিকিতা বলে উঠলো, ‘হ্যাঁ তাহলে কি করবে বৌদির জন্য?’

আমি- কি করি বলতো? আমার মাথাতে কিছু আসছে না

নিকিতা- তোমার মাথাতে আসবে নাকারন তুমি নিজেকে ছাড়া আর কিছু ভাবো না

আমি মনে মনে ভাবলাম তাই কিআমি নিজেকে ছাড়া কিছু ভাবি নাএই মুহূর্তে তো তাই মানে হয়আমি তো ওর জন্য একবারও চিন্তা করি নি

আমি জবাব দিলাম, ‘তুমি হয়তো ঠিক বলছ নিকিতা, আমি আমার জন্যই হয়তো শুধু চিন্তা করি

নিকিতা সুন্দর করে হেসে উঠে বলল, ‘বাবা, কি অভিমান তোমারআমি একটু মজা করছিলামআমি বুঝতে পেরে গেছি যে বৌদির জন্য তোমার টান ভালই আছেযাহোক যে বুদ্ধিটা আমি এখন দোবো সেটা আগে চিন্তা করে তবে জবাব দিও

আমি শুধু বললাম, ‘বল শুনি

নিকিতা উত্তর দিলো আস্তে আস্তে, ‘বৌদির ফোন নাম্বারটা আমাদের ক্লাবে রেজিস্ট্রি করিয়ে দাওবৌদিকে বন্ধু যোগার করে দেবার দায়িত্ব আমার থাকবে

আমি একদম আকাশ থেকে পড়লাম নিকিতার কথা শুনেএকি বলছে ও? মিতা যদি শোনে যে আমি ওর নাম্বার দিয়েছি তাহলে তো যতটা সম্পর্ক ছিল নিমেষে চূর্ণ হয়ে যাবেআমি ভয়ে ভয়ে বলে উঠলাম, ‘না না নিকিতা এটাসম্ভব নয়

নিকিতা নাছোড়বান্দার মতো বলে উঠলো, ‘কেন সম্ভব নয়ভয় পাচ্ছ পাছে যদি বৌদি জেনে ফেলে তুমি ওর নাম্বার দিয়েছ এখানে?’

মেয়েটা কি অন্তর্যামী নাকিযেটা ভাবছি সেটা বলছে? আমি বেগতিক দেখে বললাম, ‘হ্যাঁ তাই

নিকিতা আদুরে গলায় বলল, ‘আরে মশাই আমি কি বৌদিকে বলব যে তুমি নাম্বার দিয়েছ না বৌদি জানতে পারবে যে ও এই ক্লাবের মেম্বারবৌদির সাথে তো আমার কোন কথাই হবে নাযা কথা হবে আমি যে ছেলেকে নাম্বার দেবো তার সাথেঅবশ্য একটা ব্যাপার হতে পারে সেটা হোল যদি ছেলেটা বলে দেয় ও আমাদের ক্লাব থেকে নাম্বারটা পেয়েছে

আমি যেন সুত্র পেয়েছি এই সমস্যা থেকে বাঁচারআমি বলে উঠলাম, ‘হ্যাঁ ঠিকই তো, যদি ছেলেটা বলে দেয়আমিও তো বিদিশাদের বলেছি

নিকিতা একটু ভাবুক গলায় বলল, ‘এটা একটা সমস্যা ঠিকই তবে সমাধান আছে এর

আমি অবাক হয়ে ভাবলাম, সমাধান? এর আবার কি সমাধান থাকতে পারে? আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি সমাধানের কথা বলছ তুমি?’

নিকিতা উত্তর দিলো, ‘ধর ছেলেটা বলল আমি এই ক্লাবের থেকে নাম্বারটা পেয়েছিবৌদি হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করতে পারে ক্লাবের কথাতুমি না বললেই হোল অবশ্য বোকার মতো যদি তুমি আগেভাগে বলে না দাও

আমি রাগ দেখিয়ে বললাম, ‘নিকিতা, তুমি কি আমাকে এতো বোকা মনে করো? আমি তো যা করেছি ওকে না জানিয়ে

ও বলল, ‘ঠিকতুমি বলোনিতাহলে ব্যাপারটা এরকম হতে পারে আরও দু তিনজন ক্লাবের নাম নিলবৌদি থোরি খোঁজ করতে যাবে ক্লাবের ব্যাপারেভুলভাল ফোন ভেবে হয়তো কথা বলবে নাএর মধ্যে যে ম্যানেজ করতে পারবে সে পারবে

নিকিতা আমার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলোআমি জবাব দিলাম, ‘এতো হুড়োহুড়ি করো নাআমাকে একটু সময় দাও ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতেআমি তোমাকে বলছি একটু পড়ে

নিকিতা উত্তরে বলল, ‘ঠিক আছে টেক উর টাইমআমাকে পড়ে ফোন করোএকটা ব্যাপারে নিশ্চিত থেকো, আমি ভাল ছেলের সন্ধান দেবো

আমার মাথাটা ঘুরছে নিকিতাকে শোনার পরকি করব, নিকিতাকে ফেলতে পারছি নাকেমন যেন ঘোরের মতো লাগছেমিতা ছেলেদের সাথে কথা বলে না তা নয়, বরং ভালইবাসে কথা বলতেও যখন কোন পার্টিতে যায় তখন বেশিরভাগ সময় ও ছেলেদেরই সাথে কথা বলে ঠিক তা বলে অচেনাদের সাথে নয়অবশ্য এমন কোন ঘটনা ঘটে নি যেখানে ও আপত্তি জানিয়েছে অচেনাদের সাথে কথা বলতেবাট দিস ইস ডিফারেন্টতবে অন্য দিক দিয়ে দেখলে ব্যাপারটার ভিতর খুব একটা রিস্ক নেইশি হ্যাঁজ টু চুসযদি মনে হয় ওর মনের মতো তাহলে কথা বলবে আর যদি না মনের মতো হয় জয় রামজিকিকথা না বললেই হোলঅন্তত আমি বা নিকিতা সিনের মধ্যে আসছি না এটা সিওরকে জানে মিতার হয়ত ভাল লাগতেও পারেলেট আস ট্রাই

আমি আবার নিকিতাকে ফোন করলামনিকিতা বলল, ‘কি হোল বন্ধু, কিছু ঠিক করলে?’

আমি বললাম, ‘নিকিতা, ব্যাপারটা বেশ এক্সসাইটিংআমি ভাবলাম একবার ট্রাই করতে দোষ কিযখন আমরা কেউ সিনে আসছি না

নিকিতা বলে উঠলো, ‘একদম ঠিকউ আর সো রাইটওকে আমি দেখছি

আমি তাড়াতাড়ি বলে উঠলাম, ‘কিন্তু ফি?’

নিকিতা হেসে জবাব দিলো, ‘নো ফি, ইটস ফ্রীতোমার অফিস টাইম বল কটা থেকে কটা?‘

আমি অবাক হলাম, ‘কেন, অফিস টাইম এর সাথে আবার কি রিলেশন?’

ও উত্তর করল, ‘আছে বাবা আছেতুমি কি ভাবো বৌদি তোমার সামনে ওদের সাথে কথা বলবে? তুমি বলেছিলে?’

সো রাইট শি ইসআমি আমার টাইম বলে দিলামনিকিতা আবার হেসে বলল, ‘আমাকে কিন্তু দোষ দিও না যদি বৌদি তোমার হাত ছাড়া হয়ে যায়

আমিও মজা করে বললাম, ‘তাতে কি, তোমাকে ডেকে নেবো

দুদিন পড়ে আমি যখন অফিস থেকে ঘরে এলাম, মিতা আমার চা নিয়ে এলোটেবিলের ওপর কাপটা রেখে বলল, ‘জানো মোবাইল এবার বন্ধ করে রেখে দিতে হবে

আমি চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম, ‘কেন কি হোল আবার? মোবাইল এর উপর রাগ কিসের?’

মিতা কটকট করে বলে উঠলো, ‘আর বল কেন, আজ দুদিন ধরে কতগুলো ছেলে ফোন করে বলে যাচ্ছে যে তারা নাকি আমার ফোনে নাম্বারটা কোন একটা ক্লাব মারফৎ পেয়েছেআমি ওদের বন্ধু হতে ইচ্ছুক কিনাবল দেখি কি ঝামেলাকোথা থেকে আমার নাম্বার পেল কে দিলো মাঝখান থেকে আমাকে ডিস্টার্ব করা

আমি আশ্চর্যের ভাব দেখিয়ে বললাম, ‘আরে এতো অদ্ভুত ব্যাপারতুমি জানো না অথচ ছেলেগুলো তোমার নাম্বার জানেকি করে?’

মিতা ততোধিক রাগ দেখিয়ে বলল, ‘সে আমি বলব কি করে? আমি তো আর ওদের নাম্বার দিই নি

আমি ঠোঁট উলটে বললামসে তো ঠিকইকিন্তু নাম্বার তো আমিও দিই নিতাহলে?’

মিতা হাত নেড়ে জবাব দিলো, ‘ছেড়ে দাওউত্তর না পেয়ে ঠিক বন্ধ করে দেবে ফোন করা

আমি একটু খুশি হলাম যে যাক আমাকে সন্দেহ করে নিকিন্তু ও যদি কল একসেপ্ট না করে তাহলে আমার আর নিকিতার প্ল্যান তো ঠিক হোল নাতবুও কয়েকদিন ওয়েট করা যাকদেখি কি হয়

নিকিতাকে এ ব্যাপারে আমার খবর দেওয়া হয়ে গেছেও আমাকে অপেক্ষা করতে বলেছে এই বলে যে বৌদি তো এ ব্যাপারে অভ্যস্ত নয়, আরও কয়েকদিন দেখা যাকআমিও ভাবলাম সবুরে মেওয়া ফলেদেখাই যাক না কি হয়অন্তত আমার রিস্ক নেই এটা তো বুঝে গেছিকয়েকদিন বাদে মিতার ফোনে একটা কল এলো শুনলামমিতা ফোনটা দেখে উঠে বাইরে চলে গেলবেশ কিছুক্ষণ পারে ফিরে এলো টিভির ঘরেমুখে একটা পাতলা হাসিআমি ভাবলাম হাসি তো ফাঁসিআমরা কেউ কাউকে জিজ্ঞেস করি না কার কল এলো, কি বললএটা আমাদের একদম প্রথম থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিংআমরা বলেই নিয়েছিলাম জিজ্ঞেস করাতে মনে হয় স্বাধীনতা হরন হচ্ছেতাইযাহোক আমি অবশ্য শিওর নই যে এটা ওর কোন অজানা বন্ধু

ইতিমধ্যে আমার আর বিদিশার একটা ছোট ট্যুর হয়ে গেলআসলে অফিসের জন্য আমাকে অনেক জায়গাতে ট্যুর করতে যেতে হয়সেদিনকে আমার ডিরেক্টর আমাকে ডেকে বলল, ‘গৌতম তোমাকে একটা টেন্ডারের ব্যাপারে দুদিনের জন্য ঝারসুগুদাহ যেতে হবেটেন্ডারটা আমাদের চাইতুমি কোম্পানির প্রোফাইল নিয়ে ওদের সাথে কথা বলে আসোকি কাজ, কতো টাকার কাজ, কবে শুরু হতে পারে, টেন্ডার কবে দেবেসব খবর নিয়ে এসোশার্প

আমি মিতাকে খবরটা জানালাম যে দুদিন আমাকে বাইরে থাকতে হবেমিতা এখন এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কিছু মনে করে নাওর অভ্যেস হয়ে গেছেআমাকে কোম্পানির কাজ করে যেতে হবে এবং বাইরেও যেতে হবেও প্রশ্ন করল, ‘কবে যেতে হবে?’

আমি জবাব দিলাম, ‘ট্রেনের টিকিট কেটে তোমাকে জানাচ্ছি

বিদিশার সাথে আমি নিয়মিত কথা বলে গেছিও আমার খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছেতখনো পর্যন্ত আমরা কেউ কারোকে দেখিনিশুধু গলার আওয়াজ শুনে গেছিদুজনেই আমরা একমত যদি আমরা আরও ভালো করে নিজেদের বুঝতে চাই তাহলে একবার দুজনের দেখা হওয়া ভালোআর আমার মতে এই ট্যুরের থেকে ভালো সুযোগ আর হবে নামিতার কাছেও ব্যাপারটা অজানা থাকবে আর আমরা সুযোগ পাব নিজেদেরকে ভালো ভাবে জেনে নিতেওর ছেলে এখন বাইরে থেকে পড়াশুনা করছেতাহলে ছেলে ওয়িল নট বি অ্যা প্রব্লেমদেখি একবার ফোন করেআমি বিদিশাকে রিং করলামকিছুক্ষণ রিং বাজার পর ও ফোন তুলে বলল, ‘বলহঠাৎ এই সময়ে?’

আমি জবাব দিলাম, ‘প্রয়োজন পড়লো বলে ফোন করলামকেন বিজি নাকি? তাহলে পড়ে ফোন করব

ও তড়িঘড়ি উত্তর দিলো, ‘আরে এতো ভদ্র কেন আজ? এই ফোনটার জন্য তো ওয়েট করিসেটাও পড়ে বলে ছেড়ে দেবে?’

আমি হেসে উত্তর দিলাম, ‘আর এ বান্দা, এ কি ওয়েট করে না? যাহোক, একটা সুযোগ আছে যদি রাজি থাক তো বলতে পারি

সে উত্তর করল, ‘আরে শুনলামই না তো কি করে রাজি আছি বলবআগে তো বল?’

আমি বললাম, ‘কোম্পানির কাজে আমাকে দুদিন বাইরে যেতে হচ্ছেযদি বল তো একসাথে যাওয়া যেতে পারে

আমি ভেবেছিলাম ও আমতা আমতা করবেকিন্তু ও উত্তর করল, ‘কবে?’

আমি জবাব দিলাম, ‘এই ধর দুদিন বাদে

ও একটু সময় নিয়ে বলল, ‘ওকে আমি রাজিচল ঘুরে আসি

ব্যাপারটা এতো সহজে মিটে যাবে আমি এক্সপেক্ট করি নিযাহোক ওকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি ট্রেনের দুটো ১ম এসির টিকিট কেটে নিলামএটা একটু গোপনে আমাকে করতে হল কোম্পানিকে না জানিয়েকারন সাধারনত আমি প্লেন এ যাতায়াত করিপ্লেন এ করে ভুবনেশ্বর হয়ে তবে আমার ঝারসুগুদাহ যাওয়ার কথাকিন্তু এখন আমি ট্রেনে যাবো যেটা কোম্পানি আমাকে প্রশ্ন করতেই পারেতাই যখন শচিন আমাকে জিজ্ঞেস করলো প্লেনের টিকিট কাটবে কিনা আমি ওকে না করে দিলামবললাম আমি এখনো ঠিক করি নি কবে যাবোদরকার পড়লে আমি নিজে টিকিট কেটে নেবোও ঠিক আছে বলে চলে গেলআমি নিশ্ছিন্ত হয়ে গেলাম কোথাও কোন সন্দেহর আবকাশ না থাকায়

1 টি মন্তব্য:

  1. Make HYIP site---Earn Money 100% Gurranted
    HYIP INVEST করে হতাশ ? -Make Your Personal HYIP------Earn Money
    call: 01849-573370
    For make your personal hyip site ........please visit....
    http://hyipmakerteam.blogspot.com/

    উত্তরমুছুন